জার্মানভিত্তিক গণমাধ্যম ডয়চে ভেলে বাংলার সাপ্তাহিক ইউটিউব টকশোর এবারের পর্বে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী। এবারের পর্বে আলোচিত হয় বাংলাদেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বর্তমান অবস্থা, ভূমিকা ও তাদের আন্তঃসম্পর্কের নানা প্রসঙ্গ।
পাশাপাশি, আলোচিত হয় বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ভূমিকা নিয়েও। এই প্রসঙ্গে উঠে আসে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ড পরবর্তী পরিস্থিতিও। বাংলাদেশে শাসন ক্ষমতা সামরিক নিয়ন্ত্রণে যাওয়া প্রসঙ্গে হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘...খালেদ মোশাররফের ক্ষমতা দখলের পর সেনা ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে একটি সাংঘর্ষিক পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। আমরা একটি সিপাহী বিদ্রোহকে সমর্থন দিয়েছিলাম, সেখানে রক্তগঙ্গা থামাতে, গৃহযুদ্ধ থামাতে। আমরা সর্বদলীয় নির্বাচনের পথে গিয়েছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘কিন্তু আমাদের এই অভ্যুত্থানের নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পারার কারণে জেনারেল জিয়াউর রহমান পরবর্তীতে অন্য সামরিক অফিসারদের দিয়ে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে সামরিক শাসনের ফাঁদে বাংলাদেশকে ঠেলে দেন। সেই অভ্যুত্থানের সময় সেখানে নানা পক্ষের সৈনিকরা ছিলেন। নিরপেক্ষ ছিলেন, জিয়াউর রহমানের সমর্থক ছিলেন, ছিলেন খালেদ মোশারফের সমর্থকরাও। সেখানে মারামারির সুযোগ থাকলে সর্বাত্মক বিদ্রোহ হতো না, গোলাগুলি হতো।’
এই বিষয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান দেশকে সামরিক শাসনের যাঁতাকলে তো ফেলেনইনি, বরং তিনি সেখান থেকে তুলে নিয়েছেন। সামরিক শাসন দিয়েছিলেন সায়েম, তার আগে মোশতাক। বরং তিনি দেশকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের দিকে নিয়ে গিয়েছিলেন। শতফুল ফোটার সম্ভাবনাকে সামনে নিয়ে আসলেন।’
হাসানুল হক ইনুকে প্রশ্ন করা হয় বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানানো প্রসঙ্গে জাসদের প্রাথমিক ভূমিকা নিয়ে। উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমি তখন আত্মগোপনে ছিলাম। আমরা সেদিন হত্যাকাণ্ডের পর গোপন বৈঠক করে পরিস্থিতি মূল্যায়ন করি। সিদ্ধান্ত নিই যে শেখ মুজিবের সরকারের বিকল্প কোনো সামরিক সরকার হতে পারে না, মোশতাক সরকার হতে পারে না। সেই অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে জাসদ যাবে, সেই সিদ্ধান্ত আমরা নিই।’
তিনি বলেন, ‘ছাপানো লিফলেটের মাধ্যমে মোশতাক সরকারকে প্রত্যাখ্যান করি। ছাপানো লিফলেটে হত্যাকাণ্ড সমর্থন করিনি সেটা বলা ছিল। তখন আমরা নিষিদ্ধ দল। প্রকাশ্যে বিবৃতি দিতে পারিনি। তিনটি দল মিলে আমরা লিফলেটে বলি যে এই হত্যাকাণ্ড সমর্থন করিনি।’
সূত্র : ডয়চে ভেলে