১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলকদ ১৪৪৫
`


এমসি কলেজে গণধর্ষণ : জড়িতদের শাস্তির দাবিতে ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ মিছিল

এমসি কলেজে গণধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদ ও জড়িতদের শাস্তির দাবিতে রাজধানীতে ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ মিছিল - ছবি : সংগৃহীত

সিলেট এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদ ও অবিলম্বে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক রাশেদুল ইসলামের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বর থেকে শুরু হয়ে ইত্তেফাক মোড়ে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। এতে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন।

সমাবেশে ছাত্রশিবিরের নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের একের পর এক নৃশংস ও লোমহর্ষক ঘটনায় দেশবাসী আজ আতঙ্কিত। বিচারহীনতার কারণে ধর্ষণ এখন মহামারিতে পরিণত হয়েছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সিলেট এমসি কলেজ প্রাঙ্গণে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণ করে ছাত্রলীগের চিহ্নিত ছয় সন্ত্রাসী।

একটি স্বনামধন্য কলেজের ভেতরে এমন কলঙ্কজনক ঘটনার ব্যাপারে ঘৃণা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই। করোনার কারণে যেখানে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে সেখানে কিভাবে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা ছাত্রাবাসের ভেতরে বহাল তবিয়তে ছিল তা নিয়েও জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এমসি কলেজের হলে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের অবৈধ অবস্থান ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পেছনে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের মদদ রয়েছে তা আজ খুবই স্পষ্ট।

এর আগেও এমসি কলেজের ঐতিহ্যবাহী ছাত্রাবাসগুলোকে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে জ্বালিয়ে দিয়ে উল্লাস করেছিল। যার মর্মান্তিক দৃশ্য গণমাধ্যমের কল্যাণে দেশবাসী দেখেছে। এ ঘটনায় সারাদেশে নিন্দার ঝড় উঠেছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেই বর্বরতার কোনো বিচার হয়নি। ফলে আবারো একই জায়গায় আরেকটি কলঙ্কজনক নজির সৃষ্টি করেছে ছাত্রলীগের বাহিনীরা।

নেতৃবৃন্দ বলেন, মূলত দলীয় পরিচয়ের কারণে সরকারের বিচারহীনতা ও সরাসরি প্রশ্রয়ে ধর্ষণের মতো এমন কাজ নির্বিঘ্নে করে যাচ্ছেন তারা। আর এসব অপকর্মে বেশিরভাগ সরকার-দলীয় সন্ত্রাসীরা জড়িত থাকার কারণে সরকার এমন জঘন্য বিষয়গুলো এড়িয়ে গেছে বরাবর। এখন পর্যন্ত তার কোনোটিরই সুষ্ঠু বিচার হয়নি। ফলে উৎসাহ পেয়ে তাদের লোমহর্ষক অপকর্ম বেড়েই চলেছে।

এমসি কলেজে ধর্ষণের ঘটনার পরপরই চট্টগ্রামে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে এক তরুণী। সাভারেও ধর্ষণের শিকার হয়েছে আরেক যুবতী। তাছাড়া যানবাহন, কর্মস্থলসহ নানা স্থানে অহরহ ধর্ষণের ঘটনা বেড়েই চলেছে। আসলে সারাদেশেই ধর্ষণ মহামারিতে রূপ নিয়েছে, যা গোটা জাতিকে আতঙ্কিত করে তুলেছে।

শিশু, তরুণী, শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা গভীর শঙ্কায় দিন যাপন করছে। চরম বিচারহীনতা আজকের এই ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য দায়ী। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, রাস্তাঘাটসহ কোনো জনপদেই যেন আজ নারীরা নিরাপদ নয়। এটা কোনো সভ্য সমাজ বা দেশের চিত্র হতে পারে না।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, সরকার যদি বিচারহীনতার ধারা অব্যাহত রাখে তাহলে ছাত্রসমাজ কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে। এসব অমানুষদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার সময়ের অপরিহার্য দাবি।

ছাত্রসমাজের দাবি, আর একটা নারীও যেন ধর্ষণ, নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার না হয়। শুধু চলমান অপরাধীরা নয় বরং সারাদেশে ইতোপূর্বে গ্রেফতার হওয়া ও চিহ্নিতদেরও খুঁজে কঠিন বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।


আরো সংবাদ



premium cement