নির্বাচন কমিশন নতুন রাজনৈতিক চিন্তা ও দল গড়ে ওঠায় প্রতিবন্ধকের ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। অথচ নির্বাচন কমিশনের কাজ রাজনীতি করতে আগ্রহী ব্যক্তিদের সহায়তা করা, সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা। তিনি বলেন, তার দলের ব্যাপারে ইাস’র নেয়া সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সংগ্রাম ও আদালতের আশ্রয় উভয় পথেই গণসংহতি আন্দোলন অগ্রসর হবেন।
রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে গণসংহতি আন্দোলনের সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বৃহস্পতিবার গণসংহতি আন্দোলন কেন্দ্রীয় নির্বাহীর কমিটির উদ্যোগে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদ ও নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল। সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য ফিরোজ আহমেদ, তাসলিমা আখ্তার, সম্পাদকম-লীর সদস্য বাচ্চু ভূইয়া, মনির উদ্দিন পাপ্পু, আরিফুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দীপক রায়, কেন্দ্রীয় সংগঠক বেলায়েত শিকদার, জুলকারনাইন ইমন, প্রবীর সাহা, আশরাফুল আলম সোহেল প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, কমিশনের দেয়া সবগুলো শর্ত পূরণ করেই গণসংহতি আন্দোলন নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছিল। গণমাধ্যম থেকে আমরা জানতে পেরেছি নির্বাচন কমিশন গণসংহতি আন্দোলনকে নিবন্ধনের উপযুক্ত বলে মনে করেনি। অথচ এর আগে ৮ এপ্রিল গণসংহতি আন্দোলনকে চিঠি প্রদান করে নির্বাচন কমিশন অঙ্গ সংগঠন না থাকার ঘোষণা এবং প্রার্থী মনোনয়নের প্রক্রিয়া বিষয়ে এই দুটি বিষয়ে গঠনতন্ত্রে সংশোধনীর জন্য বলেছিল। সেটি যথাসময়ে সংশোধন করে জমাও দেয়া হয়।
অপরদিকে জোনায়েদ সাকি তার বক্তব্যে বলেন, গণসংহতি আন্দোলন একটি পরিচিত রাজনৈতিক দল, প্রতিষ্ঠার পর থেকে এদেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে দলটি ভূমিকা রেখেছে। গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের একটা বড় অংশ শ্রমিক আন্দোলন ও ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে এসেছেন। গণমাধ্যম কর্মীদের প্রশ্নের জবাবে জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, আরপিওর নামে রাজনৈতিক দল নিয়ন্ত্রণের যে বন্দোবস্ত করেছিল, বর্তমান সরকার তাকে আরও বহুগুন কঠোর করে তোলার মধ্য দিয়ে সমাজে নুতন চিন্তা ও রাজনৈতিক শক্তিকে নিয়ন্ত্রণেরই বন্দোবস্ত করেছে।
নির্বাচন কমিশনও সেই কাজে সহযোগীর ভূমিকাই পালন করছে। অথচ এই ধারাগুলো রাজনৈতিক দল গড়ে তোলার জনগণের সাংবিধানিক অধিকারের পরিপন্থী। তারপরও গণসংহতি আন্দোলন আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে তাদের শর্ত পূরণ করেই নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছিল। তবে সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন যে, নির্বাচন কমিশন তার সিদ্ধান্ত পুনঃনীরিক্ষা ও পুনর্বিবেচনা করে গণসংহতি আন্দোলনের আবেদন মাঠ পর্যায়ে জরিপের জন্য প্রেরণ করবে এবং নিবন্ধন বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্তে উপনীত হবে। সংবাদ সম্মেলনে জানান হয় ইসি’র সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কর্মসূচির পাশাপাশি আগামী ৫ জুলাই পুনঃনীরিক্ষার দাবিতে নির্বাচন কমিশন অভিমুখে বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি দেয়া হবে।