ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফিতে মূলত প্রাণীরাই ক্যামেরার সামনে থাকে আর ফটোগ্রাফার পেছনে। কিন্তু এবার দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। দক্ষিণ-পূর্ব লন্ডনের অরপিংটনে বসাবাসকারী ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার গ্লেড্রিয়াস স্টাকাউসকাসের বেলায় ঘটেছে উল্টো। একদল খেঁকশিয়ালকে ক্যামেরায় বন্দি করতে গিয়ে নিজেই মডেল বনে গেছেন।
গল্পের শুরু বছর কয়েক আগে। ৪২ বছর বয়সী গ্লেড্রিয়াস আসলে লুথিয়ানিয়ার বাসিন্দা। ফটোগ্রাফির কাজে তিনি লন্ডনে চলে আসেন। সে সময় একদল খেঁকশিয়াল সন্ধ্যার দিকে তার বাগানে প্রায়ই ছুটোছুটি করত। সেগুলোকেই ছবি তোলার বিষয় বানিয়ে নেন গ্লেড্রিয়াস।
ক্যামেরা নিয়ে ভিন্নবেশে কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে ছবি তোলার ব্যবস্থা করলেন। কিন্তু বিপদ হলো, একটু এদিক-সেদিক নড়াচড়া হলেই পালায় খেঁকশিয়ালগুলো। এভাবে কেটে যায় কয়েকটাদিন। কিন্তু ধৈর্য্য হারান না গ্লেড্রিয়াস। ক্যামেরা তাক করে বসে থাকেন।
এক সময় দেখতে পান। সেই দলের একটি খেঁকশিয়ালের আচরণ একটু ভিন্ন। বলা যায়, সাহসী। সে ক্যামেরা দেখে একটু উৎসুক দৃষ্টিতে তাকায়। কাছে আসে। এবং পোজ দিতে দেখা যায়।
তার আচরণে বোঝা যায়, সে আমাদের সাথে মজাই পাচ্ছে। এক সময় দেখা গেলো, আমরা যখন ক্যামেরা নিয়ে কাজ করছি, সে আশাপাশেই কোনো ফুল গাছের নিচে শুয়ে আছে। এভাবেই কয়েকটা বছর কেটে যায়। সে খুব আপন হয়ে যায়। আমি তাকে 'পাউ' নাম ডাকতে থাকি। কারণ তার গায়ে সাদা ছোপ ছোপ দাগ আছে।
ধীরে ধীরে সে খুব স্বাভাবিক হয়ে যায়। মাঝে মাঝে সে ক্যামেরার সামনেই ঘুমিয়ে পড়ত। আবার ক্যামেরার একেবারে কাছে নাক ঘষতে শুরু করত। যার কারণে কোনো ফোকাসই করা যেত না, ছবিও তোলা হতো না।
এরপর ঘটলো মজার এক ঘটনা, 'পাউ' ক্যামেরার ব্যাপারে খুব আগ্রহী হয়ে উঠল। আমাকে অনুকরণ করে সেও ক্যামেরার পেছনে দাঁড়িয়ে যেত। চোখ জোড়া লেন্সের দিকে। এক নজরে তাকে মনে হতো, পাক্কা ফটোগ্রাফার।
গ্লেড্রিয়াস বলেন, 'আমরা নিজেদেরে খুব সৌভাগ্যবান মনে করতাম যে, এই ধরণের একটি আকর্ষণীয় ও মজার প্রাণীর সাথে আমরা এতো ঘনিষ্ঠভাবে মিশতে পেরেছি।'
তিনি আরো বলেন, 'ওর সাথে মিশে মনে হয়েছে, ও আমাদের খুব বিশ্বাস করে।'
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা