০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫
`


নির্বাচন না তামাশা!

নির্বাচন না তামাশা! - নয়া দিগন্ত

‘ন্যাড়া কতবার বেলতলা যাবে’ তা কারো আজ জানা নেই। যেখানে সুষ্ঠু নির্বাচনের ন্যূনতম পরিবেশ নেই, যেখানে দিনের ভোট সম্পন্ন করা হয় আগের রাতেই, যেখানে প্রার্থীর এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রের ভেতর থেকে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়া হয়, যেখানে শাসকদলীয় ইচ্ছার শতভাগ প্রতিফলন ঘটে, সেসব নির্বাচনের নামে তামাশাতে অংশগ্রহণ করে নির্বাচনের কথিত শোভাবর্ধন জাতি আর দলের সাথে মশকারা ছাড়া কিছুই হতে পারে না। বাংলাদেশে জনপ্রিয় প্রতীক ‘ধানের শীষ’। এর সাথে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের মানুষের আবেগ, অনুভূতি আর ভালোবাসা। এই প্রতীক উদীয়মান বাংলাদেশের স্বাধীনতা আর সার্বভৌমত্বের শিকড় মজবুত আর দৃঢ়ভিত্তির ওপর দাঁড় করানোর প্রতীক। এই প্রতীকের সাথে বাংলাদেশের গণতন্ত্রমনা মানুষের ইজ্জত, আব্রু আর অস্তিত্ব জড়িত। সুতরাং বারবার শাসকদলীয় ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটানোর জন্য নির্বাচনের নামে তামাশাতে অংশগ্রহণ করা কখনো রাজনৈতিক পরিপক্ব কৌশল হতে পারে না।

শুরু হয়েছে বাংলাদেশের স্থানীয় নির্বাচন। দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী দেশপ্রেমিক শহীদ জিয়ার বিশ্বস্ত আর ভালোবাসার একনিষ্ঠ কোটি কোটি কর্মী-সমর্থক-শুভানুধ্যায়ী। তারা যদি দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করেন তাদের অবস্থা সহজেই অনুমেয়। নিজ নিজ এলাকায় তাদের জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও ‘ধানের শীষের’ কারণেই রাজনৈতিক রোষানলে পড়তে তারা বাধ্য।

জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও তাদের ললাটে জুটছে পরাজয়ের কলঙ্কিত তিলক। এ ছাড়া স্থানীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় প্রতীকের জন্য প্রার্থীদের ছুটতে হয় নেতৃত্বের দুয়ারে দুয়ারে। একশ্রেণীর নেতা দলীয় প্রতীক বরাদ্দের নামে হরিলুট শুরু করেন সর্বত্র। তাদের ‘রাজনৈতিক বাণিজ্য’ হয় জমজমাট। প্রার্থীরা নির্বাচন সামনে রেখে এলাকাতে সময় দেয়ার পরিবর্তে সময় দিতে হয় দলীয় প্রতীক পাওয়ার তদবিরের পেছনে। এটি গ্রামীণ জনপদে বেড়ে ওঠা খাঁটি রাজনৈতিক কর্মীর জন্য অস্বস্তিকর আর বেদনার।

অন্য দিকে শত প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে যারাই অতীতে ‘ধানের শীষের’ পক্ষে নির্বাচিত হয়েছেন এবং এখনো হচ্ছেন, তারা হয়তো নিজেদের এলাকার জনসাধারণের স্বার্থে, নতুবা ভয়ভীতির কারণে বাধ্য হয়েই শাসক দলের সাথে দহরম মহরমে লিপ্ত হতে বাধ্য হন। ফলে আস্তে আস্তে তারা একাকার হয়ে যাচ্ছেন ক্ষমতাসীনদের সাথে। তাদেরই রাজনৈতিক চিন্তাচেতনার ধারক আর বাহক হতে হয়; নতুবা তাদের ওপর নেমে আসে অমানিশার কালো থাবা। কেউবা মামলা হামলার শিকার হয়ে কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে নতুবা বিচিত্র সব কাল্পনিক অজুহাতে সাময়িক বহিষ্কার। জেনে শুনে বিষপান করা কতটুকু রাজনৈতিক বিচক্ষণতা, তা সহজেই অনুমেয়।

অনেকেই অজুহাত দাঁড় করিয়ে বলেন, নির্বাচনে অংশ না নিলে বিএনপির অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন হবে- কর্মীরা মনোবল হারাবে। বিএনপি তার দীর্ঘ রাজনৈতিক পথপরিক্রমায় বিভিন্ন চড়াই-উতরাই পার হয়ে আজ নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার বৃহৎ একটি রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। বিএনপি কি কচু পাতার পানি যে, ধাক্কা দিলেই নিঃশেষ হয়ে যাবে? ভুলে গেলে চলবে না, দীর্ঘ ৯ বছর পতিত স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে বেগম জিয়ার আপসহীন নেতৃত্ব আর এরশাদের অধীনে সব নির্বাচন বর্জনই বিএনপিকে এনে দিয়েছিল কাক্সিক্ষত সাফল্য। এখানে মনে করার কোনো অবকাশ নেই যে, দলীয় প্রতীকে পাতানো আর সাজানো নির্বাচনে অংশ নেয়ার মধ্যেই রাজনৈতিক বিচক্ষণতা আর দূরদর্শিতা নিহিত।

স্থানীয় পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ একটি দলকে চাঙ্গা কিংবা মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড় করানোর অন্যতম হাতিয়ার। কিন্তু শুধু প্রতীকের কারণে সহজ সরল দলীয় নেতাকর্মীদের শাসকগোষ্ঠী আর প্রশাসনের রোষানলে পড়ার কোনো মানে হতে পারে না। দলীয় প্রতীক বরাদ্দ না করে বরং উন্মুক্ত করে দেয়া হোক সর্বত্র। তাতে উপকৃত হবে দল আর সাধারণ কর্মী সমর্থক। তখন মান সম্মান, ইজ্জত আর আব্রু রক্ষা পাবে ‘ধানের শীষের’।

লেখক : সাবেক আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক, জাতীয়তাবাদী যুবদল, বর্তমানে কানাডা প্রবাসী


আরো সংবাদ



premium cement
বাংলাদেশ-সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে ইউরিয়া সার কারখানার সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন আগামী ২ বছর উন্নয়নশীল এশীয় অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ৪.৯ শতাংশ থাকার আশা এডিবি প্রেসিডেন্টের চুয়াডাঙ্গায় আগুনে পুড়ে পানবরজ ছাই মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ, রিমান্ডে নেয়া হবে : ডিবি বৃহস্পতিবার সারা দেশের স্কুল-কলেজ বন্ধ ভূরুঙ্গামারীতে চিকিৎসকের কপাল ফাটিয়ে দিলেন ইউপি সদস্য ‘পঞ্চপল্লীর ঘটনা পাশবিক, এমন যেন আর না ঘটে’ টি২০ বিশ্বকাপের পিচ পৌঁছেছে নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে হাসপাতালে ভর্তি খালেদা জিয়া কমলাপুর স্টেশনে ট্রেন থেকে লাশ উদ্ধার মোরেলগঞ্জে বৃদ্ধের ফাঁস লাগানো লাশ উদ্ধার

সকল