১৮ মে ২০২৪, ০৪ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫
`


কোন পথে শ্রীলঙ্কা

কোন পথে শ্রীলঙ্কা - ছবি : সংগৃহীত

শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক সঙ্কট আরো ঘনীভূত হচ্ছে। একদিকে প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা ইউএনপিকে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন যে, তিনি কোনোভাবেই আর বিক্রমাসিংহেকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করবেন না। অন্য দিকে, প্রেসিডেন্টের নিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী রাজাপাকসে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ এমপির সমর্থন না পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী পদে অব্যাহতভাবে কাজ চালিয়ে যেতে পারছেন না। সুপ্রিম কোর্টের আদেশের কারণে নতুন সাধারণ নির্বাচনের পথেও যেতে পারছে না দ্বীপ দেশটি। এ অচলাবস্থার কারণে শ্রীলঙ্কার স্থানীয় মুদ্রার নজিরবিহীন অবমূল্যায়ন ঘটছে। বাজেট প্রণয়নে অচলাবস্থার কারণে সরকারি কর্মচারীদের বেতনভাতা পরিশোধেও ব্যত্যয় ঘটার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের সংসদ ভেঙে নতুন নির্বাচন দেয়ার আদেশকে স্থগিত করে যে অন্তর্বর্তী রায় সুপ্রিম কোর্ট দিয়েছেন তার শুনানি সুপ্রিম কোর্টে এখন চলছে। ধারণা করা হচ্ছে, জানুয়ারির প্রথমার্ধ নাগাদ এ মামলার রায় ঘোষণা হতে পারে। রায়ে যদি প্রেসিডেন্টের আদেশকে বৈধ ঘোষণা করা হয়, তাহলে দেশটি আবার নির্বাচনের দিকে এগোবে। আর যদি অবৈধ ঘোষণা করে সংসদের আস্থাভাজনকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করার সরাসরি আদেশ দেয়া হয়, তাতেও সঙ্কটের সুরাহা হবে না।

শ্রীলঙ্কা এখন কার্যত দ্বিধাবিভক্ত হয়ে গেছে। একদিকে ইউএনপি, অন্যদিকে শ্রীলঙ্কান ফ্রিডম পার্টি ও তার মিত্ররা। তামিল ও মুসলিম দলগুলো এর মধ্যবর্তী অবস্থানে রয়েছে। তারা ইউএনপির সরকারের অংশ হতে না চাইলেও রাজাপাকসেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মানতে রাজি নয়। ফলে সংসদের আস্থা ভোটে রাজাপাকসে হেরে যাচ্ছেন।

মধ্যবর্তী একটি উপায় সঙ্কট সমাধানে বের করা সম্ভব হতো যদি দু’পক্ষ ছাড় দিতে রাজি হয়। প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার বক্তব্যে মনে হচ্ছে, তিনি ইউএনপির সরকার মেনে নিতে সম্মত রয়েছেন। তবে সে সরকার হতে হবে বিক্রমাসিংহে ছাড়া অন্য কারো নেতৃত্বে। বিক্রমাসিংহে কোনোভাবেই তার প্রতি দলের আস্থা থাকা অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর দাবি ছাড়তে চাইছেন না। অথচ শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এখন যেখানে গিয়ে পৌঁছেছে তাতে টেকনিক্যালি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেও সমঝোতার বাইরে গিয়ে তিনি সরকার চালাতে পারবেন না।

এর আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে রাজাপাকসের দল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। ডিসেম্বরের নির্ধারিত সময়ে নতুন করে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে রাজাপাকসের দলের জয়লাভের সম্ভাবনা ছিল। এ কারণে বিক্রমাসিংহে চাচ্ছেন না ২০২০ সালে নির্ধারিত সময়ের আগে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। সুপ্রিম কোর্টের রায় তার পক্ষে এলে বিক্রমাসিংহে নির্বাচন এ মুহূর্তে এড়ানোর সুযোগ পাবেন। কিন্তু তার বিরোধী পক্ষ রাজপথে নামলে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সরকার গঠন করার পর তার পক্ষে পরিস্থিতি সামাল দেয়া সম্ভব হবে না। এর চেয়ে বরং স্পিকার বা তার দলের অন্য কোনো নেতাকে প্রধানমন্ত্রী করে বছর খানেক সময় নিয়ে নির্বাচনে যেতে পারলে সেটিই তার জন্য উত্তম হতো।

মেয়াদ স্বাভাবিক সময়ে শেষ হলে সংসদ নির্বাচনের আগে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। বিক্রমাসিংহে চাইলে প্রধানমন্ত্রিত্ব দলের অন্য কারো কাছে ছেড়ে দিয়ে তিনি হতে পারেন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। কিন্তু সেই সমঝোতার পথে যাবেন কি না সেটি অনেকখানি তার বিদেশী পৃষ্ঠপোষকদের ওপর নির্ভর করে।

শ্রীলঙ্কায় প্রকাশ্যে এখন ক্ষমতার লড়াই চলছে বিক্রমাসিংহে-রাজাপাকসের মধ্যে। কিন্তু নেপথ্যে প্রভাব বিস্তারের লড়াই হচ্ছে চীন ও ভারতের মধ্যে। ভারত ও তার পশ্চিমা মিত্ররা সমর্থন করছে বিক্রমাসিংহেকে। অন্য দিকে চীনা সমর্থন রাজাপাকসের প্রতি। শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে ভারতের প্রভাব বিস্তারের হাত অনেক গভীর। আর চীনের রয়েছে অর্থনৈতিক সহায়তা জোগানের বিশেষ ক্ষমতা। দেশটি এখন যে তীব্র অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখে তাতে চীনের বৈরিতা কোনোভাবেই সরকার সামাল দিতে পারবে না। আর এখন অর্থনৈতিক সঙ্কট যে অবস্থায় তাতে কোনোভাবে সমঝোতার বাইরে গেলে বিক্রমাসিংহে প্রশাসন চালাতে পারবেন না।

এ অবস্থায় শ্রীলঙ্কার স্থিতি আনতে হলে প্রধান দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা আসতে হবে। আর এ সমঝোতা হতে পারে তৃতীয় কেউ প্রধানমন্ত্রী হয়ে স্বল্প ব্যবধানে সাধারণ নির্বাচন করার মধ্য দিয়ে। তা না হলে, দেশটিকে অনেক বেশি মূল্য দিতে হতে পারে। অর্থনীতি ও স্থিতি দুটোই পড়ে যেতে পারে হুমকির মধ্যে।


আরো সংবাদ



premium cement
আবারো ভারতের নির্বাচন তাপপ্রবাহের মুখে, সতর্ক করল আবহাওয়া ব্যুরো সব বন্দীকে ফিরিয়ে আনব : নেতানিয়াহু বালিয়াডাঙ্গীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে স্কুলছাত্রের মৃত্যু বোরোর ফলন ভালো হলেও উৎপাদন খরচ বেশি ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে : প্রধানমন্ত্রী আত্মরক্ষার অধিকার বৈধতা দেয় না গণহত্যাকে চার বিভাগে ৪৮ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে আগ্রহী সার্বিয়া ডিমের ডজন ১৫০ ছাড়িয়েছে, নাগালে আসছে না মাছ ও সবজি যুক্তরাষ্ট্র র‌্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করছে না : মার্কিন উপ-মুখপাত্র শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উদযাপিত

সকল