২০ মে ২০২৪, ০৬ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫
`


আরাকান আর্মি-মিয়ানমার সেনাবাহিনীর যুদ্ধে অবরুদ্ধ রাখাইনের রোহিঙ্গারা

-

গত বছর থেকেই রাখাইনের সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মির সাথে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তুমুল লড়াই চলছে। আরাকান আর্মির বেশির ভাগ সদস্যই স্থানীয় বৌদ্ধ। ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে উত্তরপশ্চিম মিয়ানমারে সেনা অভিযানের ফলে স্থানীয় রোহিঙ্গা অধিবাসীর বেশির ভাগ প্রাণভয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এলেও সম্প্রদায়টির রয়ে যাওয়া দুই লাখের মতো সদস্য এখন এ নতুন যুদ্ধের মাঝখানে আটকা পড়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
আটকে পড়া এ রোহিঙ্গারা মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মি উভয় দিক থেকেই হুমকির মুখোমুখি হচ্ছেন বলে গ্রামগুলোর একাধিক বাসিন্দা জানিয়েছেন। বুথিয়াডং টাউনশিপের একটি গ্রামের বাসিন্দা টিন শয়ে বলেছেন, আমরা তাদের যুদ্ধের মধ্যে আটকে গেছি। গত দুই বছর ধরে আমাদের জীবনযাপনে কোনো উন্নতি নেই, খালি অবনতি। কেবলই সমস্যা।
বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সাথে লড়াই করা সরকারি বাহিনী উত্তর রাখাইনের বিভিন্ন মুসলমান অধ্যুষিত গ্রামে অবস্থান নিয়েছে বলে পাঁচজন গ্রামবাসী নিশ্চিত করেছেন। সরকারি সেনারা তাদের জন্য জ্বালানি কাঠ ও খাবার নিয়ে আসতে কিংবা আরাকানরা আর্মির অবস্থান দেখিয়ে দিতে গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের নির্দেশ দিচ্ছেন। এর মাধ্যমে তাদের জীবনকে ঝুঁঁকির মুখে ঠেলে দেয়া হচ্ছে বলে গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেছেন। নিরাপত্তাজনিত কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রথেডং টাউনশিপের এক বাসিন্দা বলেন, যদি তারা বলে তারা থাকবে, আমাদের তা মেনে নিতে হচ্ছে।
বুথিয়াডং টাউনশিপের আরেক বাসিন্দা জানান, শুদ্ধ বার্মিজ ভাষায় দক্ষতা থাকায় সৈন্যরা তাকে তাদের পথপ্রদর্শক হওয়ারও নির্দেশ দিয়েছিল। এরপর অজ্ঞাত এক নম্বর থেকে তার কাছে আসা ফোনে তাকে সৈন্যদের পথপ্রদর্শক হওয়ার ব্যাপারে সাবধান করে বলা হয়, যারাই সেনাবাহিনীকে সহায়তা করবে, তাদেরই ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে। বুথিয়াডং টাউনশিপের এ বাসিন্দা বলেন, ‘অপরপ্রান্তের ওই ব্যক্তি আমাকে বলেন- আমরা তোমাকে মেরে ফেলব, তোমার গ্রাম জ্বালিয়ে দেবো।’
আগস্টের শুরুতে সৈন্যদলকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাওয়া রথেডং টাউনশিপের সিন খোনে তাইং গ্রামের দুই রোহিঙ্গাকে গুলি করে হত্যা করা হয় বলে স্থানীয় পাঁচ ব্যক্তি রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন। এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে গ্রামটির কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। গ্রামটি থেকে পালিয়ে আসা এক মুসলিম ব্যক্তি বলেন, ‘আমরা দুই পক্ষের মধ্যে অবরুদ্ধ হয়ে আছি। আমরা নিরাপদ নই। জুনের পর থেকে গ্রাম থেকে তিনবার পালিয়েছি। সরকারের হাতে ওই এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেই।
আরাকান আর্মির মুখপাত্র খিনে তু কা বেসামরিক হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে এসব ঘটনার জন্য মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীকে দোষারোপ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের বেসামরিকদের এভাবে হত্যা করি না। যতখানি শুনেছি, বার্মিজ সেনাবাহিনীই তাদের নিয়ে যায় ও মেরে ফেলে। এ ধরনের অনেক ঘটনাই আছে।’
মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ রাখাইনের উত্তরাঞ্চল সাংবাদিক ও বেশির ভাগ মানবিক সাহায্য সংস্থার জন্যই বন্ধ করে রেখেছে। অস্থিরতা এড়াতে জুন থেকে ওই অঞ্চলে ‘ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট’ও চলছে। এসব বিধিনিষেধের কারণে সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া কঠিন হলেও রয়টার্স প্রতিনিধি মিয়ানমারের রাজধানী ও উত্তর রাখাইনে থাকা একাধিক রোহিঙ্গার সাথে এ নিয়ে কথা বলেছেন।
তারা বলছেন, মুসলিম গ্রামগুলোতে এখন হরহামেশাই ভূমিমাইন বিস্ফোরিত হচ্ছে ও শেল পড়ছে। গ্রামগুলো এখন দুই পক্ষের লড়াইয়ের ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। দুই রোহিঙ্গা অধিবাসী জানিয়েছেন, সুযোগ থাকলে তারাও বাংলাদেশে পালিয়ে যেতেন; কিন্তু আগে যে পথ দিয়ে সীমানা পেরোনো যেত, সঙ্ঘাতের কারণে সেগুলো অনিরাপদ হয়ে উঠেছে।


আরো সংবাদ



premium cement
ফের ইংলিশ লিগ চ্যাম্পিয়ন ম্যানসিটি ম্যানসিটির টানা চতুর্থ শিরোপা কেএনএফের তৎপরতার প্রতিবাদে বান্দবানে মানববন্ধন তাপপ্রবাহের মধ্যে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জন্য নতুন নির্দেশনা ‘ভুয়া তথ্য’ ছড়িয়ে কিরগিজস্তানে বিদেশী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা রংপুরে হুমকি দাতা ইউপি মেম্বারকে তলব করল রিটার্নিং কর্মকর্তা রোহিঙ্গা গ্রামে আরাকান আর্মির হামলা ও অগ্নিসংযোগ মিরপুরে ব্যাটারি চালিত রিক্সাচালক ও পুলিশ সংঘর্ষ : আহত অর্ধশত লজ্জাহীনতার বার্তা শিশুদের মনে দুর্ঘটনার কবলে ইরানের প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টার গুরুতর আঞ্চলিক সঙ্কটে পরিণত হয়েছে রোহিঙ্গা সমস্যা : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সকল