২০ মে ২০২৪, ০৬ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫
`


কাশ্মিরে ৯ তরুণ নিহতের প্রতিবাদে ধর্মঘট পালিত

-

ভারত অধিকৃত জম্মু-কাশ্মির রাজ্যের কাশ্মির উপত্যকাজুড়ে সর্বাত্মক ধর্মঘট পালিত হয়েছে। গত রোববার দক্ষিণ কাশ্মিরের কুলগামে ভারতীয় বাহিনীর গুলিতে বেসামরিক মানুষজন নিহত হওয়ার প্রতিবাদে গতকাল সোমবার এ ধর্মঘট পালন করা হয়।
হুররিয়াত কনফারেন্সের প্রধান সাইয়েদ আলিশাহ গিলানি, মিরওয়াইজ ওমর ফারুক ও মুহাম্মদ ইয়াসিন মালিকের সমন্বিত যৌথ প্রতিরোধ নেতৃত্ব ওই ধর্মঘটের ডাক দেয়। ধর্মঘটের ফলে কাশ্মির উপত্যকার সব দোকানপাট, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, সরকারি ও বেসরকারি দফতর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে নিরাপত্তাজনিত কারণে শ্রীনগর ও বানিহালের মধ্যে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। গোলযোগপূর্ণ এলাকায় ইন্টারনেট পরিসেবা স্থগিত করা হয়।
সরকারি এক কর্মকর্তা বলেন, সব স্পর্শকাতর এলাকায় সহিংসতা এড়াতে নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া শ্রীনগরের রায়নাওয়াড়ি, নৌহাট্টা, সাফাকদল, খানইয়ার, এম আর গঞ্জ, ক্রালখুদ ও মৈসুমা থানা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এসব এলাকায় প্রবেশের সব সড়ক কাঁটাতার দিয়ে ‘সিল’ করে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া কুলগাম, অনন্তনাগ ও সোপিয়ানেও ১৪৪ ধারা কার্যকর করা হয়েছে।
কাশ্মিরে বর্তমানে প্রায় পাঁচ লাখ ভারতীয় সেনা মোতায়েন রয়েছে। ২০১৬ সালে ভারতীয় বাহিনী কাশ্মিরের জনপ্রিয় তরুণ স্বাধীনতাকামী কমান্ডার বুরহান ওয়ানিকে হত্যা করার পর অঞ্চলটিতে ভারতীয় শাসনের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা ওই বিক্ষোভে নির্বিচারে গুলি চালায় ভারত। এক শ’র বেশি বেসামরিক লোক নিহত হয় এ সময় ভারতীয় বাহিনীর হাতে। ভারতীয় সেনাদের পেলেট গানে চোখ হারিয়েছে অনেক নিরীহ বেসামরিক লোক।
বাহিনীর কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা ইমরান খানের
এ দিকে ডন জানায়, কাশ্মিরে ভারতীয় বাহিনীর কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করে সংলাপের মাধ্যমে কাশ্মির সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এক টুইটার পোস্টে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী কাশ্মিরে ভারতীয় বাহিনীর কর্মকাণ্ডকে ‘নিরপরাধ লোকদের হত্যার নতুন চক্র’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
কাশ্মিরের সমস্যা সমাধানের জন্য ইমরান খান অঞ্চলটির মানুষের ইচ্ছা ও জাতিসঙ্ঘের প্রস্তাব মেনে চলার আহ্বান জানান। বিষয়টি উপলব্ধি করার আহ্বানও জানান ভারতের প্রতি। ইমরান খান বলেন, কাশ্মিরি জনগণের ইচ্ছে ও জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব অনুযায়ী যে কাশ্মির সমস্যার সমাধান করতে হবে ভারতের সেটি উপলব্ধি করার সময় এসেছে। টুইটার পোস্টে ইমরান খান লিখেছেন, ‘ভারত অধিকৃত কাশ্মিরে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে হত্যাকাণ্ডের নতুন চক্রের জোর নিন্দা জানাই। কাশ্মিরের জনগণের ইচ্ছা ও জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব অনুযায়ী কাশ্মির বিরোধের সমাধান করার বিষয়টি ভারতের উপলব্ধি করার সময় এসেছে।’
ইমরান খানের এ প্রতিক্রিয়াকে স্বাগত জানিয়েছেন কাশ্মিরের স্বাধীনতাকামী নেতা মিরওয়াইজ ওমর ফারুক। কাশ্মির ইস্যুতে পাকিস্তানের উদ্বেগকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি এ বিষয়ে পাকিস্তানকে আরো বেশি ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি। ‘ভারতীয় রাষ্ট্রের হাতে কাশ্মিরিদের নির্যাতিত হওয়া ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের’ সমাপ্তি টানতে পাকিস্তানের জোরালো ভূমিকা প্রত্যাশা করেন তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement