২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ফেনী কলেজে সাধারণ ছাত্রদের ইফতার পণ্ড করল ছাত্রলীগ

-

ফেনী সরকারি কলেজে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আয়োজনে গণইফতার কর্মসূচি পণ্ড করে দিয়েছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। গতকাল সোমবার এ ঘটনার সময় ছাত্রলীগের মারধরের শিকার হয়ে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতার পার্টির ওপর ‘বিধিনিষেধ’ আরোপের প্রতিবাদে সোমবার ফেনী কলেজ আঙিনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে গণ-ইফতার কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। পূর্বনির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী ফেনী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মসজিদে আসর নামাজ শেষে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকে। কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি নোমান হাবিবের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতাকর্মী তাদের জড়ো হওয়ার কারণ জানতে চায়। এর কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে ছুটে যায় জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ও কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি তোফায়েল আহমেদ তপু। তখন ছাত্রলীগের উচ্ছৃৃঙ্খল নেতাকর্মীরা ক্রিকেট ব্যাট ও স্ট্যাম্প দিয়ে সাধারণ ছাত্রদের এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। এতে ফেনী কলেজের বিবিএ শিক্ষার্থী আলী আহম্মদ ফোরকান, বিএসসির শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম, এমরান হোসেন ও গণিতের শিক্ষার্থী আবদুল মোহাইমিন আজিমসহ সাত-আটজন আহত হয়। একপর্যায়ে আজিমকে কলেজের একটি কক্ষে আটকে রেখে অন্যদের বের করে দেয়া হয়। ইফতারের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা কলেজ গেটে এলে তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়া হয়।
মারধরের শিকার আবদুল মোহাইমিন আজিম জানায়, ইফতারে অংশ নিতে এলে তাদের ব্যাট-স্ট্যাম্প দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। একপর্যায়ে তাকে আটকে রাখার আধঘণ্টা পর ছেড়ে দেয়া হয়। তিনি ফেনী জেনারেল হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
আলী আহম্মদ ফোরকান নামে আরেক শিক্ষার্থী জানান, ছাত্রলীগ নেতাদের বাধায় ইফতার মাহফিল পণ্ড হয়ে যায়। তাদের হামলায় কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়।
কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি নোমান হাবিব জানান, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে শিবির কলেজে ইফতার কর্মসূচির আয়োজন করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে গণ-ইফতার নামে একটি আয়োজন দেখতে পাই। পরে সেখানে গিয়ে দেখি তারা জড়ো হতে থাকে। বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় তাদের কলেজ থেকে বের করে দেয়া হয়।
জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ও কলেজ ছাত্র সংসদের সভাপতি তোফায়েল আহমেদ তপু জানান, ছাত্রশিবির ক্যাম্পাসে অরাজকতা করতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে গণ-ইফতারের আয়োজন করে। বিষয়টি কলেজ প্রশাসন ও ছাত্র সংসদের কেউ জানত না। নেতাকর্মীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে কলেজে গিয়ে তাদের সরিয়ে দিই। তবে সেখানে কাউকে পেটানো হয়নি বলে তিনি দাবি করেন।
পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে একটি ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়ো হয়েছে বলে জেনেছেন। ঝামেলার খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পায়নি। এ ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল