২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মির্জাপুর পুলিশ ফাঁড়িতে আসামির মৃত্যু : পরিবারের অভিযোগ হত্যা

-

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর পুলিশ ফাঁড়িতে লেবু মিয়া (৫০) নামে এক আসামির রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের দাবি- লেবু মিয়া গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে পুলিশের এ দাবি মানতে নারাজ পরিবার। পরিবারের অভিযোগ- পুলিশ তাকে নির্যাতন করে হত্যার পর এখন আত্মহত্যার নাটক সাজাচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবার ভোরে মির্জাপুরের বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির হাজতখানা থেকে লেবু মিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে গোড়াই-সখিপুর সড়ক প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন। লেবু মিয়া বাঁশতৈল গ্রামের বাহার উদ্দিনের ছেলে।
এ ঘটনায় টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মীর মনির হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই সময় ফাঁড়িতে দায়িত্বে থাকা পুলিশ কনস্টেবলকে টাঙ্গাইল পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
জানা যায়, সোমবার দুপুরে বাঁশতৈল পশ্চিমপাড়া গ্রামে নিজ ঘর থেকে সখিনা বেগম (৪২) নামে এক নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। দুর্বৃত্তরা তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সোমবার দুপুরে পুলিশ সখিনার সাবেক স্বামী বাঁশতৈল গ্রামের মফিজুর রহমান ও তার পরকীয়া প্রেমিক লেবু মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। সোমবার রাত সাড়ে ১১টায় সখিনার ভাই বাদশা মিয়া বাদি হয়ে মফিজুর রহমান ও লেবু মিয়াসহ অজ্ঞাত আসামি করে মির্জাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
লেবু মিয়ার স্ত্রী আলেয়া বেগম জানান, তার স্বামীর নামে কোনো মামলা ছিল না। সোমবার দুপুরে বাঁশতৈল ফাঁড়ির পুলিশ সাখাওয়াত, নেছার উদ্দিন ও সেলিম তাকে ধরে নিয়ে ওই হাজতে আটকে রেখে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। কারণ, হাজতখানায় রশি থাকার কথা নয়। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষী পুলিশ সদস্যদের শাস্তির দাবি জানান তিনি।
স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য ইদ্রিস আলী বলেন, ‘বাঁশতৈল ফাঁড়ির এসআই সেলিম তাকে আটক করে নিয়ে যায়। পরে তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। একপর্যায়ে তার মৃত্যু হয়। পরে পুলিশ আত্মহত্যার নাটক সাজাচ্ছে। আমরা এই হত্যার বিচার চাই।’
তবে বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাখাওয়াত হোসেন জানান, ফাঁড়িতে কাউকে নির্যাতন করা হয়নি। তাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা মিথ্যা ও বানোয়াট।
মির্জাপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম বলেন, বাঁশতৈল ফাঁড়ি হাজতে থাকা লেবু মিয়া রাতের কোনো একসময়ে টয়লেটের ভেন্টিলেটর রডের সাথে নাইলনের রশি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, পুলিশের নামে অভিযোগ আসবে বলে এসিল্যান্ডকে দিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট করা হয়েছে। সুরতহাল ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। এ ঘটনায় যদি পুলিশের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় তবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement