তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ বেড়েছে
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৮ নভেম্বর ২০২১, ১৯:১৮
তামাক কোম্পানির অব্যাহত হস্তক্ষেপের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওর্য়াক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি)’র কার্যকর বাস্তবায়ন এবং তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার কাক্সিক্ষত লক্ষ্য।
রোববার ঢাকায় প্রকাশিত ‘তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ সূচক: এফসিটিসি আর্টিক্যাল ৫.৩ বাস্তবায়ন প্রতিবেদন, বাংলাদেশ ২০২১’ গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স (আত্মা) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।
গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ বেড়েছে । তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ সূচক, ২০২১ এ বাংলাদেশের প্রাপ্ত স্কোর ৭২ যা গতবছর এই স্কোর ছিল ৬৮। আর্টিক্যাল ৫.৩ এর নির্দেশনাবলী বাস্তবায়নে কোন অগ্রগতি হয়নি। অন্যদিকে কূটনৈতিক মাধ্যম ব্যবহার করে সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ এবং প্রভাব বিস্তারের চেষ্টার বিষয়টি উঠে এসেছে গবেষণা প্রতিবেদনে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং জাতীয় তামাকবিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল, হেড অব গ্লোবাল রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি ড. মেরি আসুন্তা, , বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডা. সৈয়দ মাহফুজুল হক, প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের প্রমুখ।
আত্মার কনভেনর মর্তুজা হায়দার লিটন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। কো-কনভেনর সাংবাদিক নাদিরা কিরণের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে গবেষণা ফলাফল উপস্থাপন করেন প্রজ্ঞার তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক কর্মসূচি প্রধান মো. হাসান শাহরিয়ার। গবেষণা ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল, তামাকবিরোধী সংগঠন এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
গবেষণায়, ২০২০ সালে করোনা মহামারি চলাকালে তামাক কোম্পানিগুলোকে যেভাবে বিভিন্ন কথিত সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক (সিএসআর) কর্মসূচি নিয়ে সক্রিয় থাকতে দেখা গেছে, ইতোপূর্বে সেভাবে কখনো দেখা যায়নি। মহামারিসৃষ্ট সংকটের সুযোগ নিয়ে দাতব্য কাজের নামে যেমন আগ্রাসিভাবে ব্র্যান্ড ইমেজ বৃদ্ধি করেছে, অন্যদিকে সুরক্ষা সরঞ্জাম বিতরণসহ বিভিন্ন ইস্যুতে প্রভাবশালী সরকারি বিভিন্ন সংস্থার সান্নিধ্যে এসে ভবিষ্যত হস্তক্ষেপের পথ সুগম করেছে তামাক কোম্পানিগুলো। বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকেও তামাক কোম্পানিগুলোকে পুরস্কৃত করতে দেখা গেছে।
সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি বলেন, ‘কোভিডের চেয়ে তামাকের কারণে বাংলাদেশে অনেক বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। অথচ তামাক নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। আসলে সংস্থাগুলো এফসিটিসি এবং প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাকে ধারণ করছে কিনা সেটাই মৌলিক প্রশ্ন।’
কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, ‘হস্তক্ষেপ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান খুবই নাজুক। এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ, সেটা কেন?’ তিনি বিএটিবির শেয়ার প্রত্যাহার এবং তামাকের ২৫ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক পুনর্বহালের দাবি জানান।
গবেষণার সুপারিশে তামাক কোম্পানির সিএসআর কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধসহ তামাকনিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে এফসিটিসির সাথে অধিকতর সামঞ্জস্যপূর্ণ করার প্রতি জোর তাগিদ দেয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি সিগারেটকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের তালিকা থেকে বাদ দিতে ১৯৫৬ সালের অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন, একটি সহজ তামাককর ও মূল্য নীতি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন, তামাক কোম্পানিতে সরকারের শেয়ার/বিনিয়োগ প্রত্যাহার, তামাক কোম্পানির সাথে যোগাযোগ বা আলোচনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জন্য এফসিটিসি আর্টিক্যাল ৫.৩ এর আলোকে আচরণবিধি চূড়ান্তকরণ এবং তামাক কোম্পানিকে সব ধরনের পুরস্কার প্রদান বন্ধসহ প্রদত্ত সকল সুবিধা প্রত্যাহার ও তামাক ব্যবসায় নতুন বিনিয়োগ নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করা হয়েছে।
সূত্র : বাসস
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা