১৯ মে ২০২৪, ০৫ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলকদ ১৪৪৫
`


বোরো ধান সফলভাবে ঘরে তুলতে পারলে খাদ্যসঙ্কট হবে না : কৃষিমন্ত্রী

বোরো ধান সফলভাবে ঘরে তুলতে পারলে খাদ্যসঙ্কট হবে না : কৃষিমন্ত্রী - ছবি : নয়া দিগন্ত

সারা দেশের বোরো ধান সফলভাবে ঘরে তুলতে পারলে করোনাকালেও দেশে খাদ্যসঙ্কট হবে না বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি।

তিনি বলেন, করোনা মহামারীকালে খাদ্য নিয়ে মানুষকে যাতে আতঙ্কে থাকেত না হয়, খাদ্যের যাতে কোনো অভাব না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার দৃঢ়ভাবে কাজ করছে। এবার বোরোর আবাদ লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি হয়েছে। এ বছর বৃষ্টিপাত কিছুটা কম হয়েছে, তারপরও ভালো ফলন হবে। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ও হাওরসহ সারা দেশের বোরোধান সফলভাবে ঘরে তুলতে পারলে দেশে খাদ্যসঙ্কট থাকবে না। দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।

শুক্রবার হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার যাত্রাপাশা গ্রামে হাওরে ‘বোরো ধান কর্তন উৎসব’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বানিয়াচং উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

হাওরে উৎপাদন বৃদ্ধিতে নানামুখী কর্মসূচির উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, হাওরের বিশাল জমিতে বছরে মাত্র একটি ফসল বোরো ধান হয়। এ ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে কৃষকদের উন্নত জাতের হাইব্রিড ধান দেয়া হবে। এ ছাড়া হাওরের অনেক জায়গায় সেচের অভাবে জমি পতিত থাকে বা সেচের প্রয়োজন হয়। এসব জায়গায় সেচসুবিধা সম্প্রসারণের জন্য বিএডিসির মাধ্যমে খাল খনন ও পুনঃখননের জন্য শিগগিরই প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।

হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মো: আবু জাহির, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: মেসবাহুল ইসলাম, বিএডিসির চেয়ারম্যান ড. অমিতাভ সরকার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো: আসাদুল্লাহ, ব্রি’র ডিজি ড. মো: শাহজাহান কবীর, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্যা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর হবিগঞ্জের উপ-পরিচালক মো: তমিজ উদ্দিন খান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলমগীর চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

পরে কৃষিমন্ত্রী বানিয়াচংয়ের হাওরে ধান কাটার উদ্বোধন করেন ও ভর্তুকির আওতায় ধান কাটার যন্ত্র কম্বাইন্ড হারভেস্টার ও রিপার কৃষকের মাঝে বিতরণ করেন। এ ছাড়া ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের আঞ্চলিক কার্যালয় পরিদর্শন করেন।

যন্ত্র বিতরণ শেষে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষকের অকৃত্রিম বন্ধু। তিনি অত্যন্ত উদারভাবে কৃষকদেরকে বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছেন। ৭০ শতাংশ ভর্তুকিতে অর্থাৎ ২৮ লাখ টাকার কম্বাইন হারভেস্টারের ২১ লাখ টাকাই সরকার দিচ্ছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষকদরদী বলেই এটি সম্ভব হয়েছে।

তিনি বলেন, হাওরে অনেক সময় আগাম বন্যা এসে ধান নষ্ট করে ফেলে। সেজন্য দ্রুততার সাথে ধান কাটার জন্য যন্ত্র দেয়া হয়েছে। আগামীতে আরো বেশি করে দেয়া হবে দুই বছর পরে ধান কাটার যন্ত্রের কোনো অভাব হবে না। হাওরে যত যন্ত্রের প্রয়োজন হবে তা দেয়া হবে।

কৃষিবিদ ড. রাজ্জাক বলেন, গত বোরো মৌসুমে ধানের ভালো উৎপাদন হয়েছিলো। আউশ-আমন মৌসুমে দফায় দফায় দীর্ঘস্থায়ী বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে উৎপাদন অনেক কম হয়েছিলো। ফলে ধান চালের দাম অনেক বেশি ছিলো। সেজন্য এ বছরের শুরুতেই আমরা সর্বাত্মক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলাম যেকোলো মূল্যে বোরোতে উৎপাদন বাড়াতে হবে। আমাদের বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে গত বছরের তুলনায় এ বছর এক লাখ ২০ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। একই সাথে গত বছরের তুলনায় প্রায় তিন লাখ হেক্টরেরও বেশি জমিতে হাইব্রিডের আবাদ বেড়েছে। আশা করা যায় গত বছরের তুলনায় এ বছর বোরোতে ৯ থেকে ১০ লাখ টন বেশি উৎপাদন হবে।

কৃষিমন্ত্রী এ সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে ধানকাটায় এগিয়ে আসার ও এ বিষয়ে যার যার অবস্থান থেকে সহযোগিতার আহ্বান জানান।


আরো সংবাদ



premium cement