২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

৩৫ বছর আগের জগন্নাথ হল ট্র্যাজেডি এবং ৪০ জনের মৃত্যু

নয়া দিগন্ত অনলাইন - ছবি : সংগৃহীত

১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টেবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের একটি হলরুমের ছাদ ধসে পড়ে নিহত হয়েছিলেন ৪০ জন। ধসে পড়া সেই ভবনটি ‘পরিষদ ভবন বা অ্যাসেম্বলি হল’ নামে পরিচিত ছিল। একশো বছরেরও বেশি পুরনো অডিটোরিয়ামটি তখনকার পূর্ব পাকিস্তান প্রদেশের পরিষদ ভবন বা সংসদ ভবন ছিল, তাই এটি অ্যাসেম্বলি হল বা পরিষদ ভবন হিসেবে ছিল খ্যাতিমান। পরে নতুন পরিষদ ভবন তৈরি হলে ওই ভবনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

এরপর ১৯৮৫ সালের ১৫ই অক্টোবরের মর্মান্তিক এ ঘটনার আগ পর্যন্ত এটি জগন্নাথ হলের টেলিভিশন কক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হতো।ওই রাতে তুমুল বৃষ্টির মধ্যে ভবনটির ছাদ ধসে পড়ে ঝড়ে যায় তাজা ৪০ টি প্রাণ আহত হন আরো শতাধিক।ওই সময়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছে সেই রাতটি আজো অক্টোবরের ট্রাজেডি।

প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানে ওই মর্মান্তিক ঘটনা
বর্তমানে জগন্নাথ হল কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি স্বপন কুমার দে সেদিন ছিলেন টেলিভিশিন কক্ষের ভিতরে। আর তার বাবা জগন্নাথ হলে বাগানের মালী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেই সূত্রে হল এলাকার ভেতরেই বাস করতো তার পরিবার।

‘সেদিন বিকেল থেকেই ছিল প্রচুর ঝড়-বৃষ্টি। দুর্ঘটনার সময়ও চলছিল গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। ওই সময় রুমের ভেতরে আনুমানিক দেড় থেকে দুই শ' মানুষ ছিল বলে ধারণা করেন স্বপন কুমার দে। তবে পরের দিনে প্রকাশিত পত্র-পত্রিকা এবং ওই ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন লেখকের লেখায় উপস্থিত মানুষের সংখ্যা তিন শ' থেকে চার শ’ ছিল বলেও উল্লেখ করা হয়।তখন নিম্নচাপ চলছিল দক্ষিণের বঙ্গোপসাগরে। ভারী বৃষ্টিপাত ও বাতাস বইছিল ঢাকায়।

‘রাত সাড়ে ৮টায় তখন শুকতারা নামের একটা চলছিল। নাটক চলতে চলতেই হঠাৎ এক সময় মনে হয় ছাদ থেকে বালির গুড়া পড়ছে মাথায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই প্রচণ্ড শব্দ শুনি, আর বুঝতে পারি আমাকে দুই দিক থেকে শূন্যে তুলে সরিয়ে নেয়া হলো। কিছুক্ষণ পর চোখ খুলে দেখতে পাই আমি আরো কয়েকজনের সাথে টিভির পেছনে দাঁড়িয়ে আছি।

ছাদ ধসে পড়ার আগের মুহূর্তে দু’জন ছাত্র দুই পাশ দিয়ে আমাকে ধরে টেলিভিশনের পেছনের জায়গাটায় নিয়ে আসে। চৌকিতে যারা বসে ছিল, তাদের অনেকেই শেষমুহুর্তে ওইখানে এসে আশ্রয় নিতে পেরেছিল।’

‘একটু ধাতস্থ হওয়ার পর আশপাশে শব্দ আসছিল ‘বাবারে, মা’গো, বাঁচাও’ এসব আর্তনাদ । তখনো মাথায় ছিল না দুর্ঘটনায় মানুষ মারা গিয়েছিল কি-না। অনেকটা পাগলের মত ছুটে বের হয়ে যাই সেখান থেকে।

ওই সময়ের সংবাদপত্র থেকে জানা যায় ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে ৩৪ জন মারা যায়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো পাঁচ জনের মৃত্যু ঘটে।

জগন্নাথ হলের ভবন ধসের ঘটনায় ঠিক কতজন আহত হয়েছিলেন, তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না। তবে পত্রিকাগুলোর রিপোর্টে শতাধিক আহত হওয়ার খবর বলা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত এক তদন্তে বলা হয় অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে পুরনো ও জীর্ণ ভবনটি ধসে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

ভবন ধসের পর পুরো ভবনটিই গুড়িয়ে দেয়া হয়। পরে ওই একই জায়গায় ‘অক্টোবর স্মৃতি ভবন’ নামে জগন্নাথ হলের নতুন একটি ছাত্রাবাস তৈরি করা হয়। আর ঘটনার পরের বছর থেকেই ১৫ই অক্টোবর পালিত হয় ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস’ হিসেবে।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement
‘ফ্রি ভিসার গল্প’ আর শূন্য হাতে ফেরা লাখো শ্রমিক নোয়াখালীতে প্রবাসীর স্ত্রীর ব্যক্তিগত ছবি দেখিয়ে চাঁদা আদায় দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল দেখে না : কাদের আশুলিয়ায় বাঁশবাগান থেকে নারী পোশাক শ্রমিকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার মিয়ানমারের কর্মকর্তারা ফেরত গেলেন, কিন্তু রোহিঙ্গা সঙ্কট কি আরো জটিল হচ্ছে দিনাজপুরে দুই ট্রাকের সংঘর্ষ, চালক-হেলপার নিহত মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ সখীপুরে বৃষ্টির জন্য অঝোরে কাঁদলেন মুসল্লিরা দক্ষিণ ভারতে কেন কাজ করেনি বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের নতুন আংশিক কমিটি বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসায় বিনিয়োগ সম্ভাবনা অন্বেষণে থাইল্যান্ডের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

সকল