ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি ও পাকিস্তানের সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মধ্যে টেলিফোন সংলাপকে স্বাগত জানিয়েছে পাকিস্তানের গণমাধ্যমগুলো।
ওই টেলিফোন সংলাপে ইরানের প্রেসিডেন্ট রুহানি সাম্প্রতিক নির্বাচনে তেহরিকে ইনসাফ দলের বিজয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে অর্থনৈতিকসহ সব ক্ষেত্রে তেহরান-ইসলামাবাদ সম্পর্ক জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। এ সংলাপে ইমরান খানও দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা ও সম্পর্ক আরো দৃঢ় করার ব্যাপারে তার গভীর আগ্রহের কথা জানান। তিনি বলেন, ইরানের সাথে সম্পর্ক বিস্তারকে পাকিস্তান ব্যাপক গুরুত্ব দেয়।
পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সাম্প্রতিক নির্বাচনে ইমরান খানের বিজয় তেহরান ও ইসলামাবাদের মধ্যে সম্পর্ক বিস্তারে নয়া অধ্যায়ের সূচনা করেছে। তাদের মতে, যেহেতু ইমরান খান জনগণের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধি তাই প্রতিবেশী বিশেষ করে ইরানের সাথে সর্বাত্মক সহযোগিতা বিস্তার এবং জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবেন বলে সেদেশের জনগণ আশা করছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তেহরানের সাথে সহযোগিতা বিস্তারের বিষয়টি ইসলামাবাদের পররাষ্ট্র নীতিতে সবসময় অগ্রাধিকার পেলেও আমেরিকার স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে পাকিস্তানের কোনো সরকারই ইরানের সাথে জ্বালানি ক্ষেত্রে যেসব চুক্তি হয়েছে তা বাস্তবায়ন করেনি। উদাহরণ হিসেবে ইরান থেকে পাকিস্তানে গ্যাস সরবরাহ লাইন নির্মাণের কথা উল্লেখ করা যায়। পাকিস্তানের জনগণের জীবন মান উন্নয়ন এবং শিল্প কারখানা ও অর্থনীতিকে এগিয়ে নেয়ার জন্য তাদের ব্যাপক জ্বালানির চাহিদা রয়েছে। ইমরান খানের প্রতি জনগণের ব্যাপক সমর্থনের একটি কারণ হচ্ছে, জনগণের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি তিনি আর্থিক দুর্নীতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
ইমরান খান নির্বাচনী প্রচারণার সময় প্রতিবেশী সব দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলারও ওয়াদা করেছিলেন। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক বিষয়ক বিশ্লেষক আব্দুল বাসেত বলেছেন, মুসলিম ও ভ্রাতৃপূর্ণ প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ইরান ও পাকিস্তান দূরের দেশ থেকে পণ্য কেনাবেচার পরিবর্তে নিজেদের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণ করতে পারে। তিনি বলেন, এ দুই দেশ তেল গ্যাসসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক খনিজ সম্পদ আবিষ্কার ও আহরণেও একে অপরকে সহযোগিতা করতে পারে। এ ছাড়া, কাগজ, আসবাবপত্র, চিনি, সিমেন্ট, ক্যামিকেল, পরিবহন ও যাতায়াত ব্যবস্থা প্রভৃতি ক্ষেত্রেও ইরান ও পাকিস্তানের মধ্যে সহযোগিতা বিস্তারের সুযোগ রয়েছে বলে পাকিস্তানের এ অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ মনে করেন।
অভিন্ন ঐতিহ্য ও ধর্মীয় বন্ধনের কারণে ইরান সবসময়ই পাকিস্তানের জনগণের পাশে ছিল এবং দেশটির অনেক সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছে। এ অবস্থায় ইরানের প্রেসিডেন্ট রুহানি তেহরান সফরের জন্য ইমরান খানকে যে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তা সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলাসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও সহযোগিতা বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদ ইরান ও পাকিস্তানের অভিন্ন সমস্যা। তাই সামরিক ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে দু'দেশের মধ্যকার সহযোগিতা অভিন্ন সীমান্তে নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায়ও বিরাট অবদান রাখবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা