ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার খান ইউনিস ও রাফা উপত্যকায় ইসরাইলের সেনাবাহিনী দুজন ফিলিস্তিনীকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। খবর আনাদোলু’র।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় শুক্রবার ইসরাইলি সেনারা মুসাব আইমান নামে ১৩ বছর বয়সি এক ফিলিস্তিনি শিশুকে মাথায় গুলি করে হত্যা করেছে। একই সময়ে রাফা অঞ্চলে মুহাম্মাদ ফাউজি আল হামিদা নামে ২৪ বছর বয়সি আরেক ফিলিস্তিনি যুবককে গুলি করে হত্যা করে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কাইদার বলেন, ইসরাইলি সেনারা গাজার সীমান্তবর্তী খান ইউনুস শহরের কাছে শুক্রবার মুহাম্মাদ ফাউজি আল হামিদা নামে ২৪ বছর বয়সি ফিলিস্তিনি যুবককে গুলি করে হত্যা করে। এছাড়া মুসাব আইমানের(১৩) মাথায় গুলি করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
একইদিন গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফা শহরের কাছে ইসরাইলি সেনারা ফিলিস্তিনি যুবক মুহাম্মাদ ফাউজি মুহাম্মাদকে গুলি করে। আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পর তিনি মারা যান।
চলতি বছরের ৩০ মার্চ থেকে গাজা উপত্যকায় নিজেদের ভুমি ফিরে পাওয়ার আন্দোলনে ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের ওপর ইহুদিবাদী সেনাদের নির্বিচার গুলিবর্ষণ ও হামলায় এ পর্যন্ত ১৪ শিশুসহ অন্তত ১৩৫ ফিলিস্তিনি নিহত ও প্রায় ১৫ হাজার ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
এসময় বিক্ষোভকারীরা ১৯৪৮ সাল থেকে ইসরাইল কতৃক দখলকৃত তাদের ভূমি ফিরিয়ে দিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিল। গাজায় এক দশক ধরে চলমান অবরোধ তোলে নিয়ে তাদের গাজাবাসীদৈর মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিতেও আন্দোলয় চালিয়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিনিরা।
আরো দেখুন : স্বীকৃতি পাচ্ছে ফিলিস্তিন!
প্রিন্স উইলিয়াম ফিলিস্তিনী অঞ্চলকে ‘দেশ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। রামাল্লায় মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংঘাতের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি আব্বাসকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আমাকে এখানে স্বাগত জানানোর জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি অত্যন্ত আনন্দিত এই ভেবে যে, আমরা দুটি দেশ একত্রে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি এবং অতীতে শিক্ষায় ও ত্রাণের কাজে আমাদের দু দেশের মধ্যে সফলতার গল্প রচিত হয়েছে।’
পশ্চিমা দেশগুলো সাধারণত ফিলিস্তিনীকে একটি দেশ বা রাষ্ট্র হিসেবে উল্লেখ না করে বরং ভবিষ্যতে- তথা কথিত দুই রাষ্ট্র সমাধানে কেবল ফিলিস্তিনের সার্বভৌমত্বের পক্ষে নিজেদের সমর্থন দেয়। জাতিসঙ্ঘে ফিলিস্তিনের পর্যবেক্ষক মর্যাদা থাকলেও এটি সেখানে সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃত নয়।
প্রিন্স উইলিয়াম প্রথমবারের মতো ফিলিস্তিনী অঞ্চলে শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তিনি ফিলিস্তিনীদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমাদের ভুলে যাইনি।’ সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অধিকৃত জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণার পর এই স্পর্শকাতর সময়ে ব্রিটিশ রাজপরিবারের এই সিনিয়র সদস্যের আগমন ঘটল এ অঞ্চলে।
ইসরাইলের উপকূলীয় শহর তেল আবিব থেকে অভ্যর্থনা দিয়ে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনী প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের হিলটপ অফিসে নিয়ে আসা হয় প্রিন্সকে। ফিলিস্তিনীরা আব্বাসের হেড কোয়ার্টার্সে ব্রিটিশ সিংহাসনের দ্বিতীয় উত্তরাধিকারী উইলিয়ামকে লাল গালিচা সংবর্ধনাসহ গার্ড অব অনার দিয়ে সম্মান জানায়।
এ দিকে মঙ্গলবার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাত করেন উইলিয়াম। সে সময় নেতানিয়াহু ইসরাইলের অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনীদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টি প্রত্যাখান করেন এবং সেখানে ইহুদী বসতির পক্ষে তার সমর্থন পুনরায় ব্যক্ত করেন। এই পশ্চিম তীরেই আব্বাস কর্তৃপক্ষের ঘাঁটি রয়েছে।
তবে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র অফিসের তরফ থেকে প্রিন্সের বক্তব্যের বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য না করে বলা হয়, ‘ব্রিটিশ সরকার সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও টেকসই ফিলিস্তিনী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাকে সমর্থন করে, যেখানে শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে তারা ইসরাইলের পাশাপাশি বসবাস করতে পারবে।’ এতে আরও বলা হয়, ‘যুক্তরাজ্য এক সময় ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে।’
পরে রামাল্লায় শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে যান প্রিন্স এবং ফিলিস্তিনের একটি ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক নৃত্যানুষ্ঠানে অংশ নেন। এ সময় ফিলিস্তিনের সশস্ত্র নিরাপত্তা সদস্যদের বেশ কিছু ভবনের ওপরে ও নিচে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। শরণার্থী এ শিবিরটিতে ৯ হাজারেরও বেশি মানুষ গাদা-গাদি করে বাস করছে।
ফিলিস্তিনী শিশুদের সঙ্গে ফুটবল খেলায় অংশ নেয়ার আগে প্রিন্স কফি ও সেখানকার ঐতিহ্যবহী খাবার খান। জিন্স প্যান্টের সঙ্গে নীল শার্ট ও উজ্জ্বল রঙ্গের জ্যাকেট পরিহিত প্রিন্স এ সময় ৪ বার গোল পোস্টে বল কিক করেন। তবে শিশু গোলকিপার ৩ বার বল ঠেকাতে সক্ষম হলেও চতুর্থবার পারেনি।
রামাল্লার মেয়র মুসা হাদেল জানান, তিনি প্রিন্সকে ফিলিস্তিনীদের ইতিহাস জানাতে সহায়তা করতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের বার্তা ছিল- ফিলিস্তিনীদের বেঁচে থাকার জন্য আমাদের দেশে শান্তি দরকার।’ ফিলিস্তিনীদের উদ্দেশে প্রিন্স বলেন, ‘আপনাদের মতো আমিও চাই, এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা