১৭ মে ২০২৪, ০৩ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫
`


মহানবী সা:-কে নিয়ে জবি শিক্ষার্থীর কটূক্তি বহিষ্কারের দাবি

-

 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের শিক্ষার্থী কাওয়িং কেইনের বিরুদ্ধে মহানবী হজরত মুহাম্মদ সা:-কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টের কমেন্টে তিনি মুহাম্মদ সা:-কে নিয়ে কটূক্তি করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তার এ মন্তব্যের স্ক্রিনশট ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ও অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
জানা যায়, বুদ্ধিস্ট প্রোভার্ড (ইঁফফযরংঃ চৎড়াবৎফ) নামক ফেসবুক পেজের একটি ভিডিও নিজের প্রোফাইলে শেয়ার দেন মার্কেটিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এডিশন দেওয়ান। শেয়ারকৃত ওই ভিডিও পোস্টের কমেন্টে কাওয়িং কেইন মুহাম্মদ (সা:)-কে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। এরপর ওই মন্তব্যে হা হা রিয়েক্ট ও স্টিকার কমেন্ট করেন মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী এডিশন দেওয়ান। এছাড়াও তাদের উভয়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় আরো বেশ কিছু ফেসবুক পোস্টে ধর্মীয় কটূক্তি ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগ রয়েছে।
ফেসবুকে ইঁফফযরংঃ চৎড়াবৎফ নামক সেই পেইজে শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা যায়, বৌদ্ধ ধর্মগুরু গৌতম বুদ্ধের জীবনী সম্পর্কে একজন ইসলামী বক্তার আলোচনা শেয়ার করা হয়। ওই বক্তা বৌদ্ধ ধর্মের ঐতিহাসিক উৎপত্তি ও গৌতম বুদ্ধের অবদান ব্যাখ্যা করেন। ভিডিওটির কোন অংশেই গৌতম বুদ্ধকে নিয়ে কোনো বিরূপ বক্তব্য লক্ষ্য করা যায়নি। সেই পোস্টে ইসলামের নবী হজরত মোহাম্মদ (সা:)-কে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন জবি শিক্ষার্থী কাওয়িং কেইন।

এদিকে ফেসবুকে সমালোচনা শুরুর পর কাওয়িং কেইন তার সেই বিতর্কিত মন্তব্য মুছে ফেলেন। অন্যদিকে কিছুক্ষণ পর এডিশন দেওয়ানও তার পোস্ট মুছে ফেলেন।
এ বিষয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ইব্রাহীম খলীল বলেন, ওই দুই শিক্ষার্থী শুধু এবার নয়, তারা নিয়মিত ইসলাম নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছে। আবার সমস্যায় পড়লে বা আলোচনায় আসলে তারা নামমাত্র ক্ষমা চায়। আমরা তাদের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। যথাযথ শাস্তির আওতায় আনতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি। মার্কেটিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সালেম হোসেন সিয়াম বলেন, হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলমানদের কলিজার টুকরা, হৃদয়ের স্পন্দন। তাঁকে নিয়ে কেউ কোনো কটুবাক্য উচ্চারণ করায় মুসলমানদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। এত বড় অন্যায় করায় প্রশাসনের কাছে জড়িতদের বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি। ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মাবরুর বলেন, ধর্মকে বা ধর্মের মহান পুরুষকে নিয়ে কিছু বলবে আর আমরা চুপ করে থাকব এটা কখনোই হবে না। উনি ক্ষমা চেয়ে পোস্টে যেই কারণ দেখিয়েছেন তা নিতান্তই অযৌক্তিক ও লেইম লজিক। আমাদের দাবি হলো তাকে বহিষ্কার করা হোক।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত কাওয়িং কেইন বলেন, হুজুর আমাদের গৌতম বুদ্ধকে নিয়ে কথা বলেছে। মার্কেটিং বিভাগের এক ফ্রেন্ড ভিডিওটি শেয়ার দিয়েছে। আমি ওই পোস্টের কমেন্ট বক্সে হুজুরকে উদ্দেশ্য করে গালি দিয়েছি; ধর্মকে লক্ষ্য করে নয়। ধর্মকে নিয়ে গালি দেয়া আমার উদ্দেশ্য ছিল না। ‘মোহাম্মদ’ ইসলাম ধর্মের নবী বা কিছু; এ ব্যাপারে আমি জানতাম না। আমি সেই হুজুরের নামও জানতাম না।
হুজুরের নাম না জানা সত্ত্বেও ‘মোহাম্মদ’ শব্দ উল্লেখ করে এমন কটূক্তির কারণ জানতে চাইলে কেইন বলেন, আমি দেখেছি মুসলমানদের নামের প্রথমে মোহাম্মদ থাকে। তাই হুজুরের নামের প্রথমে ‘মোহাম্মদ’ থাকতে পারে বলে ‘মোহাম্মদ’ লিখেছি।
অপর অভিযুক্ত এডিশন দেওয়ান বলেন, আমি হুজুরের নাম জানতে চেয়ে পোস্টটি শেয়ার দিয়েছি। কেইনের কমেন্টে খারাপ লাগছে। খারাপ লাগা থেকে আমি হা হা রিয়েক্ট ও স্টিকার কমেন্ট করেছি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমি সংশ্লিষ্ট বিভাগের চেয়ারম্যানের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি। আমার কাছে এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবো। এটি খুব নিম্নমানের মন্তব্য। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এই ধরনের মন্তব্য আশা করি না।


আরো সংবাদ



premium cement