২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এক সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি ফিরেছে ২ হাজার কোটি টাকা

জেড গ্রুপের শেয়ারের দাপট
-


টানা দরপতন থেকে বেরিয়ে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফেরার ইঙ্গিত দিচ্ছে দেশের শেয়ারবাজার। এ পরিস্থিতিতে শেয়ারবাজারে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখাচ্ছে পচা বা ‘জেড’ গ্রুপের কোম্পানি। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে দাম বাড়ার শীর্ষ ১০টি স্থানের মধ্যে চারটিই দখল করেছে ‘জেড’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান। দাম বাড়ার শীর্ষ দশে ভালো বা ‘এ’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান আছে তিনটি।
গত সপ্তাহজুড়ে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের কাছে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চাহিদার শীর্ষে ছিল নতুন তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানি ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স। গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসেই কোম্পানিটির শেয়ার দাম দিনের সর্বোচ্চ পরিমাণ বেড়েছে। এতে একসপ্তাহেই শেয়ার দাম বেড়েছে ৫৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে ১০ টাকা ৫০ পয়সা।
দাম বাড়ার তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ন্যাশনালটি। এক সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ৫২ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে ১৪২ টাকা ২০ পয়সা। পরের স্থানে থাকা রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দাম বেড়েছে ৩৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ।

এর পরের চারটি স্থানই রয়েছে ‘জেড’ গ্রুপের দখলে। ‘জেড’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সব থেকে বেশি দাম বেড়েছে জুট স্পিনার্সের। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ৩২ দশমিক ৬৭ শতাংশ। টাকার অঙ্কে বেড়েছে ১০৯ টাকা ৮০ পয়সা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ৪৪৫ টাকা ৯০ পয়সা, যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৩৩৬ টাকা ১০ পয়সা।
শেয়ারের এমন দাম বাড়লেও ১৯৮৪ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির লভ্যাংশের ইতিহাস ভালো না। কোম্পানিটি সর্বশেষ কবে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিয়েছে সে সংক্রান্ত কোনো তথ্য ডিএসইর ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়নি। বছরের পর বছর শেয়ারহোল্ডারদের আর কোনো লভ্যাংশ না দেয়ার কারণে কোম্পানিটির বর্তমান স্থান ‘জেড’ গ্রুপে।

এদিকে ডিএসইর মাধ্যমে কোম্পানিটি সর্বশেষ চলতি হিসাব বছরের ৯ মাসের (২০২২ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত) আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এ প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, চলমান হিসাব বছরের ৯ মাসের ব্যবসায় শেয়ার প্রতি ৩৫ টাকা ৪ পয়সা লোকসান হয়েছে। আগের বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয় ৩২ টাকা ৫০ পয়সা। এর পরের স্থানে রয়েছে মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ। সপ্তাহজুড়ে এ কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৩০ দশমিক ১৮ শতাংশ। এ কোম্পানিটিও কবে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিয়েছে তার তথ্য পাওয়া যায়নি। লোকসানের ভারে বছরের পর বছর লভ্যাংশ না দেয়ায় এ কোম্পানিটি বর্তমানে জেড গ্রুপে রয়েছে। সর্বশেষ প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসের ব্যবসায় শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১৯ পয়সা।

লোকসানে পতিত হয়ে বছরের পর বছর বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেয়া আর এক প্রতিষ্ঠান ইমাম বাটন। এ কোম্পানিটিও গত সপ্তাহে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে। সপ্তাহজুড়ে এ কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ২৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিতে না পারা আর এক প্রতিষ্ঠান এমারেল্ড অয়েলের শেয়ার দাম গত সপ্তাজুড়ে বেড়েছে ২৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
পচা বা জেড গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলোর দাম বাড়ার সপ্তাহে ডিএসই দাম বাড়ার শীর্ষ দশে স্থান করে নেয়া বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে লিগাসি ফুটওয়্যারের ২৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ, নর্দান জুটের ২৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ এবং নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালসের ২১ দশমিক ৮৬ শতাংশ দাম বেড়েছে।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement