২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিদ্যুতের ৪০ ভাগ সিস্টেম সম্প্রসারণে পাঁচ বছর

সাড়ে চার বছরের প্রকল্প এখন আট বছরে; বর্ষা ও করোনায় ব্যাঘাত-পিজিসিবি
- ছবি - সংগৃহীত

অনুমোদনের পর বেশির ভাগ প্রকল্প গতিহীনতায় আক্রান্ত। বিদ্যুতের পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি বাংলাদেশের (পিজিসিবি) ট্রান্সমিশন সিস্টেম সম্প্রসারণ ও উন্নত করার সাড়ে ৪ বছরের কার্যক্রম পাঁচ বছর ২ মাসে অগ্রগতি মাত্র ৩৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। প্রকল্পটি হলো, গ্রিড ভিত্তিক বিদ্যুৎ সরবরাহে দক্ষতা উন্নয়ন। বিদেশী ঋণের এই প্রকল্পটি গতিহীনতার কারণে বাস্তবায়ন এখন ৮ বছরে ঠেকেছে। বাড়তি সময়েও এই প্রকল্পটি সমাপ্ত করা সম্ভব হবে কি না সেটি নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছে খোদ পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগ। প্রকল্প পরিচালক বলছেন, বর্ষা ও করোনায় মালামাল দেরিতে আসার কারণে কাজে ব্যাঘাত ঘটে।

পরিকল্পনা কমিশনের কাছে বিদ্যুৎ বিভাগের পাঠানো সংশোধিত ডিপিপির তথ্য থেকে জানা গেছে, পিজিসিবির ২৩০ কেভি এবং ১৩২ কেভি পাওয়ার ট্রান্সমিশন সিস্টেম সম্প্রসারণ ও উন্নত করার মাধ্যমে বাংলাদেশের বৈদ্যুতিক শক্তি সরবরাহের নির্ভরযোগ্যতা এবং দক্ষতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে কোরিয়ান ঋণে ২০১৭ সালে ২ হাজার ৯৮২ কোটি ৩৮ লাখ টাকা খরচে সাড়ে ৪ বছরে বাস্তবায়নের জন্য একটি প্রকল্প একনেক থেকে ২০১৬ সালের নভেম্বরে অনুমোদন দেয়া হয়। ২০২১ সালের জুনে প্রকল্পটি সমাপ্ত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও আজো সেই প্রকল্পটি চলছে। সময় বাড়িয়ে দেয়া হলেও প্রকল্পের কাজে অগ্রগতি ৫ বছর ২ মাসে ৩৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আর অর্থ ব্যয় হয়েছে ৫৭৪ কোটি ৪ লাখ টাকা, যা বরাদ্দের সোয়া ১৯ শতাংশ। ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হলেও অগ্রগতি সন্তোষজনক নয় বিধায় আবার আড়াই বছর সময় বাড়ানোর প্রস্তাব কমিশনের কাছে প্রেরণ করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

প্রকল্প কাজের মধ্যে রয়েছে, ২৩০ কেভি ৮২.৬৪৭ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণ, ১৩২ কেভি ১২২.৫১৭ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণ, ৪৫.৪৬৫ সার্কিট কিলোমিটার বিদ্যমান ১৩২ কেভি সঞ্চালন লাইন সংস্কার ১২টি সাব স্টেশন নির্মাণ, ৫টি সাব-স্টেশনের সংস্কার এবং বিদ্যমান ২৩০ কেভি এবং ১৩২ কেভি সাবস্টেশনের ১৫টি বে-সম্প্রসারণ। পর্যালোচনায় দেখা যায়, মূল প্রস্তাবনায় উপজেলা বা সিটি করপোরেশন মিলে প্রকল্প এলাকার সংখ্যা ছিল ২৬টি। এখন সেটা কমিয়ে করা হয়েছে ২২টি।

পিজিসিবি বলছে, তাদের গ্রিড সিস্টেমের সমসাময়িক ও ভবিষ্যৎ চাহিদার কথা বিবেচনায় প্রকল্পটি মূল অনুমোদিত ডিপিপির কর্মপরিধি ২০১৬ সালে নির্ধারণ করা হয়। বর্তমানে অতিদ্রুত বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানের ওভার লোড সমস্যার কারণে বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় প্রকল্পের কর্মপরিধি পরিবর্তন করা হয়। আর এ কারণেই প্রকল্পটি আবার পরিবর্তন করা হয়েছে। এখন মুদ্রা বিনিময় হার পরিবর্তন, ডিপিপিতে ক্ষতিপূরণ অঙ্গটির অন্তর্ভুক্তি, আমদানিকৃত মালামালের উপর আরোপিত সিডি-ভ্যাট হারের পরিবর্তন, আইডিসি ও প্রকল্পের পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রকৃত ব্যয় ও চুক্তি অনুসারে বিবিধ কর ও পরামর্শক ব্যয়সহ বেশ কিছু খাতে ব্যয় হ্রাসও পেয়েছে। যার কারণে প্রকল্প খরচ ৩৫ কোটি ৩১ লাখ টাকা কমেছে।

প্রকল্প পরিচালক ও প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শহীদ হোসেনের সাথে গতকাল বুধবার রাতে তার মুঠোফোনে প্রকল্পের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, করোনার কারণে বিদেশ থেকে মালামাল আসেনি। ওসব না আসার কারণে অল্প কিছু কাজ বাকি আছে। ওসব মালামাল আসার পর কমিশনিং চালু করতে হবে। তিনি বলেন, সঞ্চালন লাইনেরও মালামাল আসতে দেরি হয়েছে। এ ছাড়া বর্ষাতে আমরা তো লাইন নির্মাণ বা সংস্কারের কাজ করতে পারি না। বর্ষা গেলে অক্টোবর-নভেম্বরের পর কাজ শুরু হয়। আর ছয় মাস কাজ করা যায়।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল