২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
অধিদফতরের মাঠপর্যায়ে অফিস নির্মাণ

ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম আমিরাত ভ্রমণ ৩০ জনের

সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ছাড়াই ১৯৫ কোটি টাকার প্রকল্প; অফিস ভাড়া বাবদ বছরে ব্যয় প্রায় ২ কোটি টাকা; মাথাপিছু বিদেশ ভ্রমণ ব্যয় ৩.৩৩ লাখ টাকা
-

মাঠ পর্যায়ে সব জেলার সব উপজেলায় নিজস্ব অফিস না থাকার কারণে মহিলাবিষয়ক অধিদফতরের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। জেলা অফিসগুলো ভাড়া বাড়িতে পরিচালনা করছে। ফলে বছরে ভাড়া বাবদ খরচ হচ্ছে এক কোটি ৯০ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। আর এই অফিস ভবণ নির্মাণ প্রকল্পের জন্য এক্সপোজার ভিজিট নামে ৩০ জনের বিদেশ ভ্রমণের প্রস্তাব করা হয়েছে। ইন্দোনেশিয়া, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে তিনটি এক্সপোজার ভিজিট করবে। অন্য দিকে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ছাড়াই ১৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। পরিত্যক্ত বাড়িতে এই অধিদফতরের মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। পরিকল্পনা কমিশন, এই বিদেশ ট্যুর, অর্থ বিভাগের সুপারিশ ছাড়াই বাড়তি যানবাহন কেনা ও অহেতুক কিছু খাতে খরচ প্রাক্কলনের আপত্তি জানিয়েছে।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনা থেকে জানা গেছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ হলো নারী ও শিশু। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় মোট জনসংখ্যার বৃহত্তর অংশের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। জেলাপর্যায়ে অনগ্রসর স্বল্পশিক্ষিত নারীদের আবাসন সুবিধাসহ কর্মোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হতে সহায়তা করা এবং তাদের শিশুদের দিবাকালীন নিরাপদ অবস্থানের সুবিধাসহ আবাসন সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যকে সামনে রেখে জেলা পর্যায়ে মহিলাবিষয়ক অধিদফতরের কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের প্রকল্প নেয়া হয়েছে। ১৯৫ কোটি এক লাখ ২৭ হাজার টাকা খরচের এই প্রকল্প তিন বছরে সম্পন্ন করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে নড়াইল পৌরসভা, দিনাজপুর পৌরসভা, ঠাকুরগাঁও পৌরসভা, মানিকগঞ্জ পৌরসভা, কুষ্টিয়া পৌরসভা, ফেনী ও সিরাজগঞ্জ পৌরসভা এলাকায় এই প্রকল্পটির অধীনে কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে।
প্রকল্পের আওতায় কাজগুলো ছয়তলা ফাউন্ডেশনের উপর ছয়তলা আধুনিক এবং নারী ও শিশুবান্ধব সাতটি কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করা। সাতটি মোটরযান কেনা, ২০৩টি অফিস সরঞ্জমাদি কেনা, তিন হাজার ১৫৫টি আসবাবপত্র কেনা, ৮৭ শতাংশ ভূমি অধিগ্রহণ, সেমিনার, অডিও ভিডিও নির্মাণ, প্রকাশনা, অফিস ভবন ভাড়া, এক্সপোজার ভিজিট, আপ্যায়ন ও অন্যান্য।
অধিদফতরের গবেষণা কর্মকর্তা ফারহানা আখতারের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সারা দেশে সব জেলার ৪৩০টি উপজেলায় রাজস্ব এবং উন্নয়ন বাজেটের আওতায় মহিলা বিষয়ক অধিদফতর নারীদের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু কোথাও মহিলাবিষয়ক অধিদফতরের নিজস্ব অফিস বা ভবন নেই। এসব ভবনে কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল এবং বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হয় না। এমনকি ডে-কেয়ার সেন্টারগুলোও ভাড়া বাড়িতে পরিচালিত হয়। আইনি সহায়তা কেন্দ্রের জন্য আলাদা কোনো কক্ষ পাওয়া যায়নি।
প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা গেছে, জ্ঞান বিনিময় ও অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য ইন্দোনেশিয়া, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম ও সংযুক্ত আবর আমিরাতে তিনটি এক্সপোজার ভিজিট করা হবে। প্রতি বছর একটি করে তিনটি ভিজিট করতে খরচ হবে এক কোটি টাকা। প্রতিটি টিমে ১০ থেকে ১২ জন করে সদস্য থাকবে। আর টিমে থাকবে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা শাখা, অধিদফতরের পরিকল্পনা শাখা, প্রোগ্রামিং বিভাগের স্কাই সোয়াম উইং, আইএমইডি এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
১৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু পরিকল্পনা কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হয়নি। ৫০ কোটি টাকার বেশি খরচের কোনো প্রকল্প হলে তার জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা বাধ্যতামূলক। এই প্রকল্পের জন্য মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের কর্মকর্তাদের দ্বারা গঠিত কমিটির মাধ্যমে সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ভবন নির্মাণ করা হবে। কিন্তু ২০ লাখ টাকা খরচে অডিও বা ভিডিও নির্মাণ, ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকাশনা, ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে সভা বা সেমিনার, ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে উৎসবাদি নির্মাণকাজ বহির্ভূত ব্যয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কমপ্লেক্সের প্রথম তলাতে গাড়ি পার্কিং, চালকদের ওয়েটিং রুম, গার্ড ও পাম্প অপারেটর রুম, অভ্যর্থনা কক্ষ, ওয়েটিং রুম, ২৫০ আসনবিশিষ্ট মাল্টিপারপাস হল রুম, এটিএম বুথ, জেনারেটর রুম, তথ্যকেন্দ্র, কিচেন রুমসহ ক্যাফেটেরিয়ার সংস্থান থাকবে। দ্বিতীয় তলাতে প্লে-গ্রাউন্ডসহ ৫০ শিশুর সুবিধা সংবলিত আধুনিক ডে-কেয়ার সেন্টার। তৃতীয় তলায়, লাইব্রেরি, ডকুমেন্টশন সেন্টার, স্টাফ রুম, উপপরিচালকের অফিস, প্রোগ্রাম অফিসারের অফিস। পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলাতে মহিলাদের হোস্টেল, হোস্টেল সুপার ও সহকারী সুপার এবং মেট্রনের আবাসন ব্যবস্থা।
পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগ বলছে, প্রকল্পের আওতায় সাতটি গাড়ি কেনার প্রস্তাব করা হলেও অর্থ বিভাগ থেকে তিনজন ড্রাইভার সেবাক্রয়ের সুপারিশ করা হয়েছে। ফলে প্রকল্পের আওতায় তিনটির বেশি গাড়ি কেনার সুযোগ নেই। গাড়ি ভাড়া খাতে দুই কোটি ৫২ লাখ টাকা প্রাক্কলন করা হয়েছে, তা যৌক্তিক নয়। অর্থ বিভাগের পক্ষ থেকে গাড়ি ক্রয়ের কোনো অনুমোদন না থাকায় দুই কোটি ৮০ লাখ টাকা খরচে মোটরযান কেনার প্রস্তাব বাদ দিতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
‘ফ্রি ভিসার গল্প’ আর শূন্য হাতে ফেরা লাখো শ্রমিক নোয়াখালীতে প্রবাসীর স্ত্রীর ব্যক্তিগত ছবি দেখিয়ে চাঁদা আদায় দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল দেখে না : কাদের আশুলিয়ায় বাঁশবাগান থেকে নারী পোশাক শ্রমিকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার মিয়ানমারের কর্মকর্তারা ফেরত গেলেন, কিন্তু রোহিঙ্গা সঙ্কট কি আরো জটিল হচ্ছে দিনাজপুরে দুই ট্রাকের সংঘর্ষ, চালক-হেলপার নিহত মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ সখীপুরে বৃষ্টির জন্য অঝোরে কাঁদলেন মুসল্লিরা দক্ষিণ ভারতে কেন কাজ করেনি বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের নতুন আংশিক কমিটি বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসায় বিনিয়োগ সম্ভাবনা অন্বেষণে থাইল্যান্ডের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

সকল