২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
প্রথমবারের মতো ইজারা

মহাখালী ও গাবতলী বাস টার্মিনালে ১২ বছরে ডিএনসিসির ক্ষতি ১৫০ কোটি টাকা

-

রাজধানীর মহাখালী ও গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে থেকে নিয়মিত রাজস্ব না পাওয়ায় গত ১২ বছরে ১৫০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি)। নামমাত্র মূল্যে আদায় সহযোগিতাকারী নিয়োগ দিলেও টার্মিনাল দু’টি থেকে ডিএনসিসির এখনো পাওনা রয়েছে প্রায় চার কোটি টাকা। কিন্তু এটি পরিশোধ না করে দীর্ঘ দিন ধরে অবৈধভাবে দখল করে রাখায় টার্মিনাল দু’টি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে ডিএনসিসি। গতকাল এ দু’টি টার্মিনাল বার্ষিক ১২ কোটি টাকায় ইজারা দিয়েছে সংস্থাটি।
ডিএনসিসি সূত্রে জানা যায়, অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের আমলে ২০০৯ সালের ১০ মে নামমাত্র মূল্যে টার্মিনাল দু’টি থেকে রাজস্ব আদায়ের জন্য আদায় সহযোগিতাকারী নিয়োগ দেয়া হয়। দীর্ঘ এক যুগেও এ আদায়ের জন্য নির্ধারিত টাকার পরিমাণ বাড়ানো হয়নি। এ ছাড়া আদায় সহযোগিতাকারীরা নানা অজুহাত দেখিয়ে গত বছরের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত প্রায় চার কোটি টাকা ডিএনসিসিকে জমা দেয়নি। বরং টার্মিনাল দু’টি দখল করে রেখে অবৈধভাবে টাকা নিজেদের পকেটে ভরতে থাকে তারা। এ অনিয়ম দূর করার জন্য ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম টার্মিনালগুলো উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ইজারা দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। শুরুতে নানা বাধাবিপত্তি, হুমকি থাকলেও ডিএনসিসি মেয়রের নির্দেশে ইজারার কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। গাবতলী ও মহাখালী বাস টার্মিনাল এক বছরের জন্য সর্বমোট ১২ কোটি এক লাখ ২০ হাজার টাকায় ইজারা দেয়া হয়েছে। গাবতলী টার্মিনাল ১২ জানুয়ারি ২০২১ থেকে ১১ জানুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত এক বছরের জন্য লালমাটিয়ার রাফি ট্রেডার্স লিমিটেডকে বার্ষিক সাত কোটি ৩৯ লাখ ২০ হাজার টাকায় ইজারা দেয়া হয়। একইভাবে মহাখালী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের রাজস্ব আদায়ের জন্য ইব্রাহিমপুরের গাজী রাইয়ান এন্টারপ্রাইজকে ২৬ জানুয়ারি ২০২১ থেকে ২৫ জানুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত এক বছরের জন্য চার কোটি ৬২ লাখ টাকায় ইজারা দেয়া হয়।
গতকাল মঙ্গলবার গুলশানে ডিএনসিসির নগর ভবনে মেয়র আতিকুল ইসলামের কাছে ইজারাদাররা চেক হস্তান্তর করেন। এ সময় মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, মহাখালী ও গাবতলী বাস টার্মিনাল দু’টি থেকে সেভাবে কোনো রাজস্ব আদায় করা যায়নি। আমি এসে দেখেছি এখানে অনেক আগে থেকেই গলদ ছিল। একজনকে আদায়কারীকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। সেখানে একটা ক্লজ ছিলÑ হরতাল বা বিভিন্ন কারণে যখন পরিবহন বন্ধ থাকবে, তখন ডিএনসিসিকে কোনো টাকা দিতে হবে না। এ সিদ্ধান্তগুলো ভুল ছিল। তারা তাদের পাওনা টাকা তো দেয়ই নি, বরং সিটি করপোরেশনের কাছে টাকা দাবি করেছে। একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীকে সুবিধা দেয়ার জন্য এ ধরনের অসম চুক্তি করা হয়েছিল। আমি বলেছি এ ধরনের অসম চুক্তি আমরা মেনে নিতে পারি না। এর ফলে সিটি করপোরেশন রাজস্ব হারাচ্ছে। তাই আমরা উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ইজারা দিয়েছি। আমরা যখন ইজারা দিতে গেলাম, আমাদের কর্মকর্তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়া হয়েছিল। আমি বলেছি কারো কথা শোনার দরকার নেই। নিয়ম অনুযায়ী দরপত্রের মাধ্যমে ইজারা দেয়া হবে। আতিকুল ইসলাম আরো বলেন, গত ১২ বছরে কমপক্ষে ১৫০ কোটি টাকা আদায় করা যেত। এখন ইজারাদারদেরকে বাস টার্মিনালগুলোতে সুন্দর পরিবেশ বজায় রাখার জন্য শর্ত দেয়া হয়েছে। অন্যথায় ইজারা বাতিল হবে। আগের বিশৃঙ্খল পরিবেশ বজায় রাখা যাবে না।


আরো সংবাদ



premium cement