২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

৫৪ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে সৌদি সরকারের তাগাদা

সব বাংলাদেশী বহিষ্কারের হুমকি
-

৫৪ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত আনতে বাংলাদেশকে তাগাদা দিচ্ছে সৌদি আরব। এ সব রোহিঙ্গাকে ফেরত না নিলে সৌদিতে কর্মরত সব বাংলাদেশীকে বহিষ্কার করা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশটি। বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আবদুল মোমেন এসব কথা জানান। সৌদি আরবে বর্তমানে প্রায় ২০ লাখ বাংলাদেশী কর্মরত রয়েছে। বাংলাদেশের সাথে প্রায় প্রতিটি যোগাযোগের ক্ষেত্রেই সৌদি আরব রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার ইস্যুটি তুলছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারীর কারণে সৌদিতে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। অনেকের চাকরি চলে গেছে। বিষয়টি নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে। তিনি বলেন, গত শতাব্দীর ৮০ ও ৯০ এর দশকে সৌদি বাদশাহ সহানুভূতিশীল হয়ে অনেক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। এ সময় রোহিঙ্গারা মিয়ানমার থেকে সরাসরি অথবা বাংলাদেশ হয়ে সৌদি আরব গেছেন। এসব রোহিঙ্গা পরিবার নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে সৌদি আরবে বসবাস করছেন। সন্তানসহ তাদের সংখ্যা এখন প্রায় ৫৪ হাজার। তাদের সন্তানরা আরব সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠেছে। কথা বলে আরবিতে। এখন সৌদি সরকার তাদের পাসপোর্ট বা ট্রাভেল পারমিট দেয়ার জন্য বাংলাদেশকে অনুরোধ জানিয়েছে।
ড. মোমেন বলেন, সৌদিতে বসবাসকারী এসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশ থেকে গিয়ে থাকলে এবং তাদের কাছে কখনো বাংলাদেশী পাসপোর্ট থাকলে আমরা বিবেচনা করব। কিন্তু কখনো বাংলাদেশী পাসপোর্ট নিয়ে না থাকলে তাদের বিবেচনা করা সম্ভব হবে না। বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখার জন্য পররাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করে দেয়া হয়েছে। এতে স্বরাষ্ট্র সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা রয়েছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সৌদি আরব বলছে, তারা রাষ্ট্রহীন কোনো নাগরিককে তাদের দেশে চায় না। এটা নিয়ে সৌদি সরকার বারবার বাংলাদেশকে তাগাদা দিচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। সৌদি সরকারকে কিছু বলতে গেলেই এই প্রশ্নটা তারা তোলে। তবে ৫৪ হাজার রোহিঙ্গার কোনো তালিকা সৌদি সরকার দেয়নি। ড. মোমেন বলেন,সৌদি আরবের বিভিন্ন কারাগারে আটক ৪৬২ জনের একটি তালিকা বাংলাদেশকে দেয়া হয়েছে। এ তালিকা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। বাংলাদেশী নাগরিক হলে অবশ্যই তাদের ফেরত আনা হবে।
ভিসা থাকা সত্ত্বেও সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) বিমান বন্দর থেকে ১১২ জন বাংলাদেশীকে ফেরত পাঠানো প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন. কফিলের (নিয়োগদাতা) কাছ থেকে পূর্বানুমতি নেয়ার একটি বিধান ইউএই হঠাৎ করেই চালু করেছে। অনেকের কাছে এই অনুমতি না থাকায় বাধ্য হয়ে ফিরে এসেছেন। তাদের প্রতি বাংলাদেশ সরকার সংবেদনশীল। এসব প্রবাসীর সমস্যা কিভাবে সমাধান করা যায়, তা নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement