২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩০, ২০ মহররম ১৪৪৬
`

শিশুর পেটে ব্যথা ও করণীয়

-

শিশুদের বারবার পেটে ব্যথা নিয়ে মায়েরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন থাকেন। শুধু তাই নয়, সমস্যা কোনো কোনো ক্ষেত্রে এত জটিল ও অস্পষ্ট থাকে যে, নাড়ি প্যাঁচ খেয়ে যাওয়া, এপেনডিসাইটিস, নাড়ির মধ্যে নাড়ি ঢুকে যাওয়া এসব সার্জিক্যাল সমস্যা থেকে আলাদা করা সম্ভব হয় না।
নিজের সন্তানকে ছুরি-কাঁচির নিচে ঠেলে দেয়া একজন বাবা-মায়ের কাছে কতটা কষ্টের তা ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন। বারবার পেটে ব্যথা হলেই যে অপারেশনের দরকার হবে তা কিন্তু নয়।
রোগের লক্ষণ : এ ধরনের শিশুদের স্বল্প সময়ের জন্য বারবার এবং অত্যন্ত তীব্র পেটে ব্যথা হয়। অল্প কিছু সময় পর বাচ্চা স্বাভাবিক হয়ে যায়। তবে আক্রান্ত সময়ে শিশুর খেলাধুলা এবং স্কুলের পড়াশোনা বন্ধ করে দেয়। পড়াশোনার চাপ বা পারিবারিক সমস্যার কারণে শিশুর মননে যে বাড়তি চাপ পড়ে সে কারণেও বারবার পেটে ব্যথা হতে পারে।
কারণ : অন্যান্য কারণের মধ্যে কোষ্ঠকাঠিন্য, মেয়েলি রোগ, মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ, মূত্রনালিতে সংক্রমণ, বয়ঃসন্ধিকালের সমস্যা অন্যতম। বাবা-মায়েরা দারুণ উদ্বিগ্ন হয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। তাদের বাচ্চার ক্যান্সার, এপেনডিসাইটিস অথবা পেটের নাড়িতে প্যাঁচ লেগে গেল কি-না সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে চান চিকিৎসকের কাছে। এ অসহায় উদ্বিগ্ন অভিভাবককে আশ^স্ত করা এবং ব্যথার সম্ভাব্য কারণগুলোকে পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করা চিকিৎসককে এ ব্যাপারগুলো গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে।
এ অবস্থায় যা করণীয় : রোগীর ইতিহাস নিতে গিয়ে ব্যথার ধরন এবং বৈশিষ্ট্যগুলোই বলে দেবে ব্যথার মূল পটভূমি কী? সাধারণত বারবার পেটে ব্যথা নাভির চারদিকে হয়; কিন্তু যে পেটে ব্যথার কারণে অপারেশনের প্রয়োজন হয় তা পেটের যেকোনো একটি জায়গায় সীমাবদ্ধ থাকে। বারবার পেটে ব্যথার সময় বাচ্চারা অস্থিরতা অনুভব করলেও সার্জিক্যাল ব্যথা প্রায়ই তীব্র এবং অবিরাম প্রকৃতির হয়ে থাকে, যা বাচ্চাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে দেয় অথবা বাচ্চারা ব্যথার সাথে বমি করতে থাকে।
রেট্রোসিকাল এপেনডিসাইটিসের ক্ষেত্রে এপেনডিক্সের অবস্থান পেছনের দিকে হওয়ায় অনেক সময় ব্যথা শুধু পেটের ডান কোণে নাও থাকতে পারে। ব্যথার ওষুধ সেবন আলসারজনিত ক্ষত পেটের টিবি রোগ- এসব কারণে পেট ফুটো হয়ে গেলে অনেক সময় পেরিটোনাইটিস হয়ে ব্যথা পুরো পেটে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ সময় পেট বোডের মতো শক্ত আকার ধারণ করতে পারে।
এ জন্য শিশুদের তীব্র পেটে ব্যথা দেখা দিলে পেডিয়াট্রিক সার্জনদের প্রয়োজনে দাঁড়ানো অবস্থায় পেটের এক্স-রে আলট্রাসনোগ্রাম, রক্ত পরীক্ষা, মলদ্বার পরীক্ষা সর্বোপরি রোগের ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করে তবেই সার্জারির সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদেরও ধৈর্যের সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করা উচিত।


আরো সংবাদ



premium cement