ল্যাব থেকে করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা নেই
- হামিম উল কবির
- ১২ মার্চ ২০২০, ০৬:২৫
ল্যাবরেটরিতে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার সময় অথবা যারা এ পরীক্ষাটি করেন তাদের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা একেবারেই নেই। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এ ধরনের সন্দেহ নাকচ করে দিয়েছেন।
নয়া দিগন্তকে মীরজাদী সেব্রিনা জানিয়েছেন, ‘আইইডিসিআরের পরীক্ষাগারে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা মেনে। পারসোনাল প্রটেকশন ইক্যুইপমেন্ট বা পিপিই ব্যবহার করে পরীক্ষাগারে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডাক্তাররা এ পরীক্ষা করেন। অতএব এখান থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কোনো আশঙ্কা নেই।’
তিনি জানান, ‘অনেকটা স্পেস স্যুটের মতো একটি ড্রেস পরে পরীক্ষাগারে যান ডাক্তার। এ ড্রেসটি একবার ব্যবহার করে নষ্ট করে ফেলা হয়। ড্রেসটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সরবরাহ করে। করোনা সংক্রমিত রোগী বেশি হলে আমরা এ ড্রেসটি বাংলাদেশেই তৈরি করার চেষ্টা করব।’
এ ব্যাপারে আইইডিসিআরের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এ এস এম আলমগীর জানিয়েছেন, পরীক্ষাগার থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার কোনো আশঙ্কা নেই। আমাদের পরীক্ষাগার সম্বন্ধে ধারণা থাকলে কেউ এ ধরনের প্রশ্ন করবেন না। ড. আলমগীর বলেন, করোনা সন্দেহে কারো নমুনা পরীক্ষা করার জন্য পরীক্ষাগারে নিয়ে আসার পর আমরা প্রথমেই ভাইরাসটির ইনভেলাপ (ওপরের আবরণ বা খোসা) পৃথক করে তা থেকে আরএনএ বের করে ফেলি বিশেষ পদ্ধতিতে। ইনভেলাপ সরিয়ে ফেললে ভাইরাসটি অপরকে সংক্রমিত করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। আমরা পরীক্ষাগারে ভাইরাসটির আরএনএ পরীক্ষা করি ‘পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশান’ (পিসিআর) মেশিনে। মেশিনটিকে ডিএনএ অ্যামপ্লিফায়ার মেশিনও বলা হয়। করোনাভাইরাস রয়েছে এমন সন্দেহে কারো নমুনা পরীক্ষাগারে আনা হলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসারে আমরা পরীক্ষার যাবতীয় কাজগুলো করে থাকি। ফলে পরীক্ষাগার থেকে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কোনো আশঙ্কা নেই।
‘যে স্যুট পরে পরীক্ষাগারে প্রবেশ করা হয় তা কিভাবে এবং কোথায় ফেলা হয়’ এ প্রশ্নের জবাবে ড. আলমগীর বলেন, ‘কাজ শেষে বের হয়ে আসার পর প্রথমেই স্যুটটিকে জীবাণুমুক্ত করা (ডিজইফেক্টেড) হয়। জীবাণুমুক্ত করে ফেললে ওই স্যুট পুরোপুরি নিরাপদ হয়ে যায়। এরপর নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে দিলে মেডিক্যাল বর্জ্য সংগ্রহকারী সংস্থা প্রিজমের লোকজন নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে তা নষ্ট করে ফেলেন। তিনি বলেন, আমরা পরীক্ষাগারে ব্যবহার করার জন্য যে চশমাটি পরে যাই তা সাবান পানিতে আধা ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখি। এর পর ওই চশমাতে আর কোনো জীবাণু থাকতে পারে না। এটা আবারো ব্যবহার করা যায়। তিনি জানান, পরীক্ষাগারে আমরা প্রথমেই নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করি যাতে আনীত নমুনা থেকে জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত না হই।
এরপর জীবাণু বাইরে যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সে ব্যবস্থা নিই। কারা জীবাণু পরীক্ষা করেন এবং সবাই কি পরীক্ষাগারে যেতে পারেনÑ এমন প্রশ্নের জবাবে ড. আলমগীর বলেন, সবাই পরীক্ষাগারে প্রবেশ করতে পারেন না। যাদেরকে দায়িত্ব দেয়া হয়, তারাই সেখানে যেতে পারেন। তিনি জানান, একজন পরীক্ষাগারে প্রবেশ করে কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাইরে বের হতে পারেন না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা