১৯ মে ২০২৪, ০৫ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলকদ ১৪৪৫
`


এট্রোফিক রাইনাইটিস নাকের ক্ষয়িষ্ণু প্রদাহ

-


নাকে ক্ষয়িষ্ণু প্রদাহ হলো একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ, যার ফলে নাকের শ্লেষ্মাঝিল্লি বা মিউকাস মেমরেন সেরোমিউসিনিয়াস গ্ল্যান্ড বা ঝিল্লির গ্রন্থি, রক্তনালী এমনকি নাসারন্ধ্রের হাড় পর্যন্ত ক্রমান্বয়ে শীর্ণ হতে থাকে। দরিদ্র ঘরের বয়ঃসন্ধিকালের মেয়েদের মধ্যে এ রোগ প্রায়ই দেখা যায়। ছেলেদেরও এ রোগ হতে পারে। রোগের প্রকৃত কারণ এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে দীর্ঘমেয়াদি নাক ও সাইনাসের সংক্রমণের জন্য হতে পারে। এ ছাড়া অন্তক্ষরাগ্রন্থির বিকৃত কার্যক্রম, পুষ্টির অভাব বিশেষ করে ভিটামিন এ, ডি ও লৌহের অভাব, এ ছাড়াও গঠনগত কিছু কারণ। যেমনÑ প্রশস্ত নাসারন্ধ্র ইত্যাদি। দ্বিতীয়ত নাকের কিছু অসুখের জন্য হতে পারে যেমন যক্ষ্মা, কুষ্ঠ, সিফিলিস।

উপসর্গ
রোগী বলে থাকে সব সময় তার নাক শুষ্ক থাকে, নাক বন্ধ থাকে, মাথাব্যথা হয় এবং নাক দিয়ে রক্ত পড়ে বলে জানাতে পারে। রোগীর পাশের লোকেরা বলে থাকে, রোগীর নাক দিয়ে বিশ্রী গন্ধ বের হয়। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো রোগী এ রকম কোনো গন্ধ টের পায় না। এমনকি রোগী কোনো কিছুর গন্ধই বুঝতে পারে না। যদিও রোগী তার নাক বন্ধ থাকার কথা বলে কিন্তু বাস্তবে তার নাক বন্ধ থাকে না। বেশির ভাগ সময় নাক শুষ্ক থাকে। নাকের ভেতর চলটা বাঁধে। রোগীর মাথাব্যথা হয়; এমনকি নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে। কোনো সময় নাকের ভেতর পোকা জন্মাতে পারে।
লক্ষণ
পরীক্ষা করলে দেখা যায়, রোগীর নাক চওড়া এবং নাসারন্ধ্র প্রশস্ত। নাকের ভেতর চলটায় (ক্রাস্ট) পূর্ণ থাকে। এই চলটা হলুদ, কালো এবং সবুজ রঙয়ের হতে পারে। নাকের শ্লেম্মাঝিল্লি লালচে এবং ক্ষয়িষ্ণু দেখায়, যা নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ বুঝতে পারেন। নাকের ভেতরের হাড়ও ক্ষয়িষ্ণু এবং কুঁচকানো দেখায়। নাসারন্ধ্র স্বাভাবিকের চেয়ে প্রশস্ত থাকে এবং নাসারন্ধ্রের সামনে থেকে দেখলে পেছন পর্যন্ত দেখা যায়। চিকিৎসক রোগীর নাক থেকে তীব্র পচা গন্ধ পেয়ে থাকেন। কোনো সময় নাকের ভেতর পোকাও দেখা যেতে পারে।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা
রক্ত, এক্সরে ও অন্যান্য পরীক্ষা করে যক্ষ্মা, কুষ্ঠ, সিফিলিস ইত্যাদি নিশ্চিত হতে হবে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা করতে হবে।
জটিলতা
সময়মতো চিকিৎসা না করালে নাকের দুই দিকের মধ্যের দেয়াল ছিদ্র হয়ে যেতে পারে। নাকের অবস্থার জন্য নাকের ভেতর পোকা জন্মাতে পারে এবং সে ক্ষেত্রে ক্ষতি আরো অধিক হতে পারে।
চিকিৎসা
এ রোগের নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। সাধারণত নাকের স্বাস্থ্যের উন্নতি করার চেষ্টা করতে হবে। নাকের ভেতরে জমে থাকা নিসৃত তরল পদার্থ ও চলটা নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। নাকের ভেতর ক্ষারধর্মী তরল পদার্থের ঢুস দিতে হবে। যেমন সমপরিমাণ খাদ্যলবণ ও সোডিয়াম বাই কার্বনেট আধা লিটার হাল্কা গরম পানিতে মিশিয়ে দিনে তিন-চারবার নাকের ভেতর দিতে হিবে। এ ছাড়া নরমাল স্যালাইন দিয়ে সিরিঞ্জের সাহায্যে নাকের ভেতরটা ধুতে হবে। এভাবে করার পর রোগীকে বলতে হবে জোরে নাক ঝারতে।
এত নাকের ভেতরের চলটা বের হয়ে আসবে। তরল প্যারাফিন গজ কাপড়ে ভিজিয়ে নাকের ভেতর দিয়ে বাঁধলেও নাকের ভেতর ভেজা থাকে এবং চলটা সহজেই উঠে আসে। ২৫ শতাংশ এনহাইেড্রোস গুøকোজ ইন গ্লিসারিন নাকের ভেতর ব্যবহার করা যায়। এতে জীবাণু সংক্রমণ বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং নাকের ভেতর সহজ চলটা বাঁধতে পারে না। এসব চিকিৎসার সাথে রোগীকে প্রয়োজনীয় পরিমাণ আয়রন ট্যাবলেট এবং ভিটামিন ট্যাবলেট বিশেষ করে ভিটামিন এ, ডি দিতে হবে। বিফামপিসি এবং ভিটামিন বি ই সি দীর্ঘ দিন ব্যবহার করে অনেক ক্ষেত্রে ভালো ফল পাওয়া যায়। নাকের শ্লেষ্মা ঝিল্লিতে স্থানীয়ভাবে ইস্ট্রোয়েন ব্যবহার করে ভালো ফল পাওয়া যায়। প্লাসেন্টাল এক্সট্রাক্ট জরায়ু নির্যাস সপ্তাহে একবার করে শ্লেষ্মাঝিল্লির নিচে ইনজেকশনের মাধ্যমে সঞ্চালিত করা গেলে শ্লেষ্মাঝিল্লির পুনর্র্নির্মাণে সাহায্য হয়। এ রোগ ভালো হতে বেশ কিছু দিন সময় লাগে। এতেও ভালো না হলে নাকের কিছু অপারেশন করা হয়। যেমন সাময়িকভাবে এক বা দুই দিকের ছিদ্রই আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ করে রাখা হয় ১২-১৮ মাস।


আরো সংবাদ



premium cement
শিগগিরই মাগুরায় রেললাইন চালু হবে : রেলমন্ত্রী সংসদ ভবনের সামনে স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২ গ্রুপের সংঘর্ষে ছাত্রলীগকর্মী নিহত জুজুৎসুর সম্পাদকের যৌন নিপীড়নের তথ্য দিলো র্যা ব পানচাষীদের পরিশ্রমের ফসল জিআই স্বীকৃতি : প্রতিমন্ত্রী বগুড়ায় অবৈধ মজুদকৃত ১ লাখ ডিম উদ্ধার তথ্যের জন্য সাংবাদিকরা শতবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যেতে পারেন : ডেপুটি গভর্নর ইসরাইলি হামলায় ৪০ ফিলিস্তিনি নিহত আফগানিস্তানে গুলিতে ৩ স্প্যানিশ ও ৩ আফগান নিহত বিভিন্ন অপরাধে সাতজনের ফাঁসি কার্যকর করল ইরান কিরগিস্তানে আতঙ্কে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা ‘প্রাচীন হিব্রুদের সাথে ইসরাইলি ইহুদিদের জেনেটিক সংযোগ নেই’

সকল