২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ফর্টিস ফুটবল অ্যাকাডেমীতে করোনা আইসোলেশন সেন্টার

ফর্টিস ফুটবল অ্যাকাডেমীতে করোনা আইসোলেশন সেন্টার - সংগৃহীত

২০১৫ সালে অনূর্ধ্ব-১৬ পুরুষ সাফ ফুটবলে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার নেপথ্য ছিল সিলেট বিকেএসপিতে থেকে বাংলাদেশ দলের অনুশীলন। সেখানেই ছিল বাফুফের অ্যাকাডেমী। তবে সেই অ্যাকডেমী বেশি দিন চালু থাকেনি। আর্থিক সঙ্কটে কিছু দিন পরেই বন্ধ হয়ে যায় সেই অ্যাকাডেমী। তা সাফে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরই। এরপর বাফুফের বিপক্ষে ব্যাপক সমালোচনা, কেন তারা এই অ্যাকাডেমী অব্যহত রাখতে পারেনি, কেন তাদের পক্ষে আরেকটি অ্যাকাডেমী চালু করা সম্ভব হয়নি ইত্যাদি। এই তীব্র সমালোচনার মুখে বাংলাদেশের ফুটবলে আলোকবর্তিকা হয়ে আসে ফর্টিস গ্রুপ। মান সম্মান রক্ষা হয় বাফুফের। বাফুফের লজিস্টিক সার্পোটে গুলশানের পাশের বেরাইদে ফর্টিস গ্রুপ স্থাপন করে ফুটবল অ্যাকাডেমী। এই অ্যাকাডেমী গড়ে ফর্টিস গ্রুপ বাংলাদেশের ফুটবলে যেমন বিশাল উপকার করেছে, তেমনি করোনা মহামারীতে বিপর্যস্ত বাংলাদেশের কঠিন সময়ে দেশবাসীর পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এই ফর্টিস গ্রুপ। এই বাফুফে- ফর্টিস অ্যাকাডেমীই এখন করোনা আইসোলেশন সেন্টার। এখানেই শেষ নয়। নতুন এই অভিজ্ঞতায় ফর্টিস গ্রুপ তাদের পূর্বাচলের নিজস্ব জমিদে ভবিষ্যতে গড়বে হাসপাতাল।

ফর্টিস গ্রুপের এই অ্যাকাডেমীতে আগে থেকেই আছে গার্মেন্টস। সেখানে দেশী-বিদেশী অতিথিদের থাকার জন্য রয়েছে অত্যাধুনিক আবাসন ব্যবস্থা। আছে তিনটি কনভেনশনাল সেন্টারও। প্রয়োজনে এর সবগুলোই ব্যবহৃত হবে করোনা আইসোলেশন সেন্টার হিসেবে। ফুটবল মাঠও প্রয়োজনে ব্যবহৃত হবে চিকিৎসা কাজে। ফুটবলারদের থাকার জন্য যে ভবন রয়েছে তা করোনা আক্রান্তদের সেবায় নিয়োজিত সার্ভিস স্টাফদের আবাসনের জন্য ব্যবহৃত হবে। এছাড়া বিভিন্ন হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত ডাক্তারদের নিজ বাড়ীতে ফেরার ব্যাপারে বিধিনিষেধ আছে। এই ডাক্তাররাও ইচ্ছে করলে থাকতে পারবেন এই ফর্টিস এর আইসোলেশন সেন্টারে। করোনার কারনে বিভিন্ন হাসপাতালে অন্য সাধারন রোগীরাও চিকিৎসা পাচ্ছেন না হাসপাতালে। তাদেরও চিকিৎসার ব্যবস্থা ফর্টিস এর এই চিকিৎসালয়ে। ডাক্তাররাও রাজী এই হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে। মাঠে স্থাপিত হয়েছে তাবুও। জানান ফর্টিস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন। উল্লেখ্য বেরাইদে বিশাল এলাকা জুড়ে এই ফর্টিস গ্রুপের কার্যক্রম। দারুন এক প্রাকিৃতক পরিবেশ। আছে পুকুর এবং প্রচুর ফলের গাছ।

৬৪ জনের চিকিৎসার ব্যবস্থা এই ফর্টিস আইসোলেশন সেন্টারে। প্রথমে ফর্টিস গ্রুপের পরিকল্পনা ছিল করোনা বোগীদের জন্য আইসিইউ (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) খোলা। কিন্তু বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা মহামারীর কারনে সব খানেই তীব্র সংকট ভেন্টিলেশন মেশিনের। তাই আইসিইউ বসানোর পরিকল্পনা বাদ ফর্টিস গ্রুপের। বিকল্প হিসেবে তাই আইসোলেশন সেন্টার খোলা হয়েছে। রোগীদের জন্য বিছানা পত্র প্রস্তুত। সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই এটি ব্যবহার উপযোগী হবে। জানান শাহাদৎ।

ফর্টিস এ জন্য কৃতজ্ঞ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সাধারণ মানুষের প্রতি। তারা যথেষ্ট সহায়তা করছে এই আইসোলেশন সেন্টার স্থাপনে। কোনো ধরনের বাধা দেয়নি। পাশের অন্য শিল্প প্রতিষ্ঠানও ফর্টিস এর পাশে দাঁড়িয়েছে। তথ্য দেন শাহাদাৎ হোসেন। সংশ্লিষ্টদের মতে, অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও যদি ফর্টিস গ্রুপের মতো এগিয়ে আসে নিজ নিজ এলাকায় করোনা আইসোলেশন সেন্টার স্থাপনে তাহলে করোনা আক্রান্ত রোগী এবং অন্য রোগীদের চিকিৎসা নিশ্চিত হবে।
ফর্টিস গ্রুপের ফুটবল অ্যাকাডেমীর সার্বিক সহযোগিতায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। কোচ সরবরাহ করেছে বাফুফেই। তাদের বেতন দিচ্ছে ফুটবল ফেডারেশন। অবশ্য অন্য সব খরচই ফর্টিস গ্রুপের। কোচ- খেলোয়াড়দের খাবার খরচ ফর্টিসেরই। ফলে এই অ্যাকাডেমী বাফুফে-ফর্টিস ফুটবল অ্যাকাডেমী নামে পরিচিত। ফর্টিস ফুটবল অ্যাকাডেমী এবার পেশাদার লিগের সেকেন্ড টায়ার বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়শিপ লিগে (বিসিএল) খেলবে। ২০১৯ সালের এপ্রিলে যাত্রা শুরু এই অ্যাকাডেমীর। অনূর্ধ্ব-১৫ ও ১৬ এবং অনূর্ধ্ব-১৮ ও ১৯ এই দুই বয়স শ্রেনীর ৩০ জন করে ৬০ ফুটবলারকে এখানে অনুশীলন করানো হয়। তা আবাসিক ভাবে। বিদেশী কোচদের সাথে স্থানীয়রা কোচরা সম্পৃক্ত ফুটবলারদের প্রশিক্ষণে। গত বছর কলম্বিয়ার মহিলা বিশ্বকাপ দলের দুই ফুটবলার এই মাঠে সময় কাটিয়েছেন বাংলাদেশ মহিলা দল এবং বিভিন্ন স্কুলের মহিলা ফুটবলারদের সাথে।


আরো সংবাদ



premium cement