৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


আইএমএফ-ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপের বসন্তকালীন বৈঠক শুরু

আইএমএফের পরবর্তী ঋণের ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই : গভর্নর

-

ঋণের জন্য বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) যে ১০টি শর্ত দিয়েছে তার মধ্যে ৯টিই পূরণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এতে ঋণের বাকি অর্থ ছাড়ে আর কোনো বাধা থাকল না। তৃতীয় কিস্তির ঋণ ছাড়ের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আইএমএফের প্রতিনিধিদল আগামী সপ্তাহেই বাংলাদেশ সফরে আসছে। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে আইএমএফের বসন্তকালীন বৈঠকের প্রথম দিন শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান গভর্নর। দারিদ্র্যমুক্ত এবং বাসযোগ্য পৃথিবী করার অঙ্গীকার নিয়ে সোমবার শুরু হয় আইএমএফ-ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপের এই বসন্তকালীন বৈঠক। যেখানে বিভিন্ন দেশের অর্থমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ও নীতিনির্ধারকরা আলোচনা করবেন কিভাবে বাসযোগ্য পৃথিবী করা যায়, উন্নয়নের মাধ্যমে দারিদ্র্যবিমোচন করা যায়। অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বর্তমানে ১৫-২০ এপ্রিল পর্যন্ত নির্ধারিত কর্মসূচিতে যোগ দিতে ওয়াশিংটন ডিসিতে রয়েছে। করোনা মহামারী ও যুদ্ধসহ বৈশ্বিক বিভিন্ন সঙ্কটের মুখে চাপে পড়ে আইএমএফের দ্বারস্থ হয়েছিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার ঋণ দেয়ার ব্যাপারে ২০২২ সালের নভেম্বরে প্রাথমিক সম্মতি দেয় ইন্টারন্যাশনাল মনিটরি ফান্ড (আইএমএফ)। এরপর গত বছর ফেব্রুয়ারিতে এই ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার ও ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তিতে ৬৮ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি পেয়েছিল বাংলাদেশ। রাজস্ব বাড়ানো এবং যৌক্তিক ব্যয়ব্যবস্থা চালু, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং আধুনিক মুদ্রানীতি তৈরি, আর্থিক খাতের দুর্বলতা দূর করা, নজরদারি বাড়ানো, সরকার ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের আওতা বৃদ্ধির পাশাপাশি পুঁজিবাজারের উন্নয়ন, বাণিজ্য ও বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে পরিবেশ তৈরি, মানব দক্ষতা বৃদ্ধি, আর্থিক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নত করা, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি কাটাতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করে তোলা, পরিবেশের উন্নতির পদক্ষেপ নেয়া এবং জলবায়ু সংক্রান্ত খাতে আরো বিনিয়োগ ও আর্থিক সরবরাহ নিশ্চিত করাসহ ১০ শর্তে এ ঋণ পায় বাংলাদেশ। বৈঠকে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার আরো বলেন, মরিশাসের প্রবাসী কর্মীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর বিষয়ে মরিশাসের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের সাথে আলোচনা হয়েছে। সেখানে প্রায় ৪০ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশী রয়েছে। তাদের কোনো একটি ব্যাংককে আমাদের কোনো একটি ব্যাংকের করেসপন্ডিং ব্যাংক করে দিতে সম্মত হয়েছেন তারা। এতে এসব প্রবাসীরা সহজেই দেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে পারবেন বলে জানান তিনি। উদ্বোধনী বক্তব্যে আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টেলিনা জর্জিয়েভা বলেন, উন্নয়নের সাথে সাথে প্লাস্টিকসহ যে বিভিন্ন ধরনের দূষণ ঘটছে, সেদিকে নজর দিতে হবে। অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন করতে হবে। দূষণমুক্ত টেকসই উন্নয়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। এবারের সম্মেলন বাংলাদেশের জন্য বাড়তি গুরুত্বপূর্ণ কারণ ২০২৬ সালের উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হতে গেলে আন্তর্জাতিক দরবারে সোচ্চার হতে হবে। বাংলাদেশকে সেই সুযোগ তৈরি করে দেবে আইএমএফ-বিশ্বব্যাংক গ্রুপের এই মিটিং।


আরো সংবাদ



premium cement