৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


চৈত্র শেষে কালবৈশাখীর ছোবল, ১৬ জনের মৃত্যু

বাউফলে কালবৈশাখীতে লণ্ডভণ্ড বাড়িঘর : নয়া দিগন্ত -

আর মাত্র ৬ দিন পর বিদায় নেবে বাংলা ১৪৩০ সাল। এখন চলছে বছরে শেষ মাস চৈত্র। এ মাসের শেষ সময়ে কয়েক দিন ধরে দেশের বিভিন্ন জেলায় বইছিল তাপপ্রবাহ। আগামী ১৪ এপ্রিল শুরু হবে নতুন বছরের প্রথম দিন পয়লা বৈশাখ। তার আগে গতকাল দেশের বরিশাল ও খুলনা বিভাগের পাঁচ জেলায় এবং সুনামগঞ্জে তাণ্ডব চালিয়েছে কালবৈশাখী। এতে ৯ জেলায় কমপক্ষে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন অনেকে। এর মধ্যে ঝালকাঠীতে দুই নারীসহ তিনজন, পটুয়াখালীতে ৪ জন, ভোলায় দু’জন, পিরোজপুর, খুলনা, বাগেরহাট, সুনামগঞ্জ, যশোর, বান্দরবান ও নেত্রকোণায় একজন করে মারা গেছেন।
এ ছাড়া গাছপালা, বাড়িঘর ও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত হওয়া ঘূর্ণিঝড়ে এ তাণ্ডবলীলা ঘটে।
বাউফল (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা জানান, কালবৈশাখী ঝড়ের প্রভাবে লণ্ডভণ্ড পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ১১টা ৫ মিনিট পর্যন্ত ৩৫ মিনিট এ ঝড় স্থায়ী হয়। ঝড়ের প্রভাবে গাছ চাপায় এক বৃদ্ধার এবং বজ্রপাতে এক কিশোর এবং নৌকা ডুবিতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন।
গাছের চাপায় উপজেলার দাশপাড়া ইউনিয়নের চরালকী গ্রামে সাফিয়া রহমান (৯০) নামে এক বৃদ্ধা মারা গেছেন। বজ্রপাতে নাজিরপুর ইউনিয়নের রায় তাতেরকাঠি গ্রামের রাতুল (১৩) নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া নৌকা ডুবিতে ইব্রাহিম ফরাজি নামে একজনের লাশ পাওয়া গেছে। নিখোঁজ রয়েছে। ইসমাইল নামে আরো একজন ভাঙা ডালের আঘাতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্য অনেককে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল ও ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বাউফলের বিভিন্ন এলাকা থেকে শতাধিক আধাপাকা বাড়ি বিধ্বস্ত এবং ব্যাপক গাছপালা ভেঙে পড়েছে খবর পাওয়া গেছে। এ সময় ব্যাপক শিলাবৃষ্টি ও বজ্রপাত হয়েছে। বর্তমানে পুরো উপজেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে।
এ ব্যাপারে বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক জানান, রাতুলকে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই সে মারা গেছে। তার শরীরে বজ্রপাতে ঝলসানোর কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে বজ্রপাতের শব্দে হার্ট অ্যাটাক করে মারা যেতে পারে।
এ ব্যাপারে বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বশির গাজী জানান, বাউফল উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড় বয়ে গেছে। ঝড়ে নিহত ও আহতের সংবাদ পাওয়া গেছে। ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য কৃষি বিভাগ ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ঝালকাঠি প্রতিনিধি জানান, জেলায় এক ঘণ্টার কালবৈশাখী ঝড়ে বিভিন্ন স্থানে গাছপালা উপড়ে পড়ে অর্ধশতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এ সময় এক শিশুসহ চারজন নিহত হয়েছেন। রোববার বেলা ১১টার দিকে এ ঝড় ও বজ্রপাত হয়।
নিহতরা হলেন- কাঁঠালিয়া উপজেলার উত্তর তালগাছিয়া গ্রামের গৃহবধূ হেলেনা বেগম (৪০), রাজাপুর উপজেলার বড়ইয়া ইউনিয়নের রুহুল আমিন (৫৫) এবং ঝালকাঠি সদর উপজেলার শেখের হাট ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের গৃহবধূ মিনারা বেগম (৩৫) ও পোনাবালিয়া ইউনিয়নের ইছালিয়া গ্রামের অটোচালক বাচ্চু হাওলাদারের মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী মাহিয়া আক্তার ঈশানা (১১)।
বজ্রপাতে চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে ঝালকাঠির পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফরুজুল হক টুটুল জানান, বজ্রপাতের ঘটনায় গুরুতর আহতাবস্থায় চারজনকে হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে মৃত ঘোষণা করেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিহতদের লাশ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
পিরোজপুর প্রতিনিধি জানান, পিরোজপুরে কালবৈশাখী ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে কয়েক শ’ বাড়িঘর। এ ঝড়ে গাছচাপায় এক নারী ও ঝড়ে উড়ে গিয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল সকাল পৌনে ১০টার দিকে ঝড় শুরু হয়। মৌসুমি এ ঝড়ে পুরো জেলার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। গাছপালা ভেঙে বরিশালের সড়কে পড়ে বিভিন্ন এলাকার সাথে সড়ক যোগাযোগও বন্ধ রয়েছে। নিহতরা হলেন- জেলার সদর উপজেলার শারিকতলা ইউনিয়নের মরিচাল গ্রামের ব্যবসায়ী মেরাজ হোসেনের স্ত্রী রুবী বেগম (২২) ও একই ইউনিয়নের উত্তর রানীপুর গ্রামের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কানাই লাল পালের ছেলে অনিল পাল (৮০)।
জানা গেছে, রোববার সকালে হঠাৎ আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে চারিদিকে অন্ধকার হয়ে পড়ে। পরে দমকা বাতাস ও ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয়। প্রায় ১০ মিনিটের এ ঝড়ে পিরোজপুর পৌরসভা ও সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় শত শত গাছ উপড়ে পড়ে কয়েক শ’ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে প্রায় সব সড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থা। এ সময় পৌর এলাকার নিকটবর্তী শারিকতলা ইউনিয়নের মরিচাল গ্রামে একটি ঘরে গাছচাপা পড়ে রুবী বেগম নামের ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়। এ ছাড়া তার মেহেজাবিন নামের ছয় বছরের একটি কন্যা শিশুও গুরুতর আহত হয়েছে। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা পাঠানো হয়েছে। এছাড়া বাড়ি ফেরার পথে ঝড়ের বাতাসে উড়ে গিয়ে অনিল পাল নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
ভোলা প্রতিনিধি ও লালমোহন সংবাদদাতা জানান, আকস্মিক ঝড়ে ভোলার মনপুরা ও লালমোহনে প্রায় দুই শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিপুলসংখ্যক গাছপালা। ঝড়ের কবলে পড়ে দুইজন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া মনুপরার দাসের এলাকায় ছয় জেলেসহ একটি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে গেছে।
রোববার দুপুরে ঘূর্ণিঝড়ের এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘরচাপায় হারেস (৬৮) এবং বজ্রপাতে বাচ্চু (৪০) নামে দুইজন নিহত হয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, দুপুর ১২টায় ঝড়ে মনপুরার হাজির হাট ইউনিয়নের দাসেরহাট ও দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ১০০ কাঁচা ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে অধিকাংশ ঘরের চাল ও বেড়া উড়ে যায়। এ সময় দাসের হাটের মেঘনায় মাছ ধরা অবস্থায় ছয় জেলেসহ একটি ট্রলার ডুবে যায়। তবে অন্য ট্রলারের সহায়তায় তাৎক্ষণিক সবাইকে জীবিত উদ্ধার হলেও ট্রলারটি পাওয়া যায়নি। এছাড়াও ঝড়ে দুই শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান এ নিশ্চিত করে জানান, দুই নিহতের পরিবারকে নগদ ২৫ হাজার টাকা করে ৫০ হাজার টাকা দেয়া হবে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত তিন উপজেলায় ১৬ টন চাল তাৎক্ষণিক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে।
আমাদের বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, জেলায় কালবৈশাখীর তাণ্ডবে গাছ ও বিলবোর্ড পড়ে একজন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল সকাল ৯টা ৪০ থেকে ১০টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত চলা ঝড়ে অন্তত দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো: খালিদ হোসেন জানিয়েছেন, কচুয়া উপজেলায় বজ্রপাতে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আকস্মিক ঝড়ে বেশকিছু ঘরবাড়ির ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাছপালা উপড়ে পড়েছে। ক্ষতিপূরণ নিরূপণের জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
খুলনা প্রতিনিধি জানান, জেলার ডুমুরিয়ায় ঝড়ের সময় বজ্রপাতে ওবায়দুল গাজী (৩০) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, ঝড়ের সময় গাছ পড়ে মো: আক্তর হোসেন নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
হাতিয়া (নোয়াখালী) সংবাদদাতা জানান, ৩০ মিনিটের কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবে হাতিয়ায় লণ্ডভণ্ড হয়েছে কলেজ মাদরাসাসহ অনেক বসতবাড়ি। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ১২.২০ মিনিট পর্যন্ত তাণ্ডব চালায় কালবৈশাখী।
ঝড় চলাকালীন হাতিয়া দ্বীপে রাতের মতো অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশ ধারণ করে। এ সময় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় উপজেলার বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা। বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হয়নি। গাছপালা ভেঙে পড়ে সড়ক যাগাযোগে বিঘœ ঘটে। ঝড়ের সাথে প্রবল বৃষ্টি ও বজ্রপাতের কারণে জন জীবনে স্থবির হয়ে পড়ে।
কালবৈশাখীর তাণ্ডবে উপজেলার সোনাদিয়া ইউনিয়নের পূর্ব চরচেঙ্গা মানিক বাজারে অবস্থিত সোনাদিয়া মডেল নূরানি মাদরাসার ঘর ও টিনের চালা দুমড়ে-মুচড়ে পুরোটা ভেঙে অনেক দূরে নিয়ে ফেলে। সোনাদিয়া মডেল নূরানি মাদরাসা ম্যানেজিং কমিটি সভাপতি আবুল হাসেম জানান, ঝড়ে পুরো মাদরাসার ঘর ভেঙে দুমড়ে উড়িয়ে নিয়ে ধান ক্ষেতে নিয়ে ফেলেছে।
এ দিকে উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নে অবস্থিত হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের টিনের চাল কালবৈশাখীতে উপড়ে যায়। হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শারফুদ্দিন জানান, ঝড়ে কলেজের ক্ষয়ক্ষতির খবর পেয়ে আমি তাৎক্ষণিক কলেজে গিয়ে দেখি শ্রেণী কক্ষের টিনের চাল ভেঙে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
একই ইউনিয়নের কালিরচর এলাকায় সাংবাদিক সাইফুল ইসলামের বসত ঘরের উপর গাছ ভেঙে পড়ে ঘরের ব্যাপক অংশ দুমড়ে ক্ষতি সাধন করে। এ ছাড়াও দ্বীপের বিভিন্ন জায়গার বসতঘর ও মসজিদের টিনের চালা ঝড়ে উপড়ে গিয়ে ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। বিশেষ করে চর চরাঞ্চলের প্রান্তিক পর্যায়ের নিম্নআয়ের মানুষের ঘর দুয়ার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণই বেশি।
হাতিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের সাথে ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে জানতে চাইলে অফিস সহকারী জাকির হোসেন জানান, বিভিন্ন এলাকার চেয়ারম্যান তাদের ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ তথ্য এখনো আমাদের কাছে এসে পৌঁছায়নি।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চৈত্রের তাপদাহের মধ্যে হঠাৎই চট্টগ্রামে আসমানী রহমতের বৃষ্টির দেখা মিলেছিল গতকাল ভর দুপুরে। স্বল্পসময়ের স্বস্তির বৃষ্টির পাশাপাশি ছিল বজ্রপাত ও কালবৈশাখীর ছোবলও। খানিকের জন্য দেখা দিয়েছিল ঘোর অন্ধকার। কিছু কিছু স্থানে গাছপালা ভেঙে পড়লেও তাপমাত্রা কমে স্বস্তি ফিরে রোজাদারদের মধ্যে।
গতকাল ভর দুপুরে হঠাৎ করেই চট্টগ্রামের আকাশ অন্ধকার হয়ে যায়। এসময় মাঝে মধ্যে দমকা হওয়া বইতে থাকে। সড়কে চলাচলকারী গাড়িগুলোকে দিনের বেলাতেই হেডলাইট জ্বালিয়ে পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হঠাৎ বজ্রপাতের সাথে দেখা দেয় কালবৈশাখীর ছোবল। কিছু সময়ের জন্য বৃষ্টি ঝরিয়ে থেমে যায় ঝড়ের ছোবল।
এ সময় পতেঙ্গা ভিআইপি রোডে বিমান বন্দরমুখী সড়কে কালবৈশাখী ঝড়ে রাস্তার উপর ভেঙে পড়ে কয়েকটি গাছ। ফলে সড়কের দুই পাশে গাড়ি চলাচলে কিছুক্ষণ বিঘœ ঘটে। পরে খবর পেয়ে সিটি করপোরেশনের কর্মচারীরা গাছ কেটে সড়ক পরিষ্কার করেন বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা এম এইচ এম মোছাদ্দেক নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, চট্টগ্রামের গতকাল দুপুর ১২টা ৩২ মিনিট থেকে দুপুর ১২টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত এ কালবৈশাখী ঝড়ের স্থায়িত্ব ছিল। এ সময় ১৩ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৩৫ থেকে ৪৫ কিলোমিটার।
রাঙামাটি প্রতিনিধি জানান, জেলার রাজস্থলী উপজেলায় বজ্রপাতে সাজেউ খিয়াং (৪৮) নামে একজন নিহত গেছেন। গতকাল বিকেলে এ বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে।
নিহত সাজেউ খিয়াং রাজস্থলী উপজেলার ১ নম্বর ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের ধনুছড়ি পাড়া গ্রামের অংসাউ খিয়াং এর ছেলে। বিকেলে ধনুছড়ি পাড়া গ্রামের নিজের বাড়ির সামনে কাজ করছিলেন সাজেউ খিয়াং। এ সময় বজ্রপাতসহ বৃষ্টি শুরু হলে তিনি নিজ ঘরে অবস্থান নেন। তখন বজ্রপাত হলে মারা যান তিনি।
রাজস্থলী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন বজ্রপাতে যুবকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
নেত্রকোনা প্রতিনিধি জানান, জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার হাওরে বজ্রপাতে শহীদ মিয়া (৫২) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। বেলা পৌনে ১২টার দিকে উপজেলার রাজঘাট হাওরে বজ্রপাতে এ ঘটনা ঘটে।
শহীদ মিয়া উপজেলার মেন্দীপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের কফিল উদ্দিনের ছেলে। নিহতের ভাই স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম জানান, সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে গ্রামের সামনে রাজঘাট হাওরে মরিচ ক্ষেতের পরিচর্যা করছিলেন তার ভাই। দুপুরের দিকে হঠাৎ বজ্রসহ বৃষ্টি শুরু হলে এ ঘটনা ঘটে।
যশোর প্রতিনিধি জানান, জেলার ঝিকরগাছা উপজেলায় ধান ক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাতে আবদুল মালেক পাটোয়ারী (৬০) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। সকালে উপজেলার বড়পোদাউলিয়া গ্রামের বিলে এ ঘটনা ঘটেছে। ঝিকরগাছার শংকরপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য পোদাউলিয়া গ্রামের জাহান আলি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত আবদুল মালেক উপজেলার বড়পোদাউলিয়া গ্রামের মৃত ওমর আলি পাটোয়ারীর ছেলে।


আরো সংবাদ



premium cement