১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪২৯, ০৮ রমজান ১৪৪৫
`

প্রধানমন্ত্রী ভোট চাইলেন নৌকায়

কক্সবাজারে শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জনসভায় বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা : নয়া দিগন্ত -


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে নৌকায় ভোট দেয়ার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, ‘২০২৩-এর পরে ২০২৪-এর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমি সেই নির্বাচনে আপনাদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাই।’ বাসস/ কক্সবাজার অফিস।
প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গতকাল বুধবার বিকেলে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা ২০১৮ সালে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন, আমরা আপনাদের এই কক্সবাজারের উন্নয়ন করেছি, পর পর তিনবার ক্ষমতায় আসতে পেরেছি, ধারাবাহিকভাবে সেই ২০০৯ সাল থেকে এই ২০২২ পর্যন্ত দেশে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি বলবৎ আছে বলেই আজকে উন্নয়ন হচ্ছে এবং বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে।
‘আপনারা কি নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন’, প্রধানমন্ত্রী জানতে চাইলে জনগণ চিৎকার করে দুই হাত তুলে তাতে সম্মতি দেয়। তিনি জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে কবির সাথে কণ্ঠ মিলিয়ে বলেন, ‘রিক্ত আমি নিঃস্ব আমি দেবার কিছু নেই/ আছে শুধু ভালোবাসা দিয়ে গেলাম তাই।’
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা।


সমাবেশের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী ১৯৬৩.৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন এবং চারটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তার সরকার ও দল জাতির পিতার আদর্শ নিয়েই কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার লক্ষ্য অনুসরণ করে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো আমার একমাত্র কাজ। কাজেই আমি বাবা-মা, ভাইসহ স্বজনদের হারিয়ে আপনাদের মাঝেই ফিরে পেতে চাই আমার হারানো বাবার স্নেহ, মায়ের স্নেহ, ভাইয়ের স্নেহ, বোনের স্নেহ। আমি আপনাদেরকেই আমার আপনজন বলে মনে করি। এই বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণ করাই আমার একমাত্র কাজ।
বিশাল জনসভায় দূরদূরান্ত থেকে আগত যাদের তিনি চোখের দেখা দেখতে পাচ্ছেন না তাদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা যত দূরেই থাকেন আপনারা আমার হৃদয়ে, অন্তরে স্থান করে নিয়ে আছেন। প্রত্যেকটি গ্রামের মানুষ শহরের সুযোগ-সুবিধা পাবে, প্রতিটি গ্রামকে শহর হিসেবে গড়ে তুলে প্রতিটি মানুষকে উন্নত জীবন দেয়াটাই আমার লক্ষ্য। আর সেভাবেই তার সরকার রাস্তাঘাট, ব্রিজ, সড়কপথ, রেলপথ, নৌপথের উন্নয়ন করে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি; কিন্তু এই বাংলাদেশকে আমরা ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই, যে বাংলাদেশের স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন। তার সরকারের উদ্যোগে গৃহহীনদের জন্য ঘরবাড়ি নির্মাণ করে দেয়া প্রকল্পের উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতির পিতার এই বাংলাদেশে একটি মানুষও ভূমিহীন বা গৃহহীন থাকবে না। তিনি সমাবেশে আগতদের নিজ নিজ এলাকায় ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষ রয়েছে কি না তা খুঁজে দেখার আহ্বান জানান এবং নাম-ঠিকানা দিলে তার সরকার তাদের পুনর্বাসন করবে, প্রত্যেকের জীবনমান উন্নত করবে বলেও তিনি জানান।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানবিক কারণে আমরা বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছিলাম। তাদের যত দ্রুত সম্ভব স্বদেশের প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর এই কক্সবাজার তথা বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের প্রতি কেউ মুখ ফিরে তাকায়নি। দীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে কক্সবাজারকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছিল। ২০০১ সালে আবার বিএনপি ক্ষমতায় এসে সেসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড থমকে দেয়; কিন্তু ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এলে কক্সবাজারে একে একে ১২টি মেগাপ্রকল্পসহ ৭৩টি উন্নয়ন প্রকল্প কক্সবাজারে চলমান রয়েছে। এরমধ্যে ইতোমধ্যে ২৯টি প্রকল্প সমাপ্ত করতে পেরেছি আমরা। কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, রেললাইন, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্প অতিসহসা হলে জনগণ সুফল ভোগ করতে পারবে। এর আগে, সকাল ভোর থেকে প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থলে নেতাকর্মীরা দলে দলে আসতে শুরু করে। অনেকেই বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে স্লোগানে স্লোগানে জনসভাস্থলে প্রবেশ করেন। বিশেষ রঙের টিশার্ট, ক্যাপ পরিধানের পাশাপাশি বিভিন্ন নেতার ছবিসহ প্ল্যাকার্ড ও নৌকার নানা কারুকাজ তাদের হাতে দেখা যায়। চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম, কুতুবদিয়া- মহেশখালী আসনের আশেক উল্লাহ রফিক ও কক্সবাজার সদর ও রামু আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা জনসভায় আসেন। জনসভাস্থল শেখ কামাল স্টেডিয়ামে তিনটি প্রবেশপথ রাখা হয়। যার একটি ভিআইপি গেট। এর মধ্যে সিনিয়র নেতা ও বিশেষপ্রাপ্ত। অপরটি সাধারণ জনগণের জন্য। জনসভামঞ্চ থেকে নানা ঘোষণা হয়। নেতাকর্মীদের দাবি জনসভায় কয়েক লাখ মানুষের সমাগম হয়েছে।


কক্সবাজারের পর্যটনকে ঢেলে সাজানোর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘টেকনাফের সাবরাংয়ে বিদেশীদের জন্য এক্সক্লুসিভ জোন করা হচ্ছে। কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক)-কে দিয়ে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে কক্সবাজার। প্রধানমন্ত্রী সবশেষে কক্সবাজারে চলমান উন্নয়ন বিবেচনা করে নৌকায় ভোট চান। তিনি বলেন, আবার আসিব ফিরে, এই সৈকতের তীরে।
জনসভায় আসা নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা : কক্সবাজারে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় আসা নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারের জন্য না চাইতেই অনেক কিছু দিয়েছেন, কক্সবাজারে অনেক বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন। আগামীতেও আওয়ামী লীগের সরকার চান। শেখ হাসিনা আবারো ক্ষমতায় আসবেন বারবার ক্ষমতায় আসবেন এটাই তাদের প্রত্যাশা।
কক্সবাজারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরীক্ষা স্থগিত : কক্সবাজারের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে চলমান বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। একাধিক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানিয়েছেন, কক্সবাজারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখন বার্ষিক পরীক্ষা চলছে। গতকাল পূর্বনির্ধারিত পরীক্ষা স্থগিত করে নোটিশ দেয়া হয়েছে। এ পরীক্ষাটি ১৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে বলে প্রতিষ্ঠান থেকে জানানো হয়। কক্সবাজার জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাছির উদ্দিন জানান, বার্ষিক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ করেন স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের প্রধান। প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে জনসমাগমে ভোগান্তি বিবেচনায় শহরের ভেতরের প্রতিষ্ঠানগুলো পরীক্ষা স্থগিত করেছে। এটি সরকারি সিদ্ধান্ত না।
জনসভাকে ঘিরে চার স্তরের নিরাপত্তা : সরকারপ্রধানের কক্সবাজার সফরকে কেন্দ্র করে চার স্তরের নিরাপত্তা বলয় করা হয় পর্যটন শহরসহ মেরিন ড্রাইভ এলাকায়। সেখানে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর পাশাপাশি পুলিশের চার হাজারের বেশি সদস্য দায়িত্ব পালন করেন।
২৯টি প্রকল্প উদ্বোধন, ৪টি ভিত্তিপ্রস্তর : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অধীনে ২৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং চারটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন।
গতকাল বেলা ৩টা ৫২ মিনিটে কক্সবাজার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে জনসভাস্থলে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসেই তিনি এসব প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।


কক্সবাজারে উদ্বোধন করা ২৯টি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে বাঁকখালী নদী বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন, সেচ ও ড্রেজিং প্রকল্প (প্রথম পর্যায়), শাহ পরীর দ্বীপে সি ডাইকে বাঁধ পুনঃনির্মাণ ও সুরক্ষা কাজ, ক্ষতিগ্রস্ত পোল্ডার পুনর্বাসন প্রকল্প, লিংক রোড-লাবণী ক্রসিং রোডকে চার লেনে উন্নীতকরণ, রামু-ফতেখারকুল-মারিচ্যা মহাসড়কের প্রশস্তকরণ এবং উপযুক্ত গুণমান নিশ্চিতকরণ, টেকনাফ-শাহ পরীর দ্বিপ জেলা মহাসড়ক হাড়িয়াখালী থেকে শাহ পরীর দ্বীপ পর্যন্ত পুনর্গঠন, প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ। রামু কালঘর বাজার-রাজারকুল ইউপি সড়কের বাঁকখালী নদীর উপর ৩৯৯ মিটার দীর্ঘ সংসদ সদস্য ও রাষ্ট্রদূত ওসমান সরওয়ার আলম সেতু, নবনির্মিত ছয়টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস ভবন, রামু উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন, টেকনাফ উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন, মহেশখালী উপজেলা পরিষদ ভবন, উখিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, বিমানবন্দর সড়ক আরসিসি তৈরি ও অন্যান্য কাজ, শহীদ সরণি আরসিসি তৈরি ও অন্যান্য কাজ, বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়াম রোড আরসিসি ও অন্যান্য কাজ, নাজিরারটেক শুঁটকি মহাল রোড ও অন্যান্য কাজ, টেকপাড়া রোড আরসিসি তৈরি ও অন্যান্য কাজ, সি বিচ রোড আরসিসি তৈরি ও অন্যান্য কাজ, মুক্তিযোদ্ধা সরণি আরসিসি তৈরি ও অন্যান্য কাজ, সৈকত-সরণি আবাসিক তৈরি, কক্সবাজার পৌরসভায় এরিয়া রোড আরসিসি ও অন্যান্য কাজ, কক্সবাজার গণপূর্ত পার্ক, বাহারছড়া বীর মুক্তিযোদ্ধা মাঠ, কক্সবাজার জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় ভবন, শেখ হাসিনা জোয়ারিয়ানলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নবনির্মিত চার তলা অ্যাকাডেমিক ভবন, নবনির্মিত চারতলাবিশিষ্ট শিক্ষা ভবন, আব্দুল মা’বুদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ে চারতলা অ্যাকাডেমিক ভবন, মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নবনির্মিত চারতলা অ্যাকাডেমিক ভবন, কুতুবদিয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, পেকুয়া উপজেলা ভূমি অফিস ভবন এবং কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির অ্যানেক্স ভবন।
প্রধানমন্ত্রী যে চারটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন সেগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট প্রকল্প (দ্বিতীয় পর্যায়), ধুরং ঘাটে ১৫৩.২৫ মিটার দীর্ঘ জেটি এবং ধুরং জিসি মিরাখালী রোডের আকবর আলী ঘাটে আরেকটি ১৫৩.২৫ মিটার দীর্ঘ জেটি নির্মাণ। কুতুবদিয়া উপজেলা, মহেশখালী গোরকঘাটা ঘাটে জেটি নির্মাণ এবং কক্সবাজার জেলার বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়াতে উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার অন্তর্গত নাফ নদীর ধারে (৬৭/অ, ৬৭, ৬৭/ই এবং ৬৮) পোল্ডার পুনর্বাসন।


আমরা সমঝোতায় বিশ্বাসী
হুমায়ুন কবির জুশান উখিয়া (কক্সবাজার) সংবাদদাতা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সঙ্ঘাত নয়, আমরা সমঝোতায় বিশ্বাসী। সেভাবে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। যুদ্ধে কোনো সমাধান নেই। স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় তা আমরা দেখেছি।
কক্সবাজার ইনানীর পাটুয়ারটেকে বঙ্গোপসাগরে গতকাল আন্তর্জাতিক নৌশক্তি প্রদর্শন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
নৌবাহিনীসহ সবাইকে স্বাগত জানিয়ে ভাষণ শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নৌমহড়ায় যেসব দেশ যোগদান করেছে তাদের প্রতিও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তিনি।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ‘সীমানা ছাড়িয়ে বন্ধুত্ব’ প্রতিপাদ্যে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। অনুষ্ঠানে ভাষণ শেষে ইনানী পাটুয়ারটেক সৈকতে নবনির্মিত নেভি জেটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নৌবাহিনী সদর দফতর জানিয়েছে, মহড়ায় বাংলাদেশসহ ২৮ দেশের ৪৩টি যুদ্ধজাহাজ, দু’টি বিএন এমপিএ, চারটি বিএন হেলিকপ্টার অংশ নেয়।
যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক, মিসর, নাইজেরিয়া, সুদান, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, তিমুর-লেস্তে থেকে নৌ-প্রতিনিধিরা এতে অংশ নিচ্ছেন। মহড়ায় ইরান, ওমান, ফিলিস্তিন ও সৌদি আরবের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ২০১৭ সালের নভেম্বরে কক্সবাজারে ইন্ডিয়ান ওশান নেভাল সিম্পোজিয়াম, বহুপক্ষীয় মেরিটাইম অনুসন্ধান ও উদ্ধার মহড়ার আয়োজন করে। এরপর গত ১২ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর যৌথ ব্যবস্থাপনায় ঢাকা ও কক্সবাজারে ৪৬তম ইন্দো-প্যাসিফিক আর্মিস ম্যানেজমেন্ট সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement