২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মিরাজ-মাহমুদুল্লাহ-মোস্তাফিজে ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজ জয়

মোস্তাফিজের শেষ বলে রান নিতে না পারায় ভারতকে হারিয়ে সিরিজ জয়ের আনন্দে ভাসছে টাইগাররা : নয়া দিগন্ত -

উৎকণ্ঠা, রোমাঞ্চ, টেনশন, হার্টবিট বাড়ানো এক ম্যাচ জিতল তিন ‘ম’ অর্থাৎ মেহেদী হাসান মিরাজ, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মোস্তাফিজুর রহমানের বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয়টিতে গতকাল সফরকারী ভারতকে ৫ উইকেটে হারিয়ে সিরিজ জিতে নেয় টাইগার বাহিনী। প্রথমটিতে ভারতের হার ছিল এক উইকেটের। চট্টগ্রামে বাকি ওয়ানডেটি হবে নিয়ম রক্ষার এবং ধবলধোলাইয়ের।
২০১৫ সালে ভারতের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। ৭ বছর পর সফরে এসে আবারো সিরিজ হারল রোহিত-বিরাট-ধাওয়ান বাহিনী। গতকাল প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৭১ রান তোলে স্বাগতিকরা। জবাবে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৬৭ রান করে ভারত। শত রান ও দুই উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা মিরাজ।


১৯তম ওভারে রোহিতকে আউটের সহজ সুযোগ হারায় বাংলাদেশ। মাহমুদুল্লাহর ওভারে মারতে গিয়ে বল তুলে দেন আকাশে। ফাইন লেগে ইবাদত ধরতে পারেননি সহজ ক্যাচ। জীবন পেয়েই আবারো ছয় হাঁকান রোহিত। পরের বলে ফাইন লেগে আবার হাঁকান। এবার ক্যাচ মিস করেন এনামুল হক বিজয়। সেই ওভারে ২০ রান নিয়ে জয়ের কাছে চলে আসেন তিনি। শেষ ওভারে মোস্তাফিজের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিং। প্রথম বলটা ডট দিলেও পরের দুই বলে টানা দু’টি চার। এর পরের বলটি ডট। পঞ্চম বলে ছক্কা। জিততে হলে শেষ বলে আরো একটি ছক্কা দলকার ছিল ভারতের। শেষ বলটা অসাধারণ এক ইয়র্কার করেন মোস্তাফিজ। এবার কোনো মতে ব্যাটে লাগাতে পেরেছেন আঙুলে চোট নিয়ে ৯ নম্বরে খেলতে নামা রোহিত শর্মা। রান হলো না। তাতে আরো একটি নাটকীয় জয়ের উল্লাসে মাতে বাংলাদেশ।


আঙুলের চোটে রোহিতের ব্যাট করতে নামা ছিল অনিশ্চিত। তবে দলের চরম খারাপ পরিস্থিতি দেখে আঙুলে ব্যান্ডেজ পরে গ্লাভস কেটে নেমে পড়েন তিনি। ২০৭ রানে যখন সপ্তম উইকেট পড়ে যায়, তখন ক্রিজে আসেন রোহিত। এরপর খেলেন ঝড়ো এক ইনিংস। তবে রোহিতের ২৮ বলে ৫১ রানের ইনিংসটি বৃথা যায়। শেষ দিকে নানা নাটকীয়তা হলেও জয়ের মূল নায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। খাদের কিনারা থেকে মোস্তাফিজকে নিয়ে প্রথম ওয়ানডেতে এনে দিয়েছিলেন নাটকীয় এক জয়। দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলেছেন বাংলাদেশকে। প্রথমে ব্যাট হাতে। ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিলে মাহমুদুল্লাহকে নিয়ে গড়েন লড়াইয়ের পুঁজি। এরপর বল হাতে থামিয়েছেন ভারতীয়দের প্রতিরোধ। ভেঙেছেন জুটি।


এ দিন শ্রেয়াস আইয়ার ও আকসার প্যাটেল যখন ব্যাটিং করছিলেন তখন লড়াইটা বেশ জমিয়ে দিয়েছিল ভারত। তখনো বাংলাদেশের ত্রাতা হয়ে আসেন মিরাজ। এর আগে লোকেশ রাহুলকে তুলে নিয়েছিলেন। তার ক্যারিয়ার সেরা শত রানের ইনিংসেই লড়াইয়ের পুঁজি পায় বাংলাদেশ। তাই ম্যাচসেরাও মিরাজ।
ভারতের সেরা ব্যাটার ইবাদত হোসেনের বল টেনে খেলতে গিয়ে ৫ রানে বোল্ড হন। শিখর ধাওয়ান ৮, সুন্দর ১১, রাহুল ১৪ রান করে ফিরেন। পঞ্চম উইকেটে ঘুরে দাঁড়ানোর দারুণ জুটি গড়েন শ্রেয়াস ও অক্ষর। ১০১ বলে ভেঙে যায় ১০৭ রানের জুটি। অক্ষর করেন ৫৬। শ্রেয়াস করেন ৮২। এরপর শার্দুল ঠাকুরকে স্টাম্পিং ফাঁদে ফেলেন সাকিব। রোহিত ২৮ বলে ৩টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৫১ রানের ইনিংসে তাণ্ডব চালালেও শেষ রক্ষা করতে পারেননি।


এ দিকে ভারতের বিপক্ষে আজো ব্যর্থ হয়েছে টপঅর্ডার কিংবা মিডলঅর্ডারের সব ব্যাটসম্যান। বাকিদের মতো সাজঘরে ফেরার তাড়া দেখাননি মেহেদী হাসান মিরাজ ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। দলের বিপদে দু’ইজনই করেছেন দুর্দান্ত ব্যাটিং। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেলেন মিরাজ।। সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ভারতকে ২৭২ রানের লক্ষ্য দিয়েছে রাসেল ডোমিঙ্গোর শিষ্যরা।
মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে মোহাম্মদ সিরাজ, উমরান মালিক, ওয়াশিংটন সুন্দরের বোলিং তোপে শুরু থেকেই উইকেট হারাতে থাকে স্বাগতিকরা। আনামুল হক বিজয়, লিটন কুমার দাস, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীম, আফিফ হোসেন ধ্রুবদের ব্যর্থতার দিনে দলীয় ৬৯ রানেই ৬ উইকেট হারায় লাল-সবুজ শিবির।


আউট হওয়া এই ছয় ব্যাটসম্যানের মধ্যে ২০-এর কোঠা পার হতে পেরেছেন কেবল নাজমুল হোসেন শান্ত। উমরানের শিকার হওয়ার আগে ৩৫ বলে তিন চারের মারে ২১ রান করেন রাজশাহীর এই ক্রিকেটার। ১২ রানে আসে মুশফিকের ব্যাট থেকে। বিজয় করেন ১১ রান। সাকিব ও লিটন করেন যথাক্রমে ৮ ও ৭ রান। অন্য দিকে গোল্ডেন ডাক মারেন আফিফ।
টপঅর্ডার-মিডলঅর্ডারের এমন ব্যর্থতার দিনে সপ্তম উইকেটে ১৪৮ রানের জুটি গড়ে দলকে লজ্জার হাত থেকে বাঁচান মিরাজ ও রিয়াদ। রিয়াদ ৭৭ রানে ফিরে গেলে ভাঙে এই জুটি। ৯৬ বলে ৭ বাউন্ডারি হাঁকান সাবেক অধিনায়ক।
অন্যপ্রান্তে শেষ পর্যন্ত ১০০ রানে অপরাজিত থাকেন মিরাজ। ৮৩ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের প্রথম শতক। তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারের দেখা পেতে আট চার এবং চারটি ছয় মারেন মিরাজ। ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন মিরাজের সঙ্গী নাসুম আহমেদ। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৭১ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ।


সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ ইনিংস : ২৭১/৭ (বিজয় ১১, লিটন ৭, শান্ত ২১, সাকিব ৮, মুশফিক ১২, মাহমুদুল্লাহ ৭৭, আফিফ ০, মিরাজ ১০০*, নাসুম ১৮*, সিরাজ ২/৭৩, মালিক ২/৫৮, সুন্দর ৩/৩৭)
ভারত ইনিংস : ২৬৬/৯ (কোহলি ৫, ধাওয়ান ৮, শ্রেয়াস ৮২, সুন্দর ১১, রাহুল ১৪, প্যাটেল ৫৬, শারদুল ৭, চাহার ১১, রোহিত ৫১*, সিরাজ ২, মালিক ০*, মিরাজ ২/৪৬, এবাদত ৩/৪৫, মোস্তাফিজ ১/৪৩, নাসুম ০/৫৪, সাকিব ২/৩৯, মাহমুদুল্লাহ ১/৩৩)
ফল : বাংলাদেশ ৪ রানে জয়ী।
সিরিজ : তিন ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে বাংলাদেশ।


আরো সংবাদ



premium cement
যদি বন্ধু হও, সীমান্তে অহরহ গুলি কেন : ভারতকে ফারুক সাহারা মরুভূমির গরমের মতো অনুভূত হচ্ছে : সরকারকে দায়ী করে রিজভী মধুখালীর পঞ্চপল্লীতে ২ ভাইকে হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশ শ্রীলঙ্কাভিত্তিক এয়ারলাইন্স ফিটসএয়ারের ঢাকা-কলম্বো সরাসরি ফ্লাইট চালু রোহিঙ্গা ইস্যুতে একসাথে কাজ করবে ঢাকা-ব্যাংকক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরাইলি হামলায় আহত শিশুর মুখে ২০০ সেলাই বিষখালীতে মৎস্য বিভাগের অভিযান : জেলে নিখোঁজ, আহত ২ দক্ষিণ এশিয়ার যে শহরগুলোর তাপমাত্রা এখন সর্বোচ্চ গাজীপুরে দাঁড়িয়ে থাকা কাভার্ডভ্যানে অটোরিকশার ধাক্কায় হতাহত ৫ চৌগাছায় সিদ কেটে স্বর্ণের দোকানে চুরি দুর্নীতির মামলায় কৃষিমন্ত্রীকে আটক করল ইউক্রেন

সকল