২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ডায়াবেটিস রোধ করতে পারলে বছরে ৪টি পদ্মা সেতু করা যাবে

-

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা: মো: শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, স্টুল এলকালাইন ফসফেট টেস্টের মাধ্যমে মানুষের ডায়াবেটিস পরীক্ষা করাতে পারলে ডায়াবেটিস রোগ প্রতিরোধ করা যাবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের এক কোটি ৩১ লাখ মানুষের ডায়াবেটিস চিকিৎসার জন্য বছরে এক লাখ কোটি টাকার বেশি খরচ হয়। ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে পারলে এ টাকা দিয়ে বছরে দেশে চারটি পদ্মা সেতু তৈরি করা যাবে। মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত ‘প্রিভেনশন অব ডায়াবেটিস মেলাইটাস’ নামক সিম্পোজিয়ামে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন।
বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্ড্রোক্রাইনোলজি বিভাগের সম্মানীয় অধ্যাপক ডা: মধু এস মালো সিম্পোজিয়ামে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, তিনি এক সময় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু ইঁদুর মডেল নিয়ে কাজ করেন। ইঁদুর মডেলগুলোতে একটি এনজাইম কম ছিল। এনজাইমটির নাম ইন্টেস্টিনাল এলকালাইন ফসফেট। এই এনজাইমটি অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়াল টক্সিনকে ধ্বংস করে। এই টক্সিনগুলো রক্তে রয়ে গেলে প্রদাহ সৃষ্টি করে। এই প্রদাহ যদি প্যানক্রিয়াসের বিটাসেলকে আক্রান্ত করে তাহলে এটি টাইপ ওয়ান ডায়বেটিস সৃষ্টি করে। আর প্রদাহ যদি ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয় তবে তা টাইপ টু ডায়াবেটিস সৃষ্টি করে।
অধ্যাপক মালো আরো বলেন, তিনি যে ইঁদুরগুলো নিয়ে কাজ করছিলেন ওদের ইন্টেসটিনাল এলকালাইল ফসফেট ছিল না। তিনি তখন এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, এই ইঁদুরগুলো টক্সিনকে ধ্বংস করতে পারবে না, ফলে এদের ডায়াবেটিস হওয়া উচিত। পরে এদের পরীক্ষা করে জানা গেল, ওদের ডায়াবেটিস আছে। এদের কোলেস্টেরল লেভেল হাই, ট্রাইগ্লিসারাইড লেভেল হাই, এইচডিএল লো, এলডিএল লেভেল হাই। এদের যকৃত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অধ্যাপক ডা: মধু এস মালো আরো বলেন, প্রাণীর ওপর গবেষণার পর হার্ভার্ড থেকে চলে এসে বাংলাদেশে মানুষের ওপর গবেষণা শুরু করেন। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের মধ্যেও ওই এনজাইমটি প্রায় ৫০ শতাংশ কম পাওয়া যায়। পাঁচ বছর পর্যবেক্ষণ করার পর দেখা গেল, যাদের আইপি এনজাইম কম পাওয়া গেছে, তাদের ১৪ গুণ বেশি ডায়াবেটিস আছে। স্টুল এলকালাইন ফসফেট টেস্টের মাধ্যমে ডায়াবেটিস আছে কি, নেই তা জানা যায়। অধ্যাপক এস মালো বলেন, ৩০ থেকে ৬০ বছর বয়সীদের ডায়াবেটিস স্ক্রিনিং করতে হবে। তাদের মধ্যে আইপি এনজাইম কম থাকলে স্বাস্থ্য শিক্ষা দিতে হবে। এর মাধ্যমে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব বলে অধ্যাপক মালো মনে করেন।
সিম্পোজিয়ামে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্ড্রোক্রাইনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা: এম এ হাসনাত। সঞ্চালনা করেন এন্ড্রোক্রাইনোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা: তাহনিয়া হক।


আরো সংবাদ



premium cement