২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বান্ধবীর সামনে হিরো সাজতেই শিকের ওপর হামলা

উৎপল হত্যায় অভিযুক্ত জিতু কিশোর গ্যাং নেতা
-

বান্ধবীর সামনে হিরোইজম দেখানোর জন্যই হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারের ওপর হামলা করেছিল ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী আশরাফুল আহসান জিতু। বান্ধবীর সামনে শাসন করায় শিক্ষক উৎপলকে শিক্ষা দেয়ার জন্যই এ হামলা। র্যা বের হাতে গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমনটাই জানিয়েছে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার হত্যা মামলার প্রধান আসামি জিতু। শুধু তাই নয়, একদিকে স্কুল কমিটির সভাপতির নাতি, তার ওপর আবার একটি কিশোর গ্যাংয়ের প্রধান জিতু। তাই বরাবরই বেপরোয়া। এলাকায় শুধু জিতুই একা নয়, রয়েছে আরো কয়েকটি কিশোর গ্যাং। এলাকায় অভিযুক্ত জিতুকে সবাই ডাকেন জিতু দাদা বলে।
র্যা ব বলছে, জিতু স্কুলে সবার কাছে একজন উচ্ছৃঙ্খল ছাত্র হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন সময় শৃঙ্খলাভঙ্গ, মারামারিসহ স্কুলের পরিবেশ নষ্টের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। স্কুলে যাওয়া-আসার পথে এবং স্কুল চলাকালীন ছাত্রীদের ইভটিজিং করত জিতু। স্কুলে সবার সামনে ধূমপান, ইউনিফর্ম ছাড়া স্কুলে আসা-যাওয়া, মোটরসাইকেল নিয়ে বেপরোয়া চলাফেরা করত। জানা গেছে, ঘটনার পর জিতু পালিয়ে যায়। দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে। পরে গত বুধবার র্যা ব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা, র্যা ব-১ ও র্যা ব-৪-এর যৌথ অভিযানে গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
রাজধানীর কাওরান বাজার র্যা বের মিডিয়া সেন্টারে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ঘটনার কয়েক দিন আগে জিতুকে কলেজের একাদশ শ্রেণীর এক ছাত্রীর সাথে অযাচিতভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখেন শিক উৎপল সরকার। এ সময় তিনি তাকে এ ধরনের ঘোরাফেরা থেকে বিরত থাকতে বলেন। এ ঘটনায় জিতু শিকের ওপর ুব্ধ হয়। ওই ছাত্রীর কাছে নিজের বাহাদুরি দেখাতে শিকের ওপর হামলার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৫ জুন ক্রিকেট স্ট্যাম্প স্কুলে নিয়ে আসে এবং তা শ্রেণীকরে পেছনে লুকিয়ে রাখে। পরে কলেজ মাঠে ছাত্রীদের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলাকালে শিক উৎপল কুমারকে মাঠের এক কোণে একা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে স্ট্যাম্প দিয়ে বেধড়ক মারপিট করে।
খন্দকার আল মঈন বলেন, জিতু প্রথমে পেছন থেকে শিক উৎপল সরকারের মাথায় আঘাত করে। পরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে গুরুতর জখম করে, যার ফলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পর দিন উৎপল সরকার মারা যান। ঘটনার দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত জিতু এলাকায় থাকলেও পরে গ্রেফতার এড়াতে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। সে প্রথমে বাসে করে মানিকগঞ্জে তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে উঠে। সেখানে এক রাত থেকে পরদিন আরিচা ফেরিঘাটে যায়। সেখান থেকে ট্রলারে নদী পার হয়ে পাবনার আতাইকুলাতে তার পরিচিত একজনের বাড়িতে আত্মগোপন করে। পরদিন ভোরে সে আবারো তার অবস্থান পরিবর্তন করতে আতাইকুলা থেকে বাসে কাজীরহাট লঞ্চ টার্মিনালে আসে। লঞ্চে করে আরিচাঘাট পৌঁছে। সেখান থেকে বাসে গাজীপুরের শ্রীপুর ধনুয়া গ্রামে এক বন্ধুর বাড়িতে আত্মগোপন করে। সেখান থেকেই জিতুকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যা ব জানায়, জিতুর বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা হয়েছে। কিন্তু জেএসসির সার্টিফিকেট অনুযায়ী বয়স ১৯ বছর হলেও মামলার এজাহারে তার বয়স ১৬ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। জিতুর নেতৃত্বে ‘দাদা’ নামে একটি কিশোর গ্যাং গড়ে ওঠে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানায় র্যা ব। গ্যাং সদস্যদের নিয়ে মাইক্রোবাসে করে ওই ছাত্র যত্রতত্র আধিপত্য বিস্তার করত বলে জানায় র্যা ব। পরিবারের কাছে তার বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করলে গ্যাং সদস্যদের সাথে নিয়ে তাদের ওপর চড়াও হতো।
কমান্ডার আল মঈন বলেন, নিহত শিক উৎপল সরকার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। তিনি ২০১৩ সালে আশুলিয়ার হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন।
জিতুর বাবাকে গ্রেফতার ও রিমান্ডে নেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা মনে করেছেন তদন্তের স্বার্থে তাকে রিমান্ডে নেয়া প্রয়োজন। তাই জিতুর বাবাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। প্রকৃত আসামি জিতুকে গ্রেফতার করেছি। তাকে থানায় হস্তান্তর করা হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
নোয়াখালীতে প্রবাসীর স্ত্রীর ব্যক্তিগত ছবি দেখিয়ে চাঁদা আদায় দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল দেখে না : কাদের আশুলিয়ায় বাঁশবাগান থেকে নারী পোশাক শ্রমিকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার মিয়ানমারের কর্মকর্তারা ফেরত গেলেন, কিন্তু রোহিঙ্গা সঙ্কট কি আরো জটিল হচ্ছে দিনাজপুরে দুই ট্রাকের সংঘর্ষ, চালক-হেলপার নিহত মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ সখীপুরে বৃষ্টির জন্য অঝোরে কাঁদলেন মুসল্লিরা দক্ষিণ ভারতে কেন কাজ করেনি বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের নতুন আংশিক কমিটি বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসায় বিনিয়োগ সম্ভাবনা অন্বেষণে থাইল্যান্ডের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান ট্রাম্পের বিচার নিয়ে বিভক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট

সকল