২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

করোনায় শনাক্ত ও মৃত্যুতে রাজধানী শীর্ষ অবস্থানে

গতকাল শনাক্ত ৯৬১৪, মৃত্যু ১৭
-

করোনায় শনাক্ত ও মৃত্যুতে রাজধানী ঢাকা শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য স্থানে করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। তবে গতকাল শনিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে করোনা শনাক্তের যে তথ্য দেয়া হয়েছে তাতে আগের দিন (শুক্রবার) থেকে নতুন করে শনাক্তের হার কিছুটা কমই ছিল, কিন্তু মৃত্যুর সংখ্যা আগের দিনের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত এর আগের ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে করোনায় চেয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের এবং করোনা শনাক্ত হয়েছে ৯ হাজার ৬১৪ জনের। আগের দিনের মৃত্যু বেশি পাঁচজন এবং শনাক্ত কমেছে এক হাজার ৮২০টি। গতকাল নুমনা পরীক্ষার বিপরীতে করোনা শনাক্তের হার ছিল ২৮.০২ শতাংশ।
গতকাল সারা দেশে যে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনায় এদের ৯ জনই রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এ ছাড়া রাজধানীতে গতকাল করোনা শনাক্ত হয়েছে ৭ হাজার ৫৬ জন। সারা দেশের তুলনায় রাজধানীতে করোনা শনাক্তের পরিমাণ ছিল ৭৩.৩৯ শতাংশ। রাজধানীতে গতকাল সকাল পর্যন্ত করোনা শনাক্তে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল ২৪ হাজার ১০৩টি। অপর দিকে সারা দেশে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৪ হাজার ৩১১ জন। গতকাল সারা দেশে ৯ হাজার ৬১৪ জন করোনা শনাক্ত হলেও করোনা থেকে গতকাল মুক্ত হয়েছেন অর্থাৎ সুস্থ হয়েছেন মাত্র ৪৯২ জন।
করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের কারণে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি হলেও সে তুলনায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সংখ্যা অনেক কম। রাজধানী ঢাকায় কোভিড ঘোষিত ১৫ হাসপাতাল রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী গতকাল এই হাসপাতালের তিন হাজার ১৬২টি শয্যার মধ্যে পূর্ণ ছিল ৯৬১টি শয্যা। তবে ধীরে ধীরে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। এই সরকারি ১৫ হাসপাতালে ৩৭৬টি আইসিইউ শয্যা আছে। এর মধ্যে গতকাল ফাঁকা ছিল ২৯৬টি অর্থাৎ আইসিইউ শয্যায় করোনা রোগীদের মধ্যে ভর্তি ছিল ৮০ জন। অবশ্য ওমিক্রন আসার আগেও আইসিইউ শয্যায় এমন ধরনের রোগী ছিল। সাধারণত আইসিইউ শয্যায় কোনো রোগী নেয়া হলে সেখান থেকে সুস্থ হয়ে ফিরতে কিছুটা দেরি হয়ে থাকে। আবার একই ধরনের এইচডিইউ শয্যা এই ১৫ হাসপাতালে রয়েছে ৪২৩টি এবং ফাঁকা ছিল ৩৩২টি অর্থাৎ এই শয্যাগুলোতে রোগী ভর্তি ছিল ৯১ জন। এ দিকে রাজধানীতে বেসরকারি ৩২টি কোভিড ঘোষিত হাসপাতালে সাধারণ শয্যা রয়েছে এক হাজার ৫৭৪ জন। সেখানে ভর্তি ছিলেন ৩২০ জন।
চিকিৎসকেরা বলছেন, ওমিক্রন বেশ দুর্বল ধরনের একই ভাইরাস এতে প্রমাণ। ঢাকা শহরেই সাত থেকে আট হাজার মানুষ দৈনিক করোনা শনাক্ত হচ্ছেন কিন্তু সে তুলনায় হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেয়ার সংখ্যা একেবারেই কম। ব্রিটেনে করোনা সংক্রমণ কমতে শুরু করেছে। বাংলাদেশের মানুষের করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা ইউরোপ-আমেরিকার মানুষের চেয়ে অনেক বেশি। জানুয়ারির প্রথম দিকেও ব্রিটেনে দৈনিক এক লাখের বেশি মানুষ করোনা শনাক্ত হলেও বাংলাদেশে সেখানে শনাক্তের হার এক হাজারও ছাড়ায়নি।
রাজশাহী বিভাগে সংক্রমণ বাড়ছেই, উপসর্গে দুইজনের মৃত্যু
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহী বিভাগের আটটি জেলায় প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ক্রমেই বাড়ছে। এ বিভাগে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এখন এক লাখ দুই হাজার ২৫৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া করোনা উপসর্গ নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আরো দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা দুইজনই রাজশাহীর বাসিন্দা। স্বাস্থ্য অধিদফতরের রেড জোনে (অতি ঝুঁকিপূর্ণ) থাকা রাজশাহী জেলায় এখন করোনা সংক্রমণের হার ২৮ দশমিক ৭১ শতাংশ।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী গণমাধ্যমকে জানান, করোনা উপসর্গ নিয়ে রামেক হাসপাতালে মারা যাওয়া দুইজনের মধ্যে একজন নারী এবং একজন পুরুষ। তাদের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে। তারা রাজশাহী জেলার বাসিন্দা। করোনা উপসর্গ নিয়ে তারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু নমুনা পরীক্ষার আগেই তাদের অবস্থার অবনতি ঘটে। পরে তাদের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছিল। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। আর স্বাস্থ্যবিধি মেনেই তাদের লাশ দাফনের জন্য বলা হয়েছে বলে জানান তিনি।

 


আরো সংবাদ



premium cement