২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইভ্যালি পরিচালনায় কর্মপন্থা ঠিক করে দিয়েছেন হাইকোর্ট

৬ মাসের মধ্যে টাকা ফেরত নয়
-

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি পরিচালনার জন্য পাঁচ সদস্যের বোর্ড গঠনের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনায় কর্মপন্থা ঠিক করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত আদেশে ইভ্যালির বর্তমান পরিচালনাপর্ষদের কাছে কোম্পানির টাকা, শেয়ার, ঋণপত্র, এফডিআর, চাবিসহ সব নথিপত্র বুঝিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া কোম্পানিটির নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা এবং মন্ত্রণালয়কে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদকে সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে। আর দুদককে ইভ্যালির লেনদেন বা ব্যবসায় অপরাধমূলক কার্যক্রম থেকে থাকলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। একইসাথে কোর্টের আদেশে গঠিত বোর্ডকে সহায়তা করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ইভ্যালির গ্রাহকদের উদ্দেশে আদালত বলেছেন, তারা চাইলে আদালতে আসতে পারে বা তাদের দাবিগুলো ইভ্যালির অফিসের মাধ্যমে সুরাহা করতে পারে। তবে আগামী ছয় মাসের মধ্যে তারা বোর্ড বা ইভ্যালি কর্তৃপক্ষের কাছে টাকা ফেরতের জন্য চাপ দিতে পারবেন না।
গত ১৮ অক্টোবর ইভ্যালি পরিচালনার জন্য আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এইচ এম সামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের ওই কমিটি গঠন করে দেন হাইকোর্ট। কমিটির অন্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক সচিব মোহাম্মদ রেজাউল আহসান, মাহবুব কবীর মিলন, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ফখরুদ্দিন আহম্মেদ এবং ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ। এরপর বৃহস্পতিবার বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ ১০ পৃষ্ঠার লিখিত আদেশ প্রকাশ করে। আদেশে ইভ্যালি পরিচালনায় কর্মপন্থা ঠিক করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের আদেশে বলা হয়েছে, কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার ও পরিচালকরা কারাগারে থাকার কারণে বোর্ড মিটিং করতে পারছেন না। তাই আদালত উপযুক্ত মনে করায় ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইনের ৮৫(৩) ধারা অনুসারে একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে দিয়েছেন।
হাইকোর্টের নির্দেশ অনুসারে বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রথম সভায় আদালতের আদেশ সম্পর্কে কমিটিকে অবহিত করবেন। একইসাথে তিনি ইভ্যালির অডিট রিপোর্টসহ মূল বিষয় এবং তাদের করণীয় বিষয়টি তুলে ধরবেন।
বোর্ডের সদস্যরা কেপিএমজির রহমান হককে দিয়ে ইভ্যালির অডিট রিপোর্ট তৈরির করাবে। প্রতি অর্থবছরে ইভ্যালির আর্থিক লেনদেন, গ্রাহকদের পণ্য সরবরাহের সময় ও ব্যয়, বর্তমানে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকে থাকা ইভ্যালির টাকা, ইভ্যালির সদস্য, প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা ও বিগত বছরগুলোতে প্রতিষ্ঠানটি অডিটকারী কর্মকর্তাদের নাম নতুন করে অডিট রিপোর্টে তুলে ধরতে বলা হয়েছে। পরে ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে বর্তমান পরিচালকরা গ্রাহকদের থেকে অর্থ আদায়ের বিষয়টি সাবেক পরিচালকরা কিভাবে করেছে তা খুঁজে বের করবেন এবং নিজেদের পর্যবেক্ষণ দিবেন। ইভ্যালির বর্তমান পরিচালকরা যদি দেখতে পান, ইভ্যালির আর্থিক কার্যক্ষমতা ঝুঁকিতে রয়েছে, তাহলে তারা ইভ্যালির নিয়ন্ত্রক, কর্তৃপক্ষ, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চাইবে। একইসাথে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ অতীতে পণ্য বিতরণে ব্যর্থতার জন্য বিভিন্ন কারণ বিবেচনায় নিয়ে ক্রেতাদের আবেদন অনুযায়ী টাকা ফেরত দেয়ার জন্য বা আইন অনুযায়ী পণ্য সরবরাহের জন্য আবেদনগুলো বিবেচনা নেবেন।
অডিট রিপোর্ট প্রস্তুত হওয়ার পর ইভ্যালির বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক বোর্ড সদস্যদের নিয়ে সভা আহ্বান করবেন। সভায় অডিট রিপোর্ট ও অন্যান্য নথি যাচাই-বাছাই করবেন। যদি তিনি ইভ্যালি পরিচালনা অসম্ভব মনে করেন, তাহলে তিনি বোর্ড সদস্যদের কাছে কোম্পানিটির অবসায়নের বিষয়টি তুলে ধরবেন। এ ছাড়াও তিনি পরিচালনাপর্ষদের প্রথম সভায় সবার পরামর্শক্রমে প্রয়োজন মনে করলে নতুন করে কোম্পানিতে কাউকে নিয়োগ বা পুনঃনিয়োগ করতে পারবেন। একইসাথে তিনি ইভ্যালির সব সম্পদের দেখভাল করবেন।


আরো সংবাদ



premium cement