মুদ্রা পাচার (মানি লন্ডারিং) সংক্রান্ত মামলাগুলোর তদন্ত শ্লথ হয়ে পড়েছে। এ ধরনের মামলা তদন্তের কাজ শেষ করতে বছরের পর বছর লেগে যাচ্ছে। তদন্ত কাজের দীর্ঘসূত্রতার কারণে দেশে বড় বড় বিনিয়োগকারীদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবু হেনা মো: রহমাতুল মুনিম। গেল সপ্তাহে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ও আওতাধীন দফতর/সংস্থার মাসিক সমন্বয় সভায় এ তিনি এ কথা বলেন বলে জানা গেছে।
সভার কার্যবিবরণী সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘মানি লন্ডারিং বিষয়ে অসংখ্য মামলা দীর্ঘদিন যাবৎ তদন্তাধীন থাকায় বড় বড় বিনিয়োগকারীদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। মানি লন্ডারিং মামলা তদন্তধীন থাকলে অপরাধ প্রমাণিত হয় না। তাই মানি লন্ডারিং মামলা ঝুলিয়ে রাখা যাবে না। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আদালতে এসব মামলার প্রমাণযোগ্য তথ্যসহ চার্জশিট দাখিল করতে হবে। এ বিষয়ে গঠিত কমিটিকে এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে রিপোর্ট দাখিল করাও নির্দেশ দেন তিনি। ’
এ বিষয়ে এনবিআর সদস্য (শুল্ক) সভাকে জানান যে, মানি লন্ডারিং মামলার বিষয়ে হাইকোর্ট থেকে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে চার্জশিট দাখিলের জন্য সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।
সভায় জানানো হয়, মানি লন্ডারিং মামলা তদন্তে তদন্ত কর্মকর্তাদের জন্য এনবিআর থেকে মানি লন্ডারিং বিষয়ক কর্মসূচি প্রণয়নপূর্বক প্রশিক্ষণের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। প্রশিক্ষণের মধ্যে তদন্ত কার্যক্রম বিষয়ে পৃথক প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। জানা গেছে, সভায় কাস্টমস, এক্সাইজ ও ট্যাক্সেস আপিলাত ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রমকে আরো গতিশীল ও শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়।
গত ডিসেম্বর মাসের শুরুতে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালে দায়েরকৃত ও অনিষ্পন্ন মামলার ছিল ছয় হাজার ৯৫৮টি। এর মধ্যে ডিসেম্বর মাসে দায়েরকৃত মামলা সংখ্যা ছিল ৭৭টি। একই সময়ে নিষ্পত্তিকৃত মামলা ছিল ১৪৫টি। এবং ডিসেম্বর মাস শেষে অনিষ্পন্নকৃত মামলা ছিল ছয় হাজার ৮৯০টি।
বলা হয়, মামলা নিষ্পত্তির সংখ্যা বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১০ পর্যন্ত দায়েরকৃত অনিষ্পন্ন মামলাগুলো শ্রেণিবিন্যাস করে বিভিন্ন বেঞ্চে বিচারের জন্য দেয়া হয়েছে এবং পুরনো মামলাগুলো নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
সভায় বলা হয়, ট্যাক্সেস আপিলাত ট্রাইব্যুনালে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত অনিষ্পন্ন মামলা সংখ্যা ছিল এক হাজার ৭২৯টি। এর মধ্যে ডিসেম্বর মাসে মামলা করা হয়েছে ৭৪০টি। একই মাসে মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে ৭৮১টি। এবং অনিষ্পন্ন মামলার সংখ্যা এক হাজার ৬৮৮টি। মামলার নিষ্পত্তির ধারা অব্যাহত রাখার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়।
রাজস্ব আয়ের চিত্র তুলে ধরে সভায় উল্লেখ করা হয়, চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তিন লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত (ছয় মাসে) রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ৪১ হাজার ২২৫ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে এক লাখ ৮ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। ডিসেম্বর পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার অর্জনের হার ৭৬.৮১%। একই সময়ে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে দুই দশমিক ১০ শতাংশ। গত ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে একই সময়ে লক্ষ্যমাত্রার অর্জনের হার ছিল ৮৪.৪৮%। যার মধ্যে কাস্টমস ৭৬.৫৬%, মূসক ৯৪.৪১% ও আয়কর ৮১.৫৮%।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা