টাইগারদের দাপুটে জয়
হোয়াইটওয়াশ ওয়েস্ট ইন্ডিজ- জসিম উদ্দিন রানা
- ২৬ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০
সাগরিকায় (জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম) এর আগে বাংলাদেশ ১৯ টেস্ট ও একই সমান ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে। এই ভেনুতে গতকাল নিজেদের ২০তম ওয়ানডে ম্যাচ খেললেন টাইগাররা। টেস্টে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২৪৪ রানের বড় ব্যবধানে হারের লজ্জা থাকলেও ওয়ানডেতে এটি টাইগারদের পয়মন্ত ভেনু। ওয়ানডেতে ১৩ জয় ও ৭ হার। বলা চলে এই ফরম্যাটে ৮০ ভাগ সফলতা এসেছে সাগরিকায়।
১২ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ফের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ। সিরিজটা বাংলাদেশের হয়ে গেছে আগেই। এটি ২০২৩ বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব ওয়ার্ল্ড সুপার লীগের অংশ হওয়ায় শেষ ম্যাচ হালকাভাবে নেয়ার বিন্দুমাত্র সুযোগ ছিল না তামিমের দলের। প্রথম দুই ম্যাচে বড় ব্যবধানে পরাজয় মেনে নেয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের লক্ষ্য ছিল ১০ পয়েন্ট অর্জন। তাই অভিন্ন লক্ষ্যের ম্যাচে টসে জিতে আগে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। একাদশে হাসান মাহমুদের জায়গায় তাসকিন আহমেদ ও রুবেল হোসেনের জায়গায় মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনকে নিয়ে মাঠে নামে তামিম বাহিনী। সফরকারীদের কোনো রকম সুযোগ না দিয়ে ১২০ রানের বড় ব্যবধানে ম্যাচ জিতে সফরকারীদের হোয়াইটওয়াশ করে ছাড়ল টাইগাররা। সিরিজ সেরা হন সাকিব আল হাসান আর ম্যাচ সেরা মুশফিকুর রহীম।
টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে চার অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের হাফ সেঞ্চুরির সুবাদে নির্ধারিত ওভারে ৬ উইকেটে ২৯৭ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে খেলতে নেমে ৪৪.২ ওভারে ১৭৭ রানেই শেষ হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস। প্রথম ম্যাচে ৬ উইকেটে, দ্বিতীয় ম্যাচে ৭ উইকেটে ও গতকাল তৃতীয় ম্যাচে ১২০ রানে ক্যারিবীয়দের হারিয়ে ৩-০ তে সিরিজ জিতে নেয় স্বাগতিকরা। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রথমবার হোয়াইওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ।
নিজেদের ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসে তৃতীয়বার এক ম্যাচে বাংলাদেশী চার ব্যাটসম্যান হাফ সেঞ্চুরি করলেন। সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে গতকাল অর্ধ শতকের ইনিংস খেলেছেন যথাক্রমে তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তামিম, মুশফিক এবং রিয়াদ তিনজনেই সমান ৬৪ রান করে করেছেন। সাকিব করেন ৫১ রান।
২০১৪ এশিয়া কাপে নিজ মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে এনামুল হক বিজয় ১০০, ইমরুল কায়েস ৫৪ এবং মুমিনুল হক ও মুশফিক দু’জনেই ৫১ করে রান করেন। ২০১৫ বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে চার সিনিয়র ব্যাটসম্যান তামিম ৯৫, মাহমুদুল্লাহ ৬২, মুশফিক ৬০ এবং সাকিব অপরাজিত থাকেন ৫২ রানে।
গতকাল ইনিংসের প্রথম ওভারেই কোন রান না করে লিটন দাস ফিরে যাওয়ার পর আশা জাগিয়ে দ্রুতই ফিরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রথম দুই ম্যাচে (১ ও ১৭) ব্যর্থ হওয়ার পরে গতকাল তার ব্যাট থেকে আসে ২০ রান। দু’জনেই এলবিডব্লিউর শিকার। এরপর দলের দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান ৯৩ রানের জুটি গড়েন। আগের দুই ম্যাচে (৪৪ ও ৫০) রান পাওয়া অধিনায়ক তামিম ফিরেন ৮০ বলে ৩টি চার একটি ছক্কায় ৬৪ করে। এরপর দেখে শুনে ৮১ বলে তিন চারে ৫১ রানের ইনিংস খেলে রেইফারের ইনসুইংয়ে বোল্ড হন সাকিব। মুশফিকের সাথে সাকিবের জুটি হয় ৭৮ রানের। তামিম-সাকিবের বিদায়ের পর রান তোলার গতি বাড়ান মুশফিকুর রহীম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। পাঁচে ব্যাট করা মুশফিক ৫৫ বলে চারটি চার ও দু’টি ছক্কায় ৬৪ রানের ইনিংস খেলে রেইফারের বলেই সাজঘরে ফিরেন। এরপর মাহমুদুল্লাহর ব্যাট থেকেও আসে হার না মানা ৬৪ রান। ফিনিশার মাহমুদুল্লাহ ৪৩ বলে তিন চার ও তিন ছক্কায় ওই রান তোলেন। তাদের জুটি থেকে আসে ৭২ রান।
সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে সাতে ব্যাটিংয়ে নেমে সৌম্য অবশ্য ৭ রানের বেশি করতে পারেননি। সাইফউদ্দিন ৫ রানে ও মাহমুদুল্লাহ ৬৪ রানে অপরাজিত থেকে ২৯৭ রান করে মাঠ ছাড়েন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে আলজারি জোসেপ ও রেমন রেইফার দু’টি করে, কাইল মায়ার্স একটি উইকেট নেন।
২৯৮ রানের টার্গেটে সফরকারীরা খেলতে নামলে আগের দুই ম্যাচের মতো মোস্তাফিজই উইকেটের খাতা খোলেন। ৩০ রানে জোড়া আঘাতে শুরুতে দুই উইকেট তুলে নেন এই কাটার মাস্টার। দ্বিতীয় ওভারে কিওর্নকে অফ স্টাম্পের বাইরে বল করেছিলেন। খোঁচা মারতে গিয়েই এক রানে বিদায় নেন কিওর্ন। ষষ্ঠ ওভারে আরেক ওপেনার সুনিল অ্যামব্রিসকেও (১৩) ফেরান মোস্তাফিজ। সিরিজে প্রথমবার সুযোগ পাওয়া সাইফউদ্দিন বিদায় করেন এনক্রুমাহকে (৩১)। ১৭ রানে ব্যাট করতে থাকা অধিনায়ক জেসনকেও মুশফিকের তালুবন্দী করেন সাইফউদ্দিন। কাইল মেয়ার্স (১১) থিতু হতে পারেনি। শেষ দিকে পাওয়েল প্রতিরোধ গড়লেও তাকে এলবিডব্লিউ করেছেন সৌম্য। রোভম্যান পাওয়েলকে ফেরানোর পর ৩ রানের ব্যবধানে শেষ তিন উইকেট হারায় উইন্ডিজ। ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪৪.২ ওভারেই অলআউট ১৭৭ রানে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা