২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

চিরশায়িত ম্যারাডোনা

ম্যারাডোনার কফিনে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট ও তার স্ত্রী; ইনসেটে ম্যারাডোনা : ইন্টারনেট -

কোটি কোটি ভক্তের শ্রদ্ধা-শোক ও ভালোবাসার মধ্য দিয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন ফুটবল জাদুকর দিয়েগো আরমান্দো ম্যারাডোনা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সের অদূরে বেল্লা ভিস্তায় বাবা-মায়ের সমাধির পাশেই সমাহিত করা হয় এই ফুটবল জাদুকরকে। এদিন ভক্তদের পদচারণায় বুয়েন্স আয়ার্সের সড়কগুলো হয়ে ওঠে জনসমুদ্রে। ভক্ত-সমর্থকরা কিংবদন্তিকে শ্রদ্ধা জানালেও শেষকৃত্য আয়োজন ছিল একান্তই পারিবারিক। পরিবার ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা মিলিয়ে ২৪ জনেরমতো ছিলেন শেষকৃত্যে। এমনটাই জানিয়েছে বিবিসির খবরে। সমাহিত করার আগে প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেস কাসা রোসাদায় ম্যারাডোনার কফিনটি রাখা হয় ভক্তদের শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।
আর্জেন্টিনার জাতীয় পতাকা ও ম্যারাডোনার প্রতীকে পরিণত হওয়া ১০ নম্বর জার্সিতে মোড়ানো ছিল কফিন। করোনা সংক্রমণের শঙ্কা উপেক্ষা করে লাখো ভক্ত সমবেত হয়েছিলেন শেষবারের মতো প্রিয় ফুটবলারের কফিন স্পর্শের আশায়। কারো চোখে পানি হাতে ফুল। কারো পরনে ছিল ম্যারাডোনার ছবি সম্বলিত ১০ নম্বর জার্সি। কেউবা আবার দূর থেকেই প্রিয় মানুষটিকে হাওয়ায় ছুড়ে দিয়েছেন চুমু। প্রার্থনাসহ নানানভাবে আবেগের প্রকাশ করেছেন ভক্তরা।
কাসা রোসাদায় লাখো ভক্তকে সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়েছে আর্জেন্টাইন পুলিশকে। প্রেসিডেন্ট প্যালেস অভিমুখে এক কিলোমিটারের চেয়ে বেশি লম্বা লাইনের ভক্তদের ঠেকাতে পুলিশ একপর্যায়ে রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাসও ছুড়েছে। তবু সামলানো যায়নি ম্যারাডোনা পাগল ভক্তদের।
এ দিকে ম্যারাডোনার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে আর্জেন্টিনা। জাতীয় দলের অবিস্মরণীয় অধিনায়কের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে পেশাদার লিগ কাপের নাম বদলে ‘দিয়েগো আরমান্দো ম্যারাডোনা কাপ’ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। অন্য দিকে ইতালিয়ান ক্লাব নাপোলি তাদের স্টেডিয়াম ‘স্টাডিও সান পাওলো’র নাম ম্যারাডোনার নামে রাখার সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছে। এই নাপোলির স্বর্ণযুগের মহানায়ক ছিলেন ম্যারাডোনা।
আর্জেন্টাইন ফুটবল কিংবদন্তি দিয়েগো ম্যারাডোনা বুধবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ১৯৮৬ সালে আর্জেন্টিনাকে প্রায় একাই বিশ্বকাপ জেতানো এই ফুটবলারের মাত্র দুই সপ্তাহ আগেই মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হয়েছিল। হাসপাতাল ছেড়ে ফিরেছিলেন নিজ বাড়িতে। এর কয়েকদিন পরে তিগ্রেতে নিজ বাড়িতেই শেষ নিঃশ^াস ত্যাগ করেন তিনি। মাত্র ৬০ বছর বয়সে কোটি ফুটবল ভক্তকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন হলেন বাঁ-পায়ে নিখুঁত কারুকার্যের জন্ম দেয়া এই ফুটবল নক্ষত্র।


আরো সংবাদ



premium cement