২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

লাইটারেজ ও নৌযান কর্মবিরতিতে চট্টগ্রাম বন্দরে স্থবিরতা

-

বাংলাদেশ লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কর্মবিরতির কারণে স্থবির হয়ে পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের পণ্য খালাস কার্যক্রম। এতে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে এবং কর্ণফুলীর ১৬ ঘাটে নিত্য পণ্য খালাস বন্ধ থাকার পাশাপাশি নৌপথে পণ্য পরিবহন বন্ধ রয়েছে। কর্মবিরতির কারণে প্রায় ১৬ শ’ লাইটার জাহাজ কর্ণফুলী নদীতে অলস বসে আছে এবং এর মধ্যে দুই শতাধিক পণ্যবাহী বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের মাঝে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।
বিদেশ থেকে আমদানিকৃত গম, ভুট্টা, ডাল, সার, চিনি, সিমেন্ট ক্লিংকার, পাথর, কয়লা, ভোজ্যতেলসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্য বড় কার্গো জাহাজে আমদানি করা হয়। এসব জাহাজ একদিন অলস বসে থাকলে ১০ হাজার ডলার পর্যন্ত ক্ষতি হয়। কর্ণফুলী নদীর গভীরতা কম থাকায় এসব পণ্যবাহী বড় জাহাজ বহির্নোঙরে (সাগরে) নোঙর করে লাইটার জাহাজে (ছোট জাহাজ) পণ্য খালাস করে নদীপথে বিভিন্ন নদীবন্দর ও শিল্পকারখানার ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। গত সোমবার মধ্যরাত থেকে শ্রমিকদের কর্মবিরতি শুরু হওয়ায় এ সব পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নবী আলম মাস্টার নয়া দিগন্তকে বলেন, সোমবার মধ্যরাত থেকে আমাদের কর্মবিরতি চলছে। চট্টগ্রাম বন্দর বহির্নোঙর এবং কর্ণফুলী নদীর বাংলাবাজার থেকে সদরঘাট পর্যন্ত ১৬টি ঘাটে পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে। নদীপথে পণ্যবাহী কোনো নৌযান চলাচল করছে না। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো: ওমর ফারুক জানান, বহির্নোঙরে লাইটার জাহাজ চলাচল না করলেও বন্দরের মূল জেটিতে কনটেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিং স্বাভাবিক রয়েছে।
আশুগঞ্জ বন্দরে আটকা অর্ধশতাধিক তেল ও পণ্যবাহী জাহাজ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা জানান, সারাদেশে নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ডাকাতি পুলিশি নির্যাতন বন্ধসহ ১১ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের নৌ ধর্মঘট চলছে। ধর্মঘটের কারণে দু’দিন ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌবন্দরে আটকা পড়েছে অর্ধশতাধিক তেল ও পণ্যবাহী জাহাজ।
গতকাল বুধবার সরেজমিনে আশুগঞ্জ বন্দরে গিয়ে দেখা যায়, চার শতাধিক নৌযান শ্রমিক অলস সময় পার করছেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে ধর্মঘটের কারণে কাজে যোগ দেননি নৌ শ্রমিকরা। ফলে জাহাজ থেকে পণ্য খালাস সম্ভব হচ্ছে না।
আশুগঞ্জ নৌবন্দর সূত্রে জানা যায়, সারা দেশে নৌ-পথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, পুলিশি নির্যাতন, শ্রমিকের বিরুদ্ধে মামলা বন্ধ, বকেয়াসহ খাদ্যভাতা প্রদান, নৌ পরিবহন অধিদফতরের অব্যবস্থাপনা ও শ্রমিক হয়রানি বন্ধ, ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস, প্রভিডেন্ট ফান্ড গঠন, মৃত্যুকালীন ভাতা ১০ লাখ টাকা নির্ধারণসহ ১১ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৯ অক্টোবর রাত থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য নৌযান ধর্মঘট শুরু হয়। কেন্দ্রীয় নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে শ্রমিকরা এই ধর্মঘট শুরু করে।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের আশুগঞ্জের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ বাহার জানান, ২০১৮ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে ১১ দফা দাবিতে আমরা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করি। কিন্তু নৌযান মালিকরা আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো এখনো মেনে নেননি। যার কারণে আবারো আমরা ধর্মঘট পালন করছি। তবে সাধারণ মানুষের চলাচলের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে যাত্রীবাহী যান চলাচল ধর্মঘটের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান।


আরো সংবাদ



premium cement