২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বিএনপির ভার্চুয়াল আলোচনা

অবরুদ্ধ গণতন্ত্রের মুক্তির প্রত্যাশা

-

‘অবরুদ্ধ গণতন্ত্রের মুক্তি’-এর প্রত্যাশায় সামনে এগিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল শনিবার বিকেলে এক ভার্চুয়াল আলোচনায় বিএনপি মহাসচিব এ অঙ্গীকারের কথা উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন, এ ধরনের মহামারীর পরে একেকটা পরিবর্তন আসে, যুগের পরিবর্তন হয়, সভ্যতার পরিবর্তন হয়ে যায়। আসুন আজকে আমরা সবাই মিলে এ পরিবর্তনকে নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাই। গণতন্ত্রের মুক্তি হোক এবং মানুষের মুক্তি হোক। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পাক এবং পরিপূর্ণভাবে বাংলাদেশ মুক্তি পাকÑ এ হলো আজকে আমাদের অঙ্গীকার।
করোনাভাইরাস সংক্রমণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভার্চুয়াল আলোচনার নতুন অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, এ ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান যা একেবারেই আমাদের জন্য নতুন বিশেষ করে রাজনীতিবিদদের কাছে এটা একেবারেই নতুন। অনেকে বলেছেন, সামনে শ্রোতা থাকবে না, দর্শক থাকবে না- আমরা কার সামনে বক্তব্য রাখব। কিন্তু আপনি আজকে তিন লাখের ওপরে মানুষের সামনে, চার লাখের ওপরে মানুষের সামনে বক্তব্য রেখেছেন। সুতরাং পরিবর্তনটাকে ধরতে হবে।
শহীদ জিয়াউর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তার সবচেয়ে বড় অবদান তিনি এ জাতিকে একটি স্বাতন্ত্র্য দিয়েছিলেন, একটি পরিচয় দিয়েছিলেন। সে জন্য যখন তিনি শাহাদতবরণ করলেন, তার জানাজায় লাখ লাখ ক্রন্দনরত মানুষের সামনে ইমাম সাহেব আল্লাহর দরবারে হাত তুলে এ কথা প্রার্থনা করলেন যে, আল্লাহ বাংলাদেশকে হেফাজত করুন। তখন সেই লাখো মানুষ ডুকরে কেঁদে উঠেছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের সাথে জিয়াউর রহমান একাকার হয়ে গিয়েছিলেন। সেই কারণে জিয়া, জিয়ার দর্শন, জিয়ার ধানের শীষ বাংলাদেশের মানুষের কাছে আজো এত প্রিয়।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৯তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভার্চুয়াল এ আলোচনা হয়। বিকেল সাড়ে ৩টায় আলোচনা শুরু হয়ে শেষ হয় বিকেল ৫টায়। নেতারা জানান, গুলশানে ‘ফিরোজা’য় দলের চেয়ারপারসন অসুস্থ খালেদা জিয়া ও লন্ডন থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ইন্টারনেটে এ ভার্চুয়াল আলোচনা শুনেন।
স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শকে এ দেশে টিকিয়ে রাখতে হলে জনগণের স্বার্থে বিএনপিকে আরো শক্তিশালী হতে হবে। জনগণ বিএনপির পেছনে আছে। অতীতে যে কয়টা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রত্যেকটাতে তা প্রমাণিত হয়েছে। সরকারি দল যারা এখন দেশ পরিচালনা করছে তারা বুঝতে পেরেছে জনগণ যদি ভোট দিতে পারে তাহলে বিএনপিকে ক্ষমতায় বসাবে। এজন্য জনগণকে ভোট দেয়ার সুযোগ দেয়নি তারা। আজকে করোনাভাইরাস বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বকে কাবু করে ফেলেছে। এ ধরনের মহামারীর পরে রাজনৈতিক-সামাজিক এবং বিশ্বব্যবস্থায় পরিবর্তন আসে। আমি প্রত্যাশা করব এ পরিবর্তনে যাতে করে বাংলাদেশে সত্যিকারভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়, অর্থনৈতিক মুক্তি হয় যার জন্য জনগণ মুক্তিযুদ্ধ করেছিল, যাতে করে সামাজিক যে দুরবস্থা, যে লুটেরা ব্যবসা-বাণিজ্য চলছে সেসব দূর হয়। সে জন্য বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রতি আমার আহ্বান আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকেন।
স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ মুক্তিযদ্ধের ওপর লেখা বিভিন্ন বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এটা নিয়ে যারা বিতর্ক করছেন তারা বিতর্কের খাতিরে বিতর্ক করছেন। এ বিতর্ক তুলে শহীদ জিয়াকে খাটো করা যাবে না, তাকে খাটো করে কোনো লাভ হবে না। বিএনপির ওপর শত নিপীড়ন-নির্যাতনের পরে শহীদ জিয়ার আদর্শে গড়া বিএনপি এখনো টিকে আছে, টিকে থাকবে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে এমন একটা বিশাল অপরাধ করে ফেলেছেন যে, আওয়ামী লীগের কিছু ছিনতাই করে নিয়েছেন। জিয়াউর রহমান তো আওয়ামী লীগের কিছু ছিনতাই করেন নাই। তিনি দেশের মানুষের জন্য স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেটা তারা (আওয়ামী লীগ) ভুলানোর জন্য কত কথা কতভাবে বলছেন। টেলিভিশনসহ সব দখল করে ফেলেছেন আপনারা। তিনি বলেন, যে জাতি বীরকে সম্মান দেয় না, সেই জাতিতে বীর জন্মায় না। আমরা প্রমাণ দেখলাম গত কয়েক দিনে। দেখলাম বিদেশ থেকে এলো এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, স্পেশাল প্লেন। অর্থাৎ চোরের কদর করছেন খুব ভালো করে। দেশের মানুষের জন্য নিজ দেশে আসা-যাওয়া বন্ধ, কিন্তু বিশেষ শ্রেণীর বিদেশে যাওয়া-আসা কোনো কিছু বন্ধ নাই।
স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, জিয়াউর রহমানের সব কিছুতে একটা দূরদর্শিতা ছিলÑ এটা আমার মনে হয়েছে। তিনি রাজনীতিতে এসে সাধারণ মানুষের সাথে মিশতে গিয়ে বলেছেন, আই মেইক পলিটিকস ডিফিকাল্ট। এটার অপব্যাখ্যা হয়েছে। অর্থাৎ ঘরে বসে ৫ বছর পর আমি মন্ত্রী-এমপি হবো। জিয়াউর রহমান রাজনীতিতে পরিবর্তন এনেছেন। তিনি মাইলের পর মাইল জমির আইল দিয়ে হেঁটে মানুষের কাছে গেছেন। তখন অন্যা রাজনীতিবিদরা আর ঘরে বসে থেকে রাজনীতি করার সুযোগটা হারিয়ে ফেলেছেন। তিনি বলেন, আজকে গণতন্ত্র বন্দী, গণতন্ত্র ছটফট করছে। আমাদেরকে সেই গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কঠোর পরিশ্রম করছেন বিদেশের মাটিতে থেকেও। আমরা আশা করব তার এ পরিশ্রম সফল হবে।
মির্জা ফখরুলের পরিচালনায় এ আলোচনায় আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মাহবুবউল্লাহ, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম।নিজস্ব প্রতিবেদক


আরো সংবাদ



premium cement
চুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত, ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত আমদানি ব্যয় কমাতে দক্ষিণাঞ্চলের সূর্যমুখী তেলের আবাদ পাকুন্দিয়ায় গানের আসরে মারামারি, কলেজছাত্র নিহত আবারো হার পাকিস্তানের, শেষ সিরিজ জয়ের স্বপ্ন পাটকেলঘাটায় অগ্নিকাণ্ডে ৩ দোকান পুড়ে ছাই ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা শুরু দোয়ারাবাজারে পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যা : স্বামীর আমৃত্যু কারাদণ্ড গাজীপুরে ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার ভারতে দ্বিতীয় পর্বে ৮৮ আসনে ভোট খালেদা জিয়ার সাথে মির্জা ফখরুলের ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত

সকল