২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশী হত্যা

মুক্তিপণের টাকা দিতে রাজি ছিল পরিবার, তবুও বাঁচল না কামরুল

-

লিবিয়ায় গুলিতে নিহত ২৬ বাংলাদেশীর মধ্যে রয়েছেন ফরিদপুরের সালথা উপজেলার কবির শেখের ছেলে মো: কামরুল ইসলাম শেখ। একটু সচ্ছলতার আশায় দরিদ্র পিতা তাকে জমি বিক্রি করে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে বিদেশ পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু মানবপাচারকারী চক্রের দাবি মতো চাঁদার টাকা না দেয়ায় অন্যদের সাথে তাকেও গুলি করে হত্যা করা হয়। নিহত কামরুল ইসলামের স্ত্রী ও দুই বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। কামরুলের মৃত্যুর খবর জানতে পেরে তার পরিবারে চলছে এখন শোকের মাতম। উপার্জনক্ষম কামরুলকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে পুরো পরিবার।
নিহতের পিতা কবির শেখ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, গত ডিসেম্বর মাসে গোপালগঞ্জ জেলার মোকসেদপুর উপজেলার গোয়ালা গ্রামের জনৈক আব্দুর রবের মাধ্যমে সাড়ে চার লাখ টাকার বিনিময়ে কামরুলকে বিদেশ পাঠায় তার পরিবার। এরপর সে ভারত ও দুবাই হয়ে লিবিয়ায় পৌঁছে। তিনি জানান, সংসারে অভাব অনটন লেগে থাকত। একটু সুখের আশায় দালালের কথা মতো সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে ও জমি বিক্রি করে সাড়ে চার লাখ টাকা জোগাড় করে ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছিলাম।
নিহতের বড় ভাই ফারুক শেখ জানান, লিবিয়ায় পৌঁছার পর দালাল চক্র তাকে অন্যদের সাথে একটি শহরে আটকে রেখে নির্যাতন করে। এরপর মোবাইল ফোনে তাদের সাথে যোগাযোগ করে কামরুলকে ইতালি পাঠানোর কথা বলে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে পাচারকারী চক্র। নইলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় তারা। ভাইয়ের জীবনের কথা ভেবে টাকা দিতে রাজিও হয়েছিলেন বলে জানান তিনি। কিন্তু সেই টাকা পাঠানোর আগেই মিজদাহ শহরে কামরুলসহ ২৬ বাংলাদেশীকে গুলি করে হত্যা করার খবর পান তারা।
সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসিব সরকার বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তাদেরকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ^াস দিয়েছি আমরা। আইনি প্রক্রিয়া শেষে কামরুলের লাশ দ্রুত দেশে আনার ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন, যে দালাল চক্রের দ্বারা এমন ঘটনা ঘটেছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ছাড়া এ ঘটনায় ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার দুলকান্দি গ্রামের বেলায়েতের ছেলে সাজিদ পেটে গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে জানা গেছে।


আরো সংবাদ



premium cement