০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬
`
গুম খুন লাশ

গুম খুন লাশ

নাটোরে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গুম লৌহজংয়ে পরীক্ষার্থীর গলাকাটা লাশ ফেনীতে রাস্তায় যুবকের লাশ ঝালকাঠিতে আসামির গুলিবিদ্ধ লাশ গোবিন্দগঞ্জে নিখোঁজ গৃহবধূর লাশ
-

নাটোরে জামিল হোসেন মিলন নামে একজনকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছে তার পরিবার। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প থেকে এমন অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। মিলন শহরের তালতলা হাফরাস্তা এলাকার এমদাদুল হক নিয়াজীর ছেলে। এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার সকালে নাটোর প্রেস কাবের সামনের সড়কে বিােভ মিছিল করেন এলাকাবাসী। পরে পুলিশের আশ্বাসে তারা বিােভ বন্ধ করেন। শীর্ষ কাগজ।
নিখোঁজ মিলনের বাবা এমদাদুল হক নিয়াজী জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে একটি মাইক্রোবাসে করে কয়েকজন সাদা পোশাকধারী তার বাড়িতে ঢুকে কোনো কথা না বলেই মিলনকে তুলে নিয়ে যায়। পরে পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি নিয়ে থানায় যোগাযোগ করলে পুলিশ কাউকে তুলে নেয়ার কথা অস্বীকার করে তবে মিলনকে তুলে নেয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে আশ্বাস দেন নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) ফরিদুল ইসলাম।
এ দিকে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে নিখোঁজ এসএসসি পরীার্থী নিরবের (১৫) গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে দু’জনকে আটক করেছে।
পদ্মাসেতু কুমারভোগ পুনর্বাসন কেন্দ্রের পশ্চিম পাশের ডোবা থেকে গতকাল শুক্রবার দুপুরে নিরবের লাশ উদ্ধার করে লৌহজং থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে সে নিখোঁজ ছিল। আটককৃত আলাল (১৭) ও রাব্বি (১৮) নিরবের সহপাঠী।
নিরব কুমারভোগ পুনর্বাসন কেন্দ্রের মো: নাঈম খানের ছেলে এবং মেদেনীমণ্ডল আনোয়ার চৌধুরী উচ্চবিদ্যালয় থেকে এবার মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার্থী ছিল। লৌহজং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: মনির হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বৃহস্পতিবার নিরবকে বাসা থেকে তার এক বন্ধু ডেকে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। রাতে নিখোঁজের একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয় পরিবারের প থেকে। গতকাল দুপুরে কুমারভোগ পুনর্বাসন কেন্দ্রের পশ্চিম পাশের বিলের কাছে কচুরিপানায় ঘেরা ডোবা থেকে তার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়।
ওসি বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যা। গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। তবে কে বা কারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা এখনো জানা যায়নি। আজ শনিবার ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে বলে পুলিশ জানায়।
ফেনী প্রতিনিধি জানান, ফেনী শহরতলির কালিদহ ইউনিয়নের আলোকদিয়া রাস্তার পাশে গতকাল ভোরে পড়ে থাকে এক অজ্ঞাত লাশ। তার সারা দেহে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন। পুলিশ খবর পেয়ে লাশটি উদ্ধার করে ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। নানাভাবে খবরটি ছড়িয়ে পড়লে বিকেলে বড় ভাই মো: হানিফ মর্গে এসে তার লাশ শনাক্ত করেন। নিহত ব্যক্তি মো: এয়াছিন (৩০)। তিনি পার্বত্য খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলাধীন লামকু পাড়ার মো: আবদুল আলিমের ছেলে। ভাই হানিফ জানান, ১০ বছর আগে এয়াছিন নিখোঁজ হয়। এত দিনে তিনি কোথায় ছিলেন তা জানতেন না পরিবারের সদস্যরা। এখানে এসে জেনেছেন তিনি ছাগলনাইয়ায় একটি ডেকোরেটরে কাজ করতেন।
ফেনী মডেল থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ জানান, লাশ উদ্ধারের পর ডেকোরেটরের বয় ও মাঝির মাধ্যমে তার পরিবারের খোঁজ মেলে। তিনি দীর্ঘ দিন ছাগলনাইয়ায় বসবাস করেছেন। আজ ময়নাতদন্তের কথা রয়েছে। তবে কী কারণে এয়াছিনের এ পরিণতি পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে।
ঝালকাঠি সংবাদদাতা জানান, লেমিনেটিং করে নিজের স্বীকারোক্তি লেখা ধর্ষণ মামলার এক আসামির লাশ উদ্ধার করেছে রাজাপুর থানা পুলিশ। গতকাল দুপুরে রাজাপুর উপজেলার আঙ্গারিয়া গ্রামের পরিত্যক্ত একটি ইটভাটার পাশ থেকে রাকিব হোসেন মোল্লা নামে ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। রাকিব পার্শ্ববর্তী পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলার ভিটাবাড়িয়া গ্রামের কালাম মোল্লার ছেলে। রাকিব ঢাকার একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র। সে ভাণ্ডারিয়া থানায় একটি ধর্ষণ মামলার আসামি। এর আগে গত ২৬ জানুয়ারি কাঁঠালিয়ার বীণাপানি গ্রামের একটি মাঠ থেকে এ মামলার অপর আসামি সজল জোমাদ্দারের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
রাজাপুর থানার ওসি জাহিদ হোসেন জানান, দুপুরে আঙ্গারিয়া গ্রামের একটি ইটভাটার পাশে রাকিবের লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। রাজাপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাথার দুই পাশে দু’টি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে। নিহতের বুকে লেমিনেটিং করা একটি কাগজে লেখা ছিল ‘আমি পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ার কারিমা আক্তারের ধর্ষক রাকিব। ধর্ষণের পরিণতি ইহাই। ধর্ষকেরা সাবধান! হারকিউলিস। খবর পেয়ে ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (রাজাপুর-কাঁঠালিয়া সার্কেল) মো: মোজাম্মেল হক রেজা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ভাণ্ডারিয়া ও রাজাপুর থানা পুলিশ জানায়, গত ১২ জানুয়ারি বেলা ১১টায় পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলার নদমুলা গ্রামের বাড়ি থেকে পার্শ্ববর্তী হেতালবুনিয়ায় নানা বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার পথে এক মাদরাসাছাত্রীকে তুলে নিয়ে পানের বরজের ভেতর ধর্ষণ করা হয়। এ মামলায় সজল ও রাকিবকে আসামি করে ১৪ জানুয়ারি ভাণ্ডারিয়া থানায় একটি মামলা করা হয়।
গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) সংবাদদাতা জানান, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে নিখোঁজের পাঁচ দিন পর রেহেনা খাতুন (২৭) নামে এক সন্তানের জননী গৃহবধূর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে স্বামী শাকিল মিয়া। তবে শাকিলের বাবা এজাদুল ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ।
গতকাল দুপুরে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার গুমানিগঞ্জ ইউনিয়নের মরা করতোয়া নদীর কচুরিপানার নিচ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। রেহেনা খাতুন গুমানিগঞ্জ ইউনিয়নের কুড়িপাইকা গ্রামের শাকিল মিয়ার স্ত্রী। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ১০ বছর আগে শাকিলের সাথে রেহেনার বিয়ে হয়। তাদের ৯ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। বিয়ের পর থেকে রেহেনার সাথে শাকিলের পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহ চলছিল। গত সোমবার থেকে রেহেনা বেগম হঠাৎ করে নিখোঁজ হয়। তার বাবার বাড়ি এবং আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে খোঁজ নিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। গতকাল দুপুরে মরা করতোয়া নদীর কচুরিপানার নিচে তার লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। গোবিন্দগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ কে এম মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গলাকাটা ও হাতকাটা অবস্থায় রেহানার লাশ উদ্ধার করা হয়। তাকে গলা কেটে হত্যা করে লাশ ফেলে রাখা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহের জেরে স্বামী শাকিল মিয়া ও তার পরিবারের লোকজন পরিকল্পিতভাবে রেহেনাকে হত্যা করে লাশ ফেলে রাখে। এ ঘটনার পর থেকে স্বামী শাকিল মিয়া তার একমাত্র সন্তানকে নিয়ে পলাতক রয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement