৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের বাঁধভাঙা জয়োল্লাস

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের বাঁধভাঙা জয়োল্লাস - সংগৃহীত

মস্কোর লুজনিকিতে ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ফ্রান্সের বিজয়ের পর বাঁধভাঙা উল্লাসে মেতেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট কোলিন্দা গ্র্যাবারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিভিআইপি গ্যালারিতে খেলা দেখার সময় ফ্রান্স গোল দিলে আসন ছেড়ে দাঁড়িয়ে উল্লাস করতে থাকেন ম্যাক্রোঁ। 

যদিও ম্যাচে জয়ের জন্য পরে প্রতিপক্ষ ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট গ্র্যাবার ও আয়োজক রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের পক্ষ থেকেও অভিনন্দন পান ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট। 

তারুণ্য নির্ভার ফ্রান্সের কাছে হেরে শিরোপার স্বপ্নভঙ্গ হল ক্রোয়েশিয়ার। আর এতে করে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের শিরোপা ঘরে তুললো লস ব্লুজরা। আর কোচ ও খেলোয়াড় হিসেবে শিরোপা ছুঁয়ে তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে রেকর্ড গড়লেন দিদিয়ের দেশম।

১৯৯৮ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জিতেছিল ফ্রান্স। এরপর তা অধরাই ছিল। রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে ৪-২ গোলে হারিয়ে ফের চ্যাম্পিয়ন হলো ফরাসিরা। আবারো সোনালী ট্রফিতে চুমু আঁকল তারা ।

ফ্রান্সের বিশ্বকাপের স্বপ্নের শিরোপা জয়ের পর বিজয়োৎসব শুরু হওয়ার পরপরই মাঠে নামে ঝুম বৃষ্টি। বিশ্বকাপের পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনসহ অতিথিরা ভিজেছেন বৃষ্টিতে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ছাতার নিচে থাকলেও বৃষ্টিতে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট কোলিন্দা গ্রাবার- কিতারোভিচের বিশেষ রসায়ন ক্যামেরার চোখ ফাঁকি দিতে পারেনি। তারা দুজনই একসঙ্গে বৃষ্টিতে ভিজেছেন। বিভিন্ন খুনসুটি করেছেন। একে অপরকে জড়িয়ে ধরার দৃশ্যও দেখা গেছে টিভি পর্দায়। এর আগে গ্যালারিতেও দুজন একসঙ্গে বসে খেলা দেখেছেন।

আর বিশ্বকাপ পুরস্কার মঞ্চে দেখা যায়, একেকজন খেলোয়াড় পুরস্কার নিতে আসছেন আর তাকে জড়িয়ে ধরছেন ক্রোয়েশিয়ার নারী প্রেসিডেন্ট কোলিন্দা গ্রাবার- কিতারোভিচ। এ দৃশ্য দেখে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁও তা অনুসরণ করেন। প্রত্যেক খেলোয়াড়কে দুই প্রেসিডেন্ট যেভাবে জড়িয়ে ধরেছেন তা যেন এ বিশ্বকাপের সেরা উপহার!

২৫ বছরের বড় নারীর সাথে যেভাবে প্রেম হয়েছিল ম্যাক্রোঁর

দু'জনের বয়সের ব্যবধান ২৫ বছর। সম্পর্কের সূত্রপাতও বেশ অস্বাভাবিকভাবে। ষোল বছরের এক কিশোর প্রেমে পড়েন ৪০ বছর বয়সী এক নারীর, যিনি ছিলেন তিন সন্তানের জননী। তিনি হলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।

ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর বয়স তখন মাত্র ১৬ - আর সেই সময়েই তিনি ৪১ বছর বয়সী নারীর প্রেমে পড়েন। তবে তাঁর পরিবার এটি থামাতে চেয়েছিল। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি।

ম্যাক্রোঁর স্ত্রী একসময় তাঁর স্কুলের নাটকের শিক্ষিকা ছিলেন। ফ্রান্সের রাজনীতিতে ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর নাটকীয় উত্থান হয়েছে। অথচ স্কুল জীবনে ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ কখনোই রাজনীতিবিদ হতে চাননি। তিনি চেয়েছিলেন একজন ঔপন্যাসিক হতে। স্কুলে জীবনে তিনি খুবই মেধাবী ছিলেন।

ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর স্কুল শিক্ষিকা এবং বর্তমানে তার স্ত্রী ব্রিজিথ তোনিয়ো ছোট বেলা থেকেই তাকে চেনেন। ব্রিজিথ তোনিয়ো মনে করেন, ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ স্কুল জীবনে অন্যদের চেয়ে ব্যতিক্রমী ছিল।

ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ যখন ঐ স্কুল ছেড়ে যান, তারপর থেকে তাঁর প্রাক্তন এই শিক্ষিকার সাথে আরো গভীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ব্রিজিথ তোনিয়ো বলেছেন, ম্যাক্রন স্কুল ছেড়ে যাবার পর তাদের দু'জনের মধ্যে টেলিফোনে দীর্ঘ কথোপকথন হতো।

ধীরে-ধীরে শিক্ষিকার মন জয় করেন ছাত্র। দু'জনের মধ্যে যখন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে, তখন শিক্ষিকা ছিলেন বিবাহিতা এবং তিন সন্তানের জননী। আগের স্বামীকে ছেড়ে তিনি ২০০৭ সালে বিয়ে করেন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে।

তাদের দু'জনের বয়সের ব্যবধান নিয়ে অনেক কথা শুনতে হয়েছে ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং ব্রিজিথকে। মাঝেমধ্যে এসব সমালোচনার জবাবও দিয়েছেন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। একবার তিনি বলেছিলেন, "বয়সের ব্যবধানটা যদি উল্টো হতো অর্থাৎ আমি যদি আমার স্ত্রীর চেয়ে ২৪ বছরের বড় হতাম, তাহলে বিষয়টিকে কেউ অস্বাভাবিক বলতো না। মানুষ ভিন্ন কিছু দেখে অভ্যস্ত নয়।"

অনেকে বলছেন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর প্রেম এবং বিয়ে তাঁর জীবনে 'আত্মবিশ্বাস' তৈরিতে একটি প্রভাব ফেলেছে। ফরাসি একজন সাংবাদিক এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ যদি তার চেয়ে ২৪ বছরের বড় এবং তিন সন্তানের এক জননীকে আকর্ষণ করতে পারেন, তাহলে একই উপায়ে তিনি ফ্রান্সকেও জয় করতে পারবেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement