৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


এমন হার আর কবে হেরেছিল আর্জেন্টিনা?

ফুটবল
ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে গতকালের ম্যাচে আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসি - ছবি: ফক্স স্পোর্টস

রাশিয়া ফুটবল বিশ্বকাপে ‘ডি’ গ্রুপে গত রাতে ক্রোয়েশিয়ার কাছে ৩-০ গোলে হারের লজ্জা পেয়েছে বর্তমান রানার্স আপ আর্জেন্টিনা। তাই তাদের লজ্জাজনক রেকর্ডগুলো চলে আসছে সামনে। কারণ ফুটবল বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে আর্জেন্টিনার এমন বাজে শুরু যে আগে কখনো হয়নি। এমনকি ২০০২ বিশ্বকাপেও না। যেবার বাছাই পর্বে দাপটের সঙ্গে খেলেও প্রথম রাউন্ডে বাদ পড়েছিল তারা, সেবারও এমন লজ্জা অন্তত পেতে হয়নি।

আর্জেন্টিনার গ্রুপ পর্বে বড় ব্যবধানে হারের লজ্জা পেয়েছিল ৬০ বছর আগে। সুইডেনে অনুষ্ঠিত ১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপে চেকোস্লোভাকিয়ার কাছে ৬-১ গোলের বড় ব্যবধানে হারে আর্জেন্টিনা। এটাই গ্রুপ পর্বে তাদের সবচেয়ে বড় পরাজয়। অথচ চেকোস্লোভাকিয়া দেশটিই এখন আর নেই। পৃথিবীর মানচিত্র কতটা বদলে গেছে। এরপর আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়নই হয়েছে দুবার। ফাইনালে উঠেছে আরও দুবার। ঐ ব্যবধানে হারের পর ৬০ বছর পর গ্রুপ পর্বে আবারো বড় হারের স্বাদ নিলো লিওনেল মেসির দল।

১৯৫৮ সালের আসরে প্রথমবারের মতো গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছিলো আর্জেন্টিনা। এরপর অবশ্য আরও দু’বার বিশ্বকাপ আসরে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় ঘটে তাদের। ১৯৬২ ও ২০০২ সালে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয় আর্জেন্টিনা।

১১ বিশ্বকাপ পর
১১ বিশ্বকাপ পর আর্জেন্টিনা এই প্রথম গ্রুপ পর্বের প্রথম দুটি ম্যাচ জিততে ব্যর্থ হলো। ১৯৭৪ সালে সর্বশেষ এমনটা হয়েছিল। পোল্যান্ডের কাছে ৩-২ গোলে হেরে যাওয়ার পর ইতালির সঙ্গে ১-১ ড্র করেছিল তারা।

আরো পড়ুন :
বিশ্বকাপে ৬৪৭ মিনিট গোলবিহীন মেসি
আইসল্যান্ডের সাথে ১-১ গোলে ড্র’র পর রাশিয়া ফুটবল বিশ্বকাপে ‘ডি’ গ্রুপে ক্রোয়েশিয়ার কাছে ৩-০ গোলের ব্যবধানে হারে বর্তমান রানার্স আপ আর্জেন্টিনা। দু’ম্যাচের একটিতেও গোল করতে পারেননি আর্জেন্টিনার অধিনায়ক লিওনেল মেসি। ফলে বিশ্বকাপ আসরে সর্বমোট ৬৪৭ মিনিট গোল করতে ব্যর্থ হয়েছেন মেসি।

২০১৪ সালে অর্থাৎ গত বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়ে গোল করেছিলেন মেসি। সেটিই ছিলো বিশ্বকাপে মেসির সর্বশেষ গোল। এরপর গেল বিশ্বকাপে শেষ ষোলো, কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল ও ফাইনাল ম্যাচে অংশ নেন মেসি। কিন্তু কোনটিতেই গোল করতে পারেননি।

তাই গত বিশ্বকাপে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধসহ পরের চারটি ম্যাচে এবং এবারের আসরে গ্রুপ পর্বে প্রথম দু’ম্যাচ সহ সর্বমোট ৬৪৭ মিনিট গোলবিহীন মেসি। গত আসরের কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল ও ফাইনালের ম্যাচ অতিরিক্ত সময়েও গড়িয়েছিলো।

আরো পড়ুন :
বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার সর্বোচ্চ সফলতা কোনটি?
নাইজেরিয়াকে ২-০ গোলে হারানোর পর রাশিয়া ফুটবল বিশ্বকাপে ‘ডি’ গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে বর্তমান রানার্স আপ আর্জেন্টিনাকে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত করে ক্রোয়েশিয়া। এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ‘ডি’ গ্রুপ থেকে শেষ ষোলো নিশ্চিত করে ক্রোয়েশিয়া।

২০ বছর পর বিশ্বকাপ আসরে গ্রুপ পর্বের বাধা টপকাতে সক্ষম হলো ক্রোটরা।

১৯৯৮ বিশ্বকাপে অভিষেক ঘটে ক্রোয়েশিয়ার। ঐ আসরেই বাজিমাত করে তারা। ‘এইচ’ গ্রুপে ৩ ম্যাচের ২টিতে জিতে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শেষ ষোলোতে উঠে ক্রোয়েশিয়া। নক আউট পর্বে রোমানিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট কাটে তারা।

শেষ আটে আরও বড় চমক দেয় ক্রোয়েশিয়া। জার্মানির মতো দলকে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত করে সেমিফাইনালে নাম লেখায় দলটি।
তবে সেমিতে ফ্রান্সের কাছে ২-১ গোলে হেরে টুর্নামেন্টে থেকে ছিটকে পড়ে দলটি। এরপর তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে ২-১ গোলে হারায় তারা। ফলে ঐ আসরে তৃতীয় স্থান পায় ক্রোয়েশিয়া।

অভিষেক বিশ্বকাপে যে দলটি তৃতীয় হলো, সেই ক্রোয়েশিয়া ২০০২ ও ২০০৬ সালে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেয়। এরপর ২০১০ বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব টপকাতে পারেনি। ২০১৪ বিশ্বকাপে আবারো গ্রুপ পর্ব থেকে মিশন শেষ করে ক্রোয়েশিয়া।

তবে এবার রাশিয়ায় এক ম্যাচ হাতে রেখেই গ্রুপ পর্বের বাঁধা টপকালো ক্রোয়েশিয়া। যার অর্থ হলো ২০ বছর পর আবারো বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতে নিজেদের প্রথম আসরেই চমক দেখানো ক্রোয়েশিয়া।


আরো সংবাদ



premium cement