২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইউরোপে লকডাউন : কোন দেশে কেমন?

ইউরোপে লকডাউন : কোন দেশে কেমন? - সংগৃহীত

কোভিড ১৯ মোকাবিলায় বিশ্বের বহু দেশ লকডাউন পদ্ধতি অবলম্বন করেছে। এখন দুনিয়ার ৩০০ কোটিরও বেশি মানুষ ব্যাপক নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রয়েছেন।

সব মহাদেশের মধ্যে ইউরোপে নভেল করোনাভাইরাসের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ইউরোপের বেশ কিছু দেশ এই প্রকোপ আটকাতে জনজীবনে ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ইউরোপের যে পাঁচটি দেশে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে, সেখানে লক ডাউন কেমনভাবে চলছে একবার দেখে নেয়া যাক।

ইতালি

(জনসংখ্যা ৬ কোটি। ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যু হয়েছে এই দেশে)

নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা- অনির্দিষ্ট, ৩১ জুলাই পর্যন্ত বাড়তে পারে

কী কী নিষেধ- দেশের মধ্যে ভ্রমণ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া নিষেধ।

অনাবশ্যক কাজকর্ম, স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ।

কী ধরনের কাজ অনুমোদিত- ফার্মেসি, সুপারমার্কেট, ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিসের মত অতি প্রয়োজনীয় কাজকর্ম চালু থাকবে।

মুদির জিনিস কেনা, ডাক্তার দেখানো, বাড়ির কাছে একা একা একসারসাইজ করার জন্য বাড়ি থেকে বেরোনোর (সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত লোম্বার্ডি এলাকা ছাড়া) অনুমতি দেয়া হয়েছে।

লকডাউনের নির্দেশ অমান্য করলে ৩০০ থেকে ৫০০ ইউরো জরিমানা বা ৩ মাসের কারদণ্ড হবে। লোম্বার্ডি এলাকায় জরিমানার পরিমাণ ৫০০০ ইউরো।

স্পেন

(জনসংখ্যা ৪.৬ কোটি, সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যায় ইতালির ঠিক পরেই)

লক ডাউনের সময়সীমা- ১১ এপ্রিল

কী কী নিষিদ্ধ- প্রতিবেশী ইউরোপীয় দেশের সীমানা বন্ধ। অনত্যাবশ্যক কাজ, স্কুল, হোটেল বন্ধ।

কী কী অনুমতি রয়েছে- মুদির কেনাকাটি, মেডিক্যাল অ্যাপয়েন্টমেন্ট, ওষুধের দোকানে যাওয়ার জন্য বেরোনো যাবে। বাইরে এক্সারসাইজ করা নিষিদ্ধ, কুকুর নিয়ে বাড়ির বাইরে যাওয়া যাবে। এদিক ওদিক যাবার জন্য অনুমতি লাগবে।

লকডাউনের নির্দেশ অমান্য করবার জন্য- ৬০১ থেকে ৩০০০ ইউরো জরিমানা হতে পারে বলে পলিটিকোর রিপোর্টে জানানো হয়েছে।

ফ্রান্স

(জনসংখ্যা ৬.৭ কোটি)

লকডাউনের সময়সীমা- ১৫ এপ্রিল

কী কী নিষিদ্ধ- সমস্ত অনাত্যবশ্যকীয় পণ্য, খোলা বাজার, জন সমাবেশ নিষিদ্ধ।

কী কী অনুমতি রয়েছে- ফ্রান্সেও বাড়ির বাইরে বেরোতে হলে অনুমতি নিতে হবে এবং কেবলমাত্র অত্যাবশ্যক কাজকর্মই চালু। বাড়ি থেকে বেরোবার আগে কারণ বর্ণনা করে একটি ফর্ম ভরতে হয়। প্রতিদিন এক ঘণ্টা বাড়ির বাইরে একসারসাইজ করা যাবে। যারা হাঁটতে যান, তারা বাড়ির এক কিলোমিটারের বেশি দূর যেতে পারবেন না।

লকডাউন ভাঙার শাস্তি ১৩৫ থেকে ৩৭০০ ইউরো জরিমানা এবং ৬ মাস পর্যন্ত জেল।

জার্মানি

(জনসংখ্যা ৮ কোটি)

লক ডাউনের সময়সীমা- ২০ এপ্রিল

কী কী নিষিদ্ধ- বিভিন্ন প্রদেশে বিভিন্ন নিয়ম, তবে এখানে ইতালি, স্পেন বা ফ্রান্সের মত কড়াকড়ি লাগু হয়নি।

যেসব রেস্তোরাঁয় পিক আপ বা ডেলিভারির বন্দোবস্ত নেই, সেগুলি বন্ধ। যারা একসঙ্গে বা যৌথ পরিবারে থাকেন না, তাঁরা ছাড়া দুজনের বেশি জমায়েত নিষিদ্ধ। সারল্যান্ড ও বাভারিয়ার মত প্রদেশগুলিতে আরও বেশি কড়াকড়ি রয়েছে।

কী কী করা যাবে- কঠোরভাবে সামাজিক দূরত্ববিধি লাগু রয়েছে, কিন্তু মানুষেক বাড়ির মধ্যে আটকে থাকতে হচ্ছে না এবং তাঁরা খোলা হাওয়ায় বেরোতে পারবেন। একা একা এক্সারসাইজ করা যাবে, কিন্তু একে অন্যের সঙ্গে অন্তত দেড় মিটার দূরত্ব রাখতেই হবে।

লক ডাউনের নির্দেশ অমান্য করার শাস্তিও এক এক প্রদেশে এক একরকম। কোথাও কোথাও জরিমানার পরিমাণ ২৫ হাজার ইউরো পর্যন্তও।

ব্রিটেন

(জনসংখ্যা ৬.৬ কোটি)

লকডাউনের সময়সীমা- ১৩ এপ্রিল

কী কী অনুমোদিত নয়- যাতায়াতের উপর কঠোরভাবে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। জনসমাবেশ, অন্ত্যেষ্টি, অনুষ্ঠান সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। যাঁরা একসঙ্গে থাকেন তাঁরা ছাড়া অন্য যে কারও ক্ষেত্রে ২ জনের বেশি একসঙ্গে হওয়া যাবে না।

যে অনুমতি রয়েছে- অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবার জন্য বাড়ি থেকে বেরোনো যাবে। সাইকেল চালানো বা দৌড়োনোর মত একসারসাইজ করা যাবে। বাড়ি থেকে বেরোনোর জন্য অনুমতি প্রয়োজন নেই। নির্দেশ অমান্য করলে প্রথম অপরাধের জন্য ৬০ পাউন্ড ও দ্বিতীয় অপরাধের জন্য ১২০ পাউন্ড জরিমানা হতে পারে। অন্যথায় গ্রেফতার করা হতে পারে।
সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

 


আরো সংবাদ



premium cement