১৭ মে ২০২৪, ০৩ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫
`


দখল, মারধর আর অচল ইভিএম নিয়ে শেষ হলো ভোট

- ছবি : নয়া দিগন্ত

ভোট গ্রহণকালে ঢাকার বিভিন্ন কেন্দ্রে দিনভর ছিলো নানান নাটকিয়তা। সকাল থেকে ভোট শেষ হওয়া পর্যন্ত একাধিক কেন্দ্র ঘুরে বিভিন্ন চিত্র ধরা পড়েছে।

দখল, মারধর, অচল ইভিএম
ঢাকা-৬ নির্বাচনী আসনের সব কেন্দ্রই ছিল মহাজোট কর্মীদের দখলে। এসব কেন্দ্রে মহাজোট কর্মীরা ছিলেন মারমুখী। এখানে মহাজোট প্রার্থী জাতীয় পার্টির ফিরোজ রশীদ ও গণফোরামের সুব্রত চেীধুরী। এ আসনে ফরিদাবাদ মাদ্রাসা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় সেখানে কেন্দ্রের বাইরে ভোটারদের লাইন। লম্বা লাইন থেকে দেখে দেখে লোক নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করছেন মহাজোট প্রর্থীরা। এরপর ভেতরে প্রবেশ করে ধরা পড়ে ভিন্ন চিত্র। প্রতিটি বুথে মহাজোটের একাধিক কর্মী তদারকী করছেন। একাধিক ভোটারদের ভোট দানের গোপন রুমে নিয়ে তাদের সামনে লাঙ্গলে ভোট দানে বাধ্য করছেন। কথা না শুনার কারণে তারা জাকির নামে এক ভোটারকে মারধর করেন।

অন্যদিকে এ কেন্দ্রে একাধিক বুথের ইভিএম মেশিনও কাজ করছিরো না। কারো স্মার্টকার্ড ইভিএম মেশিনে প্রবেশের পর মেশিনে তার তথ্য আসলেও পরবর্তী ধাপে তার ফিঙ্গার প্রিন্ট মিলছে না। এনিয়ে বিপত্তিতে পড়ে ভোট না দিয়েই ফেরত যান অনেক ভোটার। একই পরিস্থিতি ছিল বিপিন রায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যায়ল ও মনিজা রহমান গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে। এ নিয়ে ভোটদানের গোপন রুমে অবস্থানরত একজনের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি দৌঁড়ে পালিয়ে যান। 

নকল এজেন্ট
ঢাকা-৫ আসনে বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে নৌকার এজেন্টের সাথে ছিলেন ধানের শীষের ‘নকল এজেন্ট’। সকালে এ আসনের যাত্রাবাড়ী বালক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, আইডিয়াল হাইস্কুল এন্ড কলেজ, শহীদ জিয়া গার্লস স্কুল এন্ড কলেজসহ একাধিক কেন্দ্র ঘুরে প্রতিটিতেই দুইজন করে এজেন্ট পাওয়া যায়। তাদের সাথে কথা বললে তারা প্রত্যেকেই নিজেদের একজন ধানের শীষ ও অন্যজন নৌকার এজেন্ট বলে দাবী করেন। পরে একাধিক সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায় এদের মধ্যে ধানের শীষের এজেন্ট দাবীদাররা নকল এজেন্ট। মূলত তারা নৌকার সমর্থক।

বাইরে ভীড়, ভেতরে ফাঁকা
ঢাকা-৪ আসনের বিভিন্ন কেন্দ্রে ছিল মহাজোট সমর্থকদের নানান নাটকীয়তা। দুপুরে একাধিক কেন্দ্র ঘুরে ভিন্ন চিত্র পাওয়া যায়। প্রতিটি কেন্দ্রের বাইরে ছিল ভোটারদের লম্বা লাইন। কিন্তুু ভেতরের চিত্র ছিল তার ঠিক উল্টো। কেএম মাইনুদ্দীন স্কুল কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় মহাজোট সমর্থকদের মহড়া। কেন্দ্রের বাইরে ভোটারদের লম্বা লাইন চোখে পড়লেও ভেতরে ছিল ফাঁকা।

অনেকে অভিযোগ করেন, ঘণ্টাব্যাপী সময় ধরে লাইনে দাড়িয়ে থাকেও কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারেননি। তাদের অভিযোগ মহাজোটের কর্মীরা নিজেদের পরিচিত ছাড়া কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে কেন্দ্রের গেটে ভীড় ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। একাধিক বুথে গিয়ে দেখা যায় বুথ খালি। মহাজোটের একাধিক কর্মীরা বুথে অবস্থান করছেন। তাদের কেউ কেউ একটু পরপর একেকজন করে ভোটার নিয়ে ভোটদান কক্ষে প্রবেশ করে আবার বের হয়ে আসছেন। একই চিত্র ছিল হাজেরা উচ্চ বিদ্যালয়সহ অন্যান্য কেন্দ্রের।


আরো সংবাদ



premium cement