সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুদের জন্য ভ্রাম্যমাণ মাদরাসা খুলেছেন মাওলানা আহমদ শফি। মাদরাসার নাম দিয়েছেন ‘আস-সুফফা কুরআন নিকেতন’। ৫ জানুয়ারি রাজধানীর খিলগাঁও কমিউনিটি সেন্টার-সংলগ্ন বস্তির পাশে এর উদ্বোধন করা হয়।
মাওলানা আহমদ শফি নয়া দিগন্ত অনলাইনকে জানিয়েছেন, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদেরকে আস-সুফফা কুরআন নিকেতন প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতি সপ্তাহে তিন দিন নিয়মিত পাঠদান করে আসছেন। শিশুদের পড়াশোনার আগ্রহী করতে ক্লাস শেষে বিরিয়ানিসহ নানা ধরনের সুস্বাদু খাবারের ব্যবস্থা করছেন তিনি।
মাদরাসায় বাংলা মৌলিক শিক্ষাসহ ইসলাম ধর্মের আবশ্যকীয় বিষয় শিক্ষা দেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
মাওলানা শফি বলেন, ‘আমাদের ভ্রাম্যমাণ মাদরাসার পথচলা শুরু হয় মাত্র পাঁচজন শিক্ষার্থী নিয়ে। এখন এর সংখ্যা ৩০ জন। ওই শিক্ষার্থীরা আগে আরবি তো নয়ই বাংলা অক্ষরও বলতে পারত না। এখন তারা কালিমা, পবিত্র কোরআনের ছোট ছোট সুরা এবং গুরুত্বপূর্ণ দোয়া বলতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘ওইসব পথশিশুর মা-বাবা এখন অনেক খুশি। ওদের মা-বাবা আমার জন্য দোয়া করে। আমার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলে, আমাদের সন্তানেরা আগে বখাটে ছেলেদের সাথে মিশত, নেশা করত, ভিক্ষাবৃত্তি করত, আপনি তাদের আলোর পথ দেখাচ্ছেন। আল্লাহ তায়ালা আপনাকে বাঁচিয়ে রাখুন।’
মাওলানা শফি আরো বলেন, ‘যেখানে আমরা শিক্ষা দেয়া শুরু করেছিলাম, সেখানকার পরিবেশ অত্যন্ত খারাপ ছিল। আমাদের মনে হলো জায়গাটি যদি শিক্ষা দানের উপযোগী করে তুলি ও পথশিশুদের মাঝে পোশাক বিতরণ করি, তাহলে এই সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে পড়াশোনার আগ্রহ আরো বেড়ে যাবে। এ উদ্দেশে আমাদের পেইজ থেকে ঘোষণা দিয়ে ভ্রাম্যমাণ মাদরাসার কাজ শুরু করি।’
সুবিধাবঞ্চিত এসব শিশুরা অভাব-অনটন ও মা-বাবার সঠিক নির্দেশনার অভাবে বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে বলেও জানান তিনি।
মাওলানা শফি বলেন, ‘এসব শিশুর মাঝে শিক্ষাদানসহ আমাদের টার্গেট হলো, তাদেরকে নেশা থেকে দূরে রাখা, কিশোর গ্যাঙ থেকে রক্ষা করা এবং আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা।’
নিজের কোনো আয়ের উৎস না থাকলেও মাওলানা শফি করোনা মহামারির সময় থেকে গরিব, অসহায়, এতিমখানা ও বৃদ্ধাশ্রমে মানুষের মুখে আহার দিয়ে আসছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা ছোট ছোট ইভেন্ট তৈরি করে বিভিন্নভাবে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। শীতকালে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছি। আমার ব্যক্তিগত এই উদ্যোগকে আরো বড় পরিসরে করতে চাই। কাজ করতে আগ্রহী এমন আরো কিছু যুবককে নিয়ে সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো দিতে চাই।’
কেউ যদি এই কাজে অংশ নিতে চান, তাহলে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা