দুর্নীতির বিষয়ে ছাড় নয়, সন্তোষজনক সমাধান না হলে অবরোধ চলবে
- জাবি সংবাদদাতা
- ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৬:৫৩, আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৭:৪১
তিনদিন ধরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সকল প্রশাসনিক অফিস অবরুদ্ধ করে রেখেছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। মেগাপ্রকল্পের দুর্নীতি, টেন্ডার ছিনতাই ও অপরিকল্পিত উন্নয়নের অভিযোগে প্রতিদিনের ন্যায় আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে সাতটা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত নতুন ও পুরাতন রেজিস্ট্রার ভবন অবরোধ করে রাখে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারের শিক্ষার্থীরা। একনাগাড়ে তিন দিনের অবরোধে স্থবির হয়ে পড়েছে জাবি, বন্ধ রয়েছে সকল প্রশাসনিক কার্যক্রম।
বৃহস্পতিবার আন্দোলন চলাকালীন সময়ে প্রশাসনে পক্ষ থেকে বিভিন্নভাবে আলোচনার প্রস্তাব দেয়া হয়। এসময় আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যেহেতু দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ ভিসির নাম সরাসরি জড়িত তাই তারা দুর্নীতির বিষয়ে ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের সাথে কোনো আলোচনায় বসতে রাজি নয়। তবে অপরিকল্পিত হল নির্মাণ ও মাস্টার প্লান সংশোধন ও টেন্ডার ছিনতাইয়ের বিষয়ে ভিসির সাথে বসা যেতে পারে বলে আন্দোলনকারীরা জানিয়ে দেয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে বেলা বারোটার দিকে ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম অরবোধকারী শিক্ষার্থীদের সাথে দেখা করতে আসে। পুরাতন রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে প্রায় একঘন্টার আলাপকালে ভিসি ফারজানা ইসলাম আন্দোলনকারীদেরকে আলোচনায় বসার অনুরোধ করেন। এসময় আন্দোলনকারীরা ভিসিকে জানিয়ে দেয়, প্রশাসন যদি অপরিকল্পিত উন্নয়ন থেকে সরে এসে সংশোধনের প্রতিশ্রুতি দেয় তাহলে আলোচনায় বসতে পারে। তখন ভিসি সংশোধনের আশ্বাস দিয়ে আলোচনার আমন্ত্রণ জানান।
তবে আমন্ত্রণ জানিয়ে ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম স্থান ত্যাগ করলেও অবরোধ বিকাল চারটা পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
আন্দোলন ও আলোচনার বিষয়ে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’-এর অন্যতম সংগঠক আশিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা দুর্নীতির বিষয়ে ভিসির সাথে কোনো আলোচনা করবো না। কারণ এখানে তার নাম জড়িত। দুর্নীতির বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি, ইউজিসির প্রতিনিধি অথবা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির মধ্যস্থতায় তদন্ত ও আলোচনা হতে পারে। অন্য কারো সাথে আলোচনা নয়।
তবে বাকি দুই দফা দাবি টেন্ডার ছিনতাই, অপরিকল্পিত উন্নয়ন, মাস্টারপ্লান নিয়ে প্রশাসনে সাথে আমরা বসতে পারি। যদি তারা হল নির্মাণ ও মাস্টারপ্লান সংশোধনের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা বাস্তবায়ন করেন।
আশিকুর রহমান আরো বলেন, ‘প্রতিশ্রুতির আলোকে আলোচনা সফল না হলে, সেই আলোকে কাজ না করলে শনিবার থেকে আবারো আমাদের আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত আলোচনার কোনো স্থান ও সময় নির্ধারণ হয়নি।
গত দুই সপ্তাহ যাবৎ জাবির মেগা প্রজেক্টের দুই কোটি টাকা ছাত্রলীগকে প্রদানের অভিযোগ ও অপরিকল্পিত উন্নয়নের প্রতিবাদে তিন দফা দাবি উপস্থাপন করে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’। দাবিগুলো হলো- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের পাশের তিনটা হল স্থানান্তর করে নতুন জায়গায় দ্রুত কাজ শুরু করা, মেগা প্রজেক্টের দুই কোটি টাকা দুর্নীতি করে ছাত্রলীগকে প্রদানের ব্যাপারে বিচার বিভাগীয় তদন্ত নিশ্চিত করা, টেন্ডারের শিডিউল ছিনতাইকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা এবং কাজ স্থগিত রেখে সকল স্টেক হোল্ডারদের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে মাস্টারপ্লান পুনর্বিন্যস্ত করা।