১৮ মে ২০২৪, ০৪ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫
`


বজ্রপাতে ১৯ জনের প্রাণহানি

গভীর উদ্বেগের কারণ

-

বজ্রপাতে একসাথে ১৭ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। তারা ছিলেন একটি বরযাত্রী দলের সদস্য। এর মধ্যে বরের পরিবারের ১২ সদস্য রয়েছেন। আরো চারজন যাত্রী ছিলেন তাদের সাথের স্বজন। এ ছাড়া একজন ছিলেন স্থানীয় মানুষ। ঘটনাটি ঘটেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পদ্মা নদীর তেলিখাড়ি ঘাটে। একই দিন দেশে বজ্রপাতে আরো দু’জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশে বজ্রপাতে মানুষের প্রাণহানির ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। কেন বজ্রপাত বেড়ে গেল, এ নিয়ে অনেক ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ রয়েছে। সে অনুযায়ী বজ্রপাত থেকে বাঁচতে বিশেষজ্ঞরা কিছু পরমর্শও দিয়ে যাচ্ছেন। ঘটনার কারণ অনুসন্ধান ও পরামর্শ থেকে আমাদের মনে হতে পারে, এটি মানুষের নিজের সৃষ্ট একটি বিপদ এবং মানুষ নিজের চেষ্টায় এটি রোধও করতে পারে। বাস্তবে অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো বজ্রপাতও প্রকৃতি সৃষ্ট বিপদ, তবে এটি তারা রোধ করতে পারে না।
বরযাত্রীরা নৌকাযোগে বৌভাতে যাচ্ছিলেন। বৃষ্টির কারণে ঘাটে নেমে তারা একটি ছাউনির নিচে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেখানে বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলে তারা প্রাণ হারান। তাদের সাথে আরো ১২ জন আহত হন। মুহূর্তের আনন্দ আয়োজনের মধ্যে নেমে আসে ভয়াবহ শোক। একসাথে পরিবারের এতজন সদস্য ও স্বজনকে হারিয়ে বর মামুন নির্বাক হয়ে যান। প্রাকৃতিক দুর্যোগে কেবল একজন মানুষের প্রাণহানিও পরিবার ও সমাজের জন্য বিপর্যয়কর হয়ে ওঠে যদিও কোনো একজন মানুষের জন্য বাকিদের জীবন থেমে যায় না। সবকিছু আবার স্বাভাবিক হয়ে যায়। হারিয়ে যাওয়াদের ভুলে গিয়ে বেঁচে থাকা সদস্যরা সামনে এগিয়ে যান। অনেক সময় দেখা যায়, পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য এভাবে মারা যাচ্ছেন, কখনো দেখা যায়, পরিবারের মাত্র একজন সদস্য এমন দুর্যোগ থেকে বেঁচেছেন। আবার কখনো একটি পরিবারের সব সদস্যই প্রাণ হারান। প্রকৃতপক্ষে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অন্যান্য কারণে অস্বাভাবিক মৃত্যুর সংখ্যা বাংলাদেশে অনেক বেশি। ঠিক এমন একটি ঘটনাকে আমরা কেবল দুর্ঘটনা বলে সান্ত্বÍনা নিতে পারি না। এর মধ্যে মানুষের জন্য অনেক চিন্তাভাবনা ও শিক্ষণীয় রয়েছে।
বলা হচ্ছেÑ বায়ুদূষণ, বিশ্বে উষ্ণতা বৃদ্ধি এবং বন ধ্বংস বজ্রপাতের সংখ্যা বাড়িয়ে দিচ্ছে। তার মধ্যে বাংলাদেশের আবহাওয়া বজ্রপাতের জন্য অনুকূল। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, বড় গাছ বিশেষ করে তালগাছ বজ্রপাত ঠেকায়। বাংলাদেশে তালসহ উঁচু উঁচু গাছ নিধনের কারণে বর্ধিত হারে বজ্রপাতে মানুষ মারা যাচ্ছে। এখন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হচ্ছেÑ উঁচু গাছের সংখ্যা বাড়ানো অর্থাৎÑ উঁচু গাছগুলো রেখে দেয়ার পাশাপাশি নতুন করে এমন ধরনের গাছ বেশি করে লাগানো। তার সাথে ভবনে বজ্রপাতনিরোধক দণ্ড স্থাপন করা। কারণ উঁচু গাছ, উঁচুু ভবন এবং ভবন লাগোয়া দণ্ড আকাশের বজ্রকে শোষণ করে নেয়। এ কারণে শহরে বজ্রপাতে মানুষের প্রাণহানি কম বলে জানা যায়। আগে সাধারণত জানা যেত ফসলের মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতে কৃষকের প্রাণ হারানোর ঘটনা। এখন দেখা যাচ্ছে, মানুষ নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়ার পরও প্রাণ হারাচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা যেভাবে বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করেনÑ এ থেকে সমাধানের পথ বাতলান, তা সম্পূর্ণ খাপ খায় না।
বজ্রপাত হওয়ার কারণ কী, সেটি নিশ্চিত করে মানুষ বলতে পারছে না। একটি মাত্র বজ্র যখন ১৭ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটায় সেটি বিস্ময়ের সৃষ্টি করে। মূল ব্যাপার হচ্ছে, মেঘ থেকে যেমন বৃষ্টি বর্ষিত হয় একইভাবে বজ্রও বর্ষিত হয়। মেঘমুক্ত আকাশ থেকে মানুষের উপর বজ্র পতিত হতে দেখা যায় না। মেঘের সৃষ্টি হয় সমুদ্রের পানি থেকে। সমুদ্রের পানি বাষ্প আকারে উপরে ওঠে। সেই বাষ্প বাতাসের বিভিন্ন ধরনের প্রবাহ উড়িয়ে নিয়ে যায়। খণ্ড খণ্ড আকারে সৃষ্ট মেঘ থেকে নেমে আসে বৃষ্টি ও বজ্র। এগুলোর সৃষ্টি ও পতিত হওয়ার মধ্যে মানুষের হাত থাকে না। মানবজাতির ওপর অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগর মতো বজ্রপাতে বর্ধিত প্রাণহানির ঘটনার ওপর তাই মানুষের নিয়ন্ত্রণ ধরতে গেলে নেই বললেই চলে। তবে মানুষের চিন্তাভাবনায় বিরাট পরিবর্তন আনতে পারে এই ঘটনাগুলো। মানবজাতির জন্য বিশেষ শিক্ষা রয়েছে এ ধরনের প্রকৃতিসৃষ্ট ঘটনাগুলোর মধ্যে।


আরো সংবাদ



premium cement
‘সুইজারল্যান্ড শান্তি’ সম্মেলনে চীনকে যোগ দেয়ার আহ্বান জেলেনস্কির রাশিয়া-ইরান একক ব্রিকস মুদ্রা তৈরির কাজ করছে : ইরান আড়াইহাজারে ট্রাকচাপায় যুবকের মৃত্যু তালাকপ্রাপ্ত বাবা-মায়ের যৌথ হেফাজতে থাকতে পারবে সন্তান, জাপানে বিল পাস কালিহাতীতে বজ্রপাতে ২ শ্রমিকের মৃত্যু ধোলাইখালে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের আগুন নিয়ন্ত্রণে টেক্সাসে ঝড়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭ বেনাপোল ঘিবা সীমান্ত দিয়ে ভারতে যাওয়ার কালে মিয়ানমার নাগরিকসহ আটক ৪ যে কারণে ব্রিটেন থেকে ফিরতে হবে বহু বাংলাদেশীকে মেসি-বার্সা চুক্তির সেই বিখ্যাত টিস্যু বিক্রি হলো ১১ কোটি টাকায় রাঙ্গামাটিতে প্রতিপক্ষের হামলায় ইউপিডিএফ কর্মীসহ নিহত ২

সকল