১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলকদ ১৪৪৫
`


কৃষিশ্রমিকের অভাব হাওরাঞ্চলে

ধানকাটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক

-

দেশের অন্যতম শস্যভাণ্ডার হাওরাঞ্চল। আমাদের মোট উৎপাদিত ধানের ১৮ শতাংশের বেশি উৎপন্ন হয় হাওরের সাত জেলায়। খাদ্য সরবরাহের বড় অংশ নিশ্চিত হয় এখানকার ধানে। সরকারি গুদামে মজুদের মূল অংশটিও নির্ভর করে এই ফসলের ওপর। কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং সিলেটের একাংশের অন্তত ২৫০টি হাওরে বোরো আবাদ হয়। চলতি মওসুমে দুই কোটি টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
একটা বৈরী পরিস্থিতির মধ্যে থাকেন হাওরের লোকজন। ঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ এ অঞ্চলের মানুষের নিত্যসঙ্গী। এর মধ্যে এবার করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে বোরো ফসল ঘরে তুলতে সমস্যায় পড়েছেন কৃষকরা। এপ্রিলের শুরুতেই মূলত বোরো কাটা শুরু হয়। কিন্তু করোনার প্রাদুর্ভাবে সারা দেশে যানবাহন বন্ধ থাকায় বাইরের জেলার কৃষিশ্রমিকরা এবার হাওরাঞ্চলে যেতে পারছেন না। ফলে এবার কিছুটা দেরিতে ধান কাটা শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত ধান কাটতে প্রয়োজনীয় শ্রমিক সংগ্রহ করতে পারেননি কৃষকরা। ইতোমধ্যে বিআর-২৮ ধান পেকে গেছে। এক সপ্তাহের মধ্যে কাটতে না পারলে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অন্যান্য জাতের ধান ১০ দিনের মধ্যে কেটে শেষ করতে হবে। না হয় হাওরে পানি চলে আসবে। শ্রমিকের অভাব ও পর্যাপ্ত মেশিন না থাকায় যথাসময়ে বোরো ধান কেটে গোলায় তুলতে পারবেন কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন হাওরের কৃষক।
যদিও নয়া দিগন্তের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কৃষি যন্ত্রপাতি কিনতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে কৃষি বিভাগকে ১০০ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে রিপার ও হারভেস্টার কেনা হয়েছে। যন্ত্রপাতিগুলো হাওরে যাচ্ছে। কৃষকদের ধান ঘরে তোলার স্বার্থেই সরকার হাওরের ফসল রক্ষায় বাঁধ নির্মাণে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। ইতোমধ্যে হাওরে বাঁধগুলোর নির্মাণকাজ সমাপ্ত হয়েছে। শ্রমিক সঙ্কটের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে অতিরিক্ত ধান কাটার যন্ত্রপাতি দেয়া হয়েছে। অন্যান্য জেলা থেকে ধান কাটতে আসা শ্রমিকরা যেন সমস্যায় না পড়েন সে জন্যও ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় প্রশাসনকে বলা হয়েছে। হাওর এলাকায় শ্রমিকরা যাতে নির্বিঘেœ চলাচল করতে পারেন সে উদ্যোগও নিতে বলা হয়েছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে অর্ধেক দাম পরিশোধের মাধ্যমে ধান কাটার মেশিন দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
সরকারের এই উদ্যোগ সত্ত্বেও হাওরাঞ্চলের কৃষকদের শঙ্কা দূর হয়নি। কারণ, আমাদের দেশে সরকারি কর্মকর্তাদের গাফিলতিতে অনেক মহৎ উদ্যোগ যথাসময়ে বাস্তবায়ন হয় না। ফলে গৃহীত কর্মসূচির সুবিধা সাধারণের কোনো কাজে আসে না। এমনিতেই গত দুই বছর আগের অকাল বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে কৃষকরা বোরো ধান ঘরে উঠাতে পারেননি। এতে এক ফসলি জমির ওপর নির্ভরশীল কয়েক হাজার পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। অথচ বোরো তুলে তা বিক্রি করে ধান কাটার শ্রমিক, মাড়াই এবং ঋণ পরিশোধ করতে হয় ওই অঞ্চলের কৃষক পরিবারগুলোকে। ফসল ঘরে তুলতে না পারলে জমি বিক্রি করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ধান কাটতে না পারলে পানিতে তলিয়ে যাবে। হাওরে পানি প্রবেশ করতে সময় লাগে ১০ থেকে ১২ দিন। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করলে এ সময়ের মধ্যেই ধান কেটে ফেলা সম্ভব। ২০১৭ সালের পাহাড়ি ঢলের কারণে অকাল বন্যায় হাওরের কৃষকরা পথে বসেছিলেন। করোনার কারণে কৃষক যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সে জন্য সব ধরনের সহায়তা করতে হবে সরকারকে। যাতে তারা দ্রুত ফসল ঘরে তুলতে পারেন। সে জন্য সহজ শর্তে ধান কাটার মেশিন কিনতে সহায়তা করা জরুরি। আর মওসুমের শুরুতে ধানের ন্যায্য দামও নিশ্চিত করতে হবে। একই সাথে কৃষকদের প্রণোদনা দেয়ার বিষয়টিও আমলে নিতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
বান্দরবানে কেএনএফের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিলেন বম উজিরপুরে বিশ্বনবীকে কটূক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল তামিমের ব্যাটে বাংলাদেশের উড়ন্ত শুরু নাটোরে এক প্রার্থীর সমর্থককে মারপিট করায় অপর প্রার্থী গ্রেফতার বিশ্বকাপ দলে সুযোগ না পেয়ে অবসরে নিউজিল্যান্ডের ওপেনার কক্সবাজারে ৩ উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ সরকারের জনসমর্থন শূন্যের কোঠায় : গয়েশ্বর চন্দ্র রায় দস্যুর দখলে লক্ষ্মীপুরের দ্বীপ চর মেঘা, বিপাকে দেড়শতাধিক কৃষক রেলপথ উন্নয়নে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করল চার দেশ একাদশে ৩ পরিবর্তন, টসে হেরে ব্যাট করছে বাংলাদেশ স্রোত বা বাতাস ছাড়াই দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় নদীভাঙন

সকল