প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতিবিরোধী এবং স্বচ্ছ টেন্ডার-বিষয়ক নির্দেশনা কোনো কোনো পাবলিক ইউনিভার্সিটি পর্যন্ত মানছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। এ প্রসঙ্গে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে একটি জাতীয় দৈনিকে। দুর্নীতির অভিনব কৌশল অবলম্বনের অভিযোগ এনে এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে অর্ধশত কোটি টাকার কাজ পাইয়ে দিতে দরপত্রের শর্তের ক্ষেত্রে ছলচাতুরীর আশ্রয় নেয়া হয়েছে। অবাস্তব শর্ত যোগ কেের অপছন্দের প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাদ দেয়া হয়।’
জানা গেছে, পরীক্ষার উত্তরপত্রের কাগজ এবং ওএমআর ফর্ম সরবরাহের কাজে পাঁচ কোটি টাকা উৎকোচ হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। এ অবস্থায় কয়েক কোটি টাকা খরচ করতে হচ্ছে বেশি। গতবারও একই ‘পছন্দের প্রতিষ্ঠান’ কাজ পাওয়ায় ৯ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হয়েছিল। দুদক যদি এ বিষয়ে তদন্ত করে, তা হলে বিভিন্ন অনিয়মের তথ্য প্রকাশ পাবে বলে ওয়াকিবহাল সূত্র দাবি করেছে। অপর দিকে, সংশ্লিষ্ট দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির প্রধান হলেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার দাবি করেছেন যে, তিনি এ ব্যাপারে কিছু জানেন না। তদুপরি, খোদ ভিসি, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে মুঠোফোনে বার্তা পাঠালেও জবাব পাওয়া যায়নি বলে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক জানিয়েছেন।
এ দিকে, ৫ নভেম্বর ‘একনেক’ বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্ধৃতি দিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ‘দরপত্র বা টেন্ডার এমনভাবে তৈরি করতে হবে, যেন কোনো নির্দিষ্ট ঠিকাদার কিংবা বড় ধরনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বারবার কাজ না পায়।’ কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে এটা মানা হচ্ছে না।
জানা গেছে, পাঁচটি প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে জানায়, উল্লিখিত দরপত্রে বেশ কয়েকটি কৌশল ও শর্তের মাধ্যমে বিশেষ একটি প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্যদের বাদ দেয়ার চেষ্টা চলছে। এসব ‘অবাস্তব’ শর্তের মধ্যে রয়েছে, গত তিন বছরে ওএমআরসহ উত্তরপত্র সরবরাহের কাজের একক কার্যাদেশ অন্তত ২০ কোটি টাকা এবং সংশ্লিষ্ট কাজে মোট কার্যাদেশ কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে; তিন বছরের মধ্যে বোর্ড কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের একক কার্যাদেশে কমপক্ষে এক কোটি ওএমআর ফর্ম সরবরাহের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে প্রভৃতি। পরীক্ষার খাতা এবং ওএমআর ফর্ম কেনার ক্ষেত্রে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের গৃহীত মাপ অনুসরণ করা হয়নি বলেও অভিযোগে প্রকাশ। যে প্রতিষ্ঠানের সুবিধার্থে এসব করা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে, এটি গত তিন বছর ধরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তরপত্র সরবরাহ করে আসছে।
পরীক্ষার উত্তরপত্র এবং উল্লিখিত ফর্মের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। এ প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন সূত্র জানায়, তাদের একক কার্যাদেশ ১০ কোটি টাকার বেশি হয় না। কোনো কোনো বছরে তিন পরীক্ষার প্রয়োজনে তিনবারে সর্বাধিক ১৭ কোটি টাকার কেনাকাটা করা হয়ে থাকে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, দুর্নীতিরোধে ই-টেন্ডারিং চালু হলেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘দুই খাম’ সিস্টেম বজায় রয়েছে। ফলে দুর্নীতির সুযোগ থেকে যায়। প্রথম খামে থাকে টেন্ডারদাতার কাগজপত্র। এর ভিত্তিতে তারা কাজের জন্য মনোনীত হবেন কিংবা হতে পারবেন না। দ্বিতীয় খামটি কাজের দরসংক্রান্ত। তবে পূর্বনির্ধারিত প্রতিষ্ঠান সর্বনি¤œ দরদাতা না হলেও এ পদ্ধতিতে কাজটি পেয়ে যেতে পারে।
সবাই আশা করেন, প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় দরপত্রসহ সব ক্ষেত্রে দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি প্রভৃতি থেকে মুক্ত থাকবে। দেশের সর্ববৃহৎ পাবলিক ইউনিভার্সিটি হিসেবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে যেন আর কোনো অনিয়মের অভিযোগ না উঠতে পারে, তা নিশ্চিত করা জাতীয় স্বার্থেই অপরিহার্য।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা