৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ব্যাংক খাতের দুরবস্থা ও উদ্বেগ

সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়িত হোক

-

বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের দুরবস্থা এবং বিরাট অঙ্কের খেলাপি ঋণের বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে শৈথিল্য নিয়ে অর্থনীতিবিদসহ সংশ্লিষ্ট খাতের বিশেষজ্ঞরা যে উদ্বিগ্ন তারই প্রতিফলন ঘটেছে বেসরকারি সংস্থা সুজন-এর এক গোলটেবিল আলোচনায়।
বলা যায়, অনুষ্ঠানে মূলত দেশবাসীরই ক্ষোভের প্রতিফলন ঘটেছে। সবার আগে লক্ষ করি প্রাসঙ্গিক আলোচনার শিরোনামটি: ‘ব্যাংকিং খাত নিয়ে উল্টোপাল্টা পদক্ষেপ বন্ধ করুন : ব্যাংকিং সংস্কার কমিশন গঠন করুন।’ এর মধ্যেই একটি প্রতিবাদের সুর স্পষ্ট হয়ে ওঠে। শিরোনামেই স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে, ব্যাংকিং খাত নিয়ে বর্তমান সরকার যা কিছু করছে তা যথার্থ ও ন্যায্য পদক্ষেপ নয়। উপর্যুপরি তিনবার ক্ষমতায় থেকে একটি দলের সরকার দেশের ব্যাংক খাতকে ক্রমবর্ধমান বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে এবং বর্তমানে খাতটি ধস নামার পর্যায়ে উপনীত। গত এক যুগে নানাভাবে বিশেষজ্ঞরা সরকারকে ব্যাংক খাতে অবিলম্বে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার তাগিদ দিয়েছেন। আগের সরকারের সময় যেসব ভ্রান্ত পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল, সেগুলো বাতিল করে সংস্কার আনার কথাও বলেছেন। কিন্তু সরকার একের পর এক এমন পদক্ষেপই নিয়েছেন যেগুলো ব্যাংক খাতের জন্য ক্ষতিকর। যেমন ঋণখেলাপিদের বারবার সুযোগ দেয়া হয়েছে। রাজনৈতিক বিবেচনায় দলীয় অযোগ্য ব্যক্তিদের ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করতে দেয়া হয়েছে, সরকার পছন্দ ব্যাংক পরিচালকদের নিজেদের সুবিধামতো আইন তৈরি করা হয়েছে। ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হলেও বলা হয়েছে, এটা সামান্য টাকা। ব্যাংকের অর্থ লোপাট এবং ব্যাংক দেউলিয়া করে ফেলার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সুতরাং পরিণতি যা হওয়ার তাই হয়েছে। ব্যাংক খাতে ধস নেমেছে যা অনেকটা অপূরণীয়।
আলোচ্য সভায় মূলপ্রবন্ধে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক, ড. মইনুল ইসলাম জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ এক লাখ কোটি টাকার কিছু বেশি হলেও প্রকৃতপক্ষে খেলাপি ঋণের মোট পরিমাণ তিন লাখ কোটি টাকা। ব্যাংক খাতের ৩০ শতাংশ ঋণই এখন খেলাপি। তিনি বলেছেন, অর্থমন্ত্রীর টোটকা দাওয়াইয়ে খেলাপি ঋণের ক্যান্সার সারানো যাবে না। এ সমস্যার সমাধানে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাংকিং সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে। একই সাথে খেলাপিদের সামাজিকভাবে বয়কটের পাশাপাশি তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সরকারপ্রধানের বেসরকারি খাতবিষয়ক উপদেষ্টাকে ‘সবচেয়ে বড় ঋণখেলাপি’ বলে অভিহিত করেছেন ড. মইনুল ইসলাম। তিনি বলেন, দেশে যে পাতানো খেলা চলছে, এতে করে খেলাপি ঋণ কখনোই আদায় হবে না। তাঁর প্রবন্ধে আরো বলা হয়, বিগত ২০১৪-১৯ মেয়াদের সরকারের সময়েও খেলাপি ঋণের অবস্থা সঙ্কটজনক থাকা সত্ত্বেও কোনো রহস্যজনক কারণে ব্যাংকিং সংস্কার কমিশন গঠনের ইস্যুটা বারবার এড়িয়ে গেছে সরকার। ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনের পর ক্ষমতা গ্রহণের ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও কমিশন গঠনের ঘোষণা দেয়া হয়নি। দেশের বেশির ভাগ ব্যাংকের অবস্থাই ভালো নয়। এর মূল কারণ খেলাপি ঋণ। এমন অবস্থায় প্রয়োজনীয় বিশ্লেষণের ভিত্তিতে সুপারিশ করার জন্য অবিলম্বে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাংকিং সংস্কার কমিশন গঠন করার দাবি জানানো হয়।
আমরা আশা করব, বিদগ্ধজনের এসব পর্যবেক্ষণ ও অভিমতকে সতর্কবার্তা হিসেবে গ্রহণ করে অর্থমন্ত্রী তথা সরকার জরুরি ভিত্তিতে সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে এগিয়ে আসবেন। এতেই দেশের এবং সরকারের মঙ্গল নিহিত।


আরো সংবাদ



premium cement
মামা সাংস্কৃতিক শিল্পীগোষ্ঠী বিডি মালয়েশিয়ার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও সাংস্কৃতিক উৎসব কামাল হত্যা : ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে গ্রেফতার ১২ চুক্তি হোক বা না হোক, রাফায় অভিযান চলবে : নেতানিয়াহু সমুদ্রসীমায় ২০ মে থেকে ৬৫ দিন‌ সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ হচ্ছে ২ নতুন মুখ ও নর্টিসহ দক্ষিণ আফ্রিকার বিশ্বকাপ দল ঘোষণা শত কোটি টাকা আত্মসাৎ : বিমানবন্দর থেকে বিশ্বাস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আটক মঠবাড়িয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা গাজা যুদ্ধ : জার্মানির বিরুদ্ধে মামলার রায় দেবে আইসিজে হিট স্ট্রোকে ৮ দিনে ১০ জনের মৃত্যু : স্বাস্থ্য অধিদফতর মানিকগঞ্জে আ’ লীগের ২ চেয়ারম্যান প্রার্থীর পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন গুচ্ছের ‘এ’ ইউনিটের ফল প্রকাশ

সকল